পাকিস্তানের সঙ্গে বন্ধুত্ব আরও দৃঢ় করছে বাংলাদেশ। বাণিজ্যের পাশাপাশি এ বার সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রেও ইসলামাবাদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বৃদ্ধি করছে ঢাকা। প্রায় ১৮ বছর পরে ফের পাকিস্তানে আয়োজিত কোনও অনুষ্ঠানে যোগ দিলেন বাংলাদেশি শিল্পীরা।
পাকিস্তানের ওই সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের জন্য ইতিমধ্যে করাচিতে পৌঁছে গিয়েছেন বাংলাদেশি সঙ্গীতশিল্পী, নৃত্যশিল্পীদের এক প্রতিনিধিদল। প্রতিনিধিদলের নেতৃত্বে রয়েছেন ‘বাংলাদেশ আর্ট উইক’-এর প্রতিষ্ঠাতা নীহারিকা মুমতাজ। তাঁর দাবি, গত ১৮ বছর ধরে বাংলাদেশি শিল্পীরা পাকিস্তানের মাটিতে শিল্প পরিবেশনের সুযোগ থেকে বঞ্চিত থেকেছেন। বস্তুত, হাসিনা জমানায় ঢাকা এবং ইসলামাবাদের মধ্যে সম্পর্কে এক শীতলতা তৈরি হয়েছিল। দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক একেবারে তলানিতে গিয়ে ঠেকেছিল। সেই শীতলতা কাটিয়ে উঠতে চাইছে ঢাকা।
সংবাদসংস্থা পিটিআই অনুসারে, প্রায় দু’দশক ধরে বাংলাদেশ এবং পাকিস্তানের কূটনৈতিক সম্পর্কে চিড় ধরেছিল। সরকারি ভাবে ওই সময়ে কোনও বাংলাদেশি শিল্পী পাকিস্তানে যাননি। হাসিনার আওয়ামী লীগের সরকারের জমানায় ভাটা পড়েছিল দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যেও। মুক্তিযুদ্ধের সময়ে পাকিস্তানি সেনাকে যাঁরা সাহায্য করেছিলেন বলে অভিযোগ, ২০১০ সালে সেই ‘যুদ্ধাপরাধী’দের বিরুদ্ধে বিচার শুরু হয় বাংলাদেশে। তখন থেকে সম্পর্ক আরও খারাপ হয়ে যায় ঢাকা এবং ইসলামাবাদের।
আরও পড়ুন:
তবে গত বছরের অগস্টে হাসিনার সরকারের পতনের পরে ফের ইসলামাবাদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বৃদ্ধি করতে শুরু করে ঢাকা। প্রায় তিন দশক পরে ফের বাংলাদেশ সফরে আসেন পাক বিদেশমন্ত্রী। বাংলাদেশের সামরিক কর্তারাও পাকিস্তান সফরে যান। হাসিনার জমানায় বাংলাদেশ এবং পাকিস্তানের মধ্যে সরাসরি বাণিজ্য প্রায় বন্ধই ছিল। এখন ফের বাণিজ্য শুরু হয়েছে। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের জমানায় দু’দেশের কূটনীতিকদের জন্য ভিসা ব্যবস্থাও শিথিল করা হয়েছে। এ বার বাংলাদেশ থেকে শিল্পীদের এক প্রতিনিধিদলকেও পাঠানো হল করাচিতে।
কয়েক দিন আগেই পাকিস্তানে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাই কমিশনার একবাল হুসেন খান একপ্রকার স্বীকারই করে নিয়েছেন যে হাসিনা জমানায় দু’দেশের মধ্যে সম্পর্ক ভাল ছিল না। পাকিস্তানের এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেছিলেন, “গত ১০-১২ বছর ধরে দু’পক্ষের মধ্যে সম্পর্ক ভাল ছিল না। এটা কারও অজানা নয়। কিন্তু এখন পরিস্থিতি পাল্টেছে। এখন ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বাংলাদেশিরা পাকিস্তানে সফরের ভিসা পেয়ে যান।”