Advertisement
E-Paper

ইরানে হানা দিয়ে কি আইন ভেঙেছেন ট্রাম্প, তাঁর দলের অন্দরেই উঠল প্রশ্ন! তাই কি তড়িঘড়ি যুদ্ধবিরতি ঘোষণা?

মার্কিন প্রেসিডেন্টের ইরান-ইজ়রায়েল ‘সংঘর্ষবিরতি’ ঘোষণার নেপথ্যে দলীয় অন্তর্বিরোধ অন্যতম অনুঘটক বলে মনে করছেন অনেকেই। কারণ, রিপাবলিকান নেতৃত্বের একাংশ ইরানে হামলার বিরোধিতা করেছেন।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২৪ জুন ২০২৫ ১৮:০৪
Democrats and some Republicans question Donald Trump’s unilateral attack against Iran

ডোনাল্ড ট্রাম্প। —ফাইল চিত্র।

অভিযোগ উঠেছিল রবিবার সকালেই। একতরফা ভাবে ইরানের তিন পরমাণুঘাঁটিতে হামলার নির্দেশ দিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সে দেশের আইন লঙ্ঘন করেছেন বলেন সরব হয়েছিলেন বিরোধী ডেমোক্র্যাট নেতৃত্বের একাংশ। এর পর একই অভিযোগ উঠল ট্রাম্পের নিজের দল রিপাবলিকান পার্টির অন্দরেও!

মঙ্গলবার সকালে মার্কিন প্রেসিডেন্টের তড়িঘড়ি ইরান-ইজ়রায়েল ‘সংঘর্ষবিরতি’ ঘোষণার নেপথ্যে দলীয় অন্তর্বিরোধ অন্যতম অনুঘটক বলে মনে করছেন অনেকেই। বস্তুত, ইরানে মার্কিন সেনার হামলা নিয়ে সে দেশের আইনসভা কংগ্রেসের অন্দরেও সমালোচনার মুখে পড়েছেন ট্রাম্প। কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ হাউস অফ রিপ্রেজ়েনটেটিভসের রিপাবলিকান সদস্য টমাস ম্যাসি এক্স পোস্টে লিখেছেন, ‘‘এই হামলা আমেরিকার সংবিধান অনুযায়ী বৈধ নয়।’’

কেন এমন অভিযোগ? ম্যাসির দাবি, আমেরিকার আইন অনুযায়ী, আক্রমণের মুখে না-পড়া সত্ত্বেও অন্য দেশের ভূখণ্ডে হামলা চালাতে হলে কংগ্রেসের অনুমোদন অপরিহার্য। কিন্তু ইরানের ফোরডো, নাতান্‌জ, ইসফাহান পরমাণুকেন্দ্রে পেন্টাগনের হামলার আগে মার্কিন আইনসভাকে পুরোপুরি ‘অন্ধকারে’ রাখা হয়েছিল। রিপাবলিকান পার্টির প্রভাবশালী কংগ্রেসম্যান ওয়ারেন ডেভিডসন মঙ্গলবার ট্রাম্পকে নিশানা করে সমাজমাধ্যমে লিখেছেন, ‘‘এটি সাংবিধানিক ভাবে বৈধ, এমন কোনও যুক্তি কল্পনা করাই কঠিন।’’

সঙ্কটের এই সময় অবশ্য রিপাবলিকান নেতা তথা হাউস অফ রিপ্রেজ়েনটেটিভসের স্পিকার মাইক জনসন দাঁড়িয়েছেন ট্রাম্পের পাশে। মঙ্গলবার তিনি বলেন, ‘‘অতীতেও আমেরিকার প্রেসিডেন্টদের অনেকে আপৎকালীন পরিস্থিতিতে এমন পদক্ষেপ করেছেন।’’ ‘অপারেশন মিডনাইট হ্যামার’-এর মতোই ইরান-ইজ়রায়েল যুদ্ধবিরতি ঘোষণার ক্ষেত্রেও যে ট্রাম্প অহেতুক তড়িঘড়ি করেছেন, তা-ও স্পষ্ট হয়েছে কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই। তিনি নিজেই সংঘর্ষবিরতি লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলেছেন তেহরান-তেল আভিভ, দু’পক্ষের বিরুদ্ধেই!

রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশ বলছেন, ট্রাম্পের জমানায় রিপাবলিকান পার্টির অন্দরে দু’টি ধারা স্পষ্ট। অপেক্ষাকৃত প্রবীণ ‘প্রাচীনপন্থী’রা খোলাখুলি যুদ্ধের পক্ষে। কিন্তু অপেক্ষাকৃত নতুন প্রজন্মের কাছে একবগ্গা ‘কট্টর ইরানবিরোধী নীতি’ মোটেই প্রাসঙ্গিক নয়। নেতাদের পাশাপাশি রিপাবলিকান সমর্থকদের মধ্যেও এই বিভাজন স্পষ্ট। গত বছরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ট্রাম্পকে ভোট দিয়েছেন এমন কিছু রিপাবলিকান সমর্থকের থেকে ইরানে হামলা প্রসঙ্গে মতামত সংগ্রহ করেছিল নিউ ইয়র্ক টাইমস। তাঁদের মধ্যে কয়েক জন ট্রাম্পের অবস্থানকে সমর্থন করলেও বিরোধী স্বরও উঠে এসেছে। কেউ বলেছেন, ‘‘বর্তমান পরিস্থিতিতে পশ্চিম এশিয়া আমাদের অগ্রাধিকারের তালিকাতেই থাকা উচিত নয়।’’ কারও যুক্তি, ‘‘ট্রাম্পকে ভোট দিয়েছিলাম, কারণ আমার ধারণা ছিল উনি উপসাগরীর অঞ্চলের সঙ্কটের পরিস্থিতি থেকে আমেরিকাকে দূরে রাখবেন। কিন্তু উনিও সেখানে নাক গলিয়ে ফেললেন।’’

আবার এক ট্রাম্প সমর্থকের মন্তব্য, ‘‘জিমি কার্টার পারেননি। কিন্তু ট্রাম্প পারলেন। উনি ইরানকে সমঝে দিয়েছেন। বুঝিয়ে দিয়েছেন, আমেরিকার সঙ্গে সংঘাতের পথে হাঁটলে বিপদ অনিবার্য।’’ রবিবার মার্কিন সেনার ‘অপারেশন মিডনাইট হ্যামার’-এর সাংবিধানক বৈধতা সংক্রান্ত বিতর্ক রাজনৈতিক পরিসর ছাড়িয়ে আইন বিশেষজ্ঞ এমনকি সাধারণ নাগরিকদেরও আলোচনার বিষয় হয়ে উঠেছে। হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনের অধ্যাপক এবং জর্জ ডব্লিউ বুশের জমানার বিচার বিভাগের কর্মকর্তা জ্যাক গোল্ডস্মিথ বলেন, ‘‘আমি নিশ্চিত নই, ট্রাম্প সংবিধান লঙ্ঘন করেছেন কি না। কারণ প্রেসিডেন্টের সামরিক অভিযান সংক্রান্ত ক্ষমতার সাংবিধানিক বিধি অস্পষ্ট।’’

Donald Trump Iran-Israel War Israel-Iran Conflict Pentagon
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy