কুখ্যাত যৌন অপরাধী জেফ্রি এপস্টিনের ফাইলে কি সত্যিই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নাম আছে? আগে এক বার সেই দাবি করেছিলেন ইলন মাস্ক। পরে সেই পোস্ট মুছে দিতে হয়েছিল তাঁকে। এ বার আবার পুরনো দাবিই জোরালো হল মাস্কের ইঙ্গিতপূর্ণ পোস্টে। তিনি জানালেন, আমেরিকায় তাঁর নতুন রাজনৈতিক দলের অন্যতম প্রধান অগ্রাধিকারই হল ওই ফাইল ফাঁস করা। ফাইলে বন্দি নামগুলি প্রকাশ্যে আনা।
মাস্ক নিজের দলের নাম রেখেছেন ‘আমেরিকা পার্টি’। গত ৫ জুলাই সেই দল আত্মপ্রকাশ করেছে। সমাজমাধ্যমে দলের নাম ঘোষণা করে তিনি আমেরিকার দ্বিদলীয় শাসনব্যবস্থাকেই চ্যালেঞ্জ করে বসেন। আমেরিকার ইতিহাসে তৃতীয় দলের সাফল্যের নজির নেই বললেই চলে। তা মনে করিয়ে দিয়ে ট্রাম্প এই দলকে কটাক্ষও করেছেন। এর মাঝেই সমাজমাধ্যমে একটি পোস্টে মাস্ক লেখেন, ‘‘ট্রাম্প যদি এপস্টিন ফাইল প্রকাশ না করেন, তা হলে মানুষ কী ভাবে ওঁর উপর ভরসা রাখবেন? এটা কী ভাবে উনি আশা করেন?’’ এই পোস্টের নীচে এক জন জিজ্ঞাসা করেন, ‘‘এপস্টিন ফাইল ফাঁস করা কি আপনার আমেরিকা পার্টির প্রাধান্যের তালিকায় শীর্ষে থাকছে?’’ মাস্ক এই প্রশ্নের উত্তরে ‘১০০ শতাংশ’-এর ইমোজি দিয়েছেন।
আরও পড়ুন:
জেফ্রি এপস্টিন নামের এক কুখ্যাত যৌন অপরাধীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার অভিযোগে এক জনের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা ঠুকেছিলেন ভার্জিনিয়া জিফরে নামের এক মহিলা। মামলার নথিতে এপস্টিন-ঘনিষ্ঠদের যাবতীয় তথ্য তুলে ধরা হয়েছিল। ইতিমধ্যে একাধিক বার কানাঘুষো শোনা গিয়েছে, ওই ফাইলে নাম রয়েছে বিল ক্লিন্টন থেকে ডোনাল্ড ট্রাম্প, স্টিফেন হকিং থেকে মাইকেল জ্যাকসন-সহ বিশ্বের তাবড় ব্যক্তির। এপস্টিনের নথি অনুযায়ী, এঁরা প্রত্যেকেই তাঁর পৃষ্ঠপোষকতায় যৌনাচারে যুক্ত ছিলেন। এ-ও শোনা যায়, এপস্টিনের বিলাসবহুল বিমান ‘লোলিটা এক্সপ্রেস’-এ চেপে বেশ কয়েক বার বিভিন্ন দেশে গিয়েছিলেন ট্রাম্প। চলতি বছরের গোড়ায় ওই ফাইলের একাংশ প্রকাশ্যে আনা হয়। কিন্তু সম্পূর্ণ ফাইলটি প্রকাশ্যে আনার দাবি জানিয়েছিলেন মাস্ক। ট্রাম্পের প্রশাসন থেকে ইস্তফা দেওয়ার পরেই বিতর্কিত পোস্টটি করেছিলেন। তাঁদের বচসা পৌঁছে গিয়েছিল ব্যক্তিগত স্তরে। এমনকি, ট্রাম্পকে ‘ইমপিচ’ (পদচ্যুত) করার দাবিও তিনি জানিয়েছিলেন।
মাস্ক দু’দিনের মধ্যেই এপস্টিন ফাইল সংক্রান্ত পোস্টটি সরিয়ে দিয়েছিলেন তাঁর সমাজমাধ্যম থেকে। কিন্তু ট্রাম্পের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক ক্রমে তলানিতে পৌঁছোয়। ট্রাম্পের যে বিলের বিরুদ্ধে বার বার সরব হয়েছিলেন মাস্ক, সেই বিল মার্কিন কংগ্রেসের উভয় কক্ষে পাশ হয়ে আইনে পরিণত হয়ে গিয়েছে। তার পরেই নতুন দল গঠন করে ফেলেন টেসলা, স্পেসএক্সের কর্ণধার। বিরোধিতায় এপস্টিন ফাইলকে অন্যতম হাতিয়ার করতে চাইছেন তিনি।