তাইল্যান্ড এবং কম্বোডিয়ার মধ্যে চলতি সীমান্তবিরোধ নিয়ে উদ্বিগ্ন ভারত। এই আবহে শুক্রবার ভারতের তাইল্যান্ড স্থিত দূতাবাস সে দেশে বসবাসকারী বা ভ্রমণকারী ভারতীয়দের জন্য সতর্কতা জারি করেছে। অন্তত সাতটি প্রদেশে ভ্রমণ এড়িয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে দূতাবাসের তরফে। শুধু তা-ই নয়, উত্তেজনাপ্রবণ এলাকা এড়িয়ে যাওয়ার কথাও বলা হয়েছে।
তাইল্যান্ড এবং কম্বোডিয়ার সীমান্তের উত্তেজনা ক্রমশ বেড়েই চলেছে। সংঘর্ষে এখনও পর্যন্ত ১৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। বহু তাইল্যান্ডবাসীকে সীমান্ত থেকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছে সরকার। এই পরিস্থিতিতে তাইল্যান্ড সরকারের পরামর্শ মেনে চলার বার্তা দিয়ে বিবৃতি জারি করেছে সে দেশের ভারতীয় দূতাবাস।
তাইল্যান্ডের ভারপ্রাপ্ত প্রধানমন্ত্রী ফুমথাম ওয়েচায়াচাই জানিয়েছেন, পরিস্থিতি উল্লেখযোগ্য ভাবে খারাপ হয়ে গিয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘বর্তমান পরিস্থিতি অনুপ্রবেশ এবং আগ্রাসনের সঙ্গে জড়িত, যা জনগণকে বিপদের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। পরিস্থিতি আগের তুলনায় আরও তীব্রতর হয়েছে। পরিস্থিতি ক্রমশ যুদ্ধের দিকে এগোচ্ছে।’’
আরও পড়ুন:
বৃহস্পতিবার ভোরে উত্তর-পশ্চিম কম্বোডিয়ার সীমান্তবর্তী প্রেট ভিয়েরা প্রদেশে প্রথমে হামলা চালায় কম্বোডিয়া সেনা। তার পর থেকে দিনভর সেখানে তীব্র লড়াই চলছে। কম্বোডিয়ার বাহিনী ভারী কামান এবং রাশিয়ায় নির্মিত বিএম-২১ গ্রাড মাল্টিপল রকেট লঞ্চার ব্যবহার করায় প্রাথমিক ভাবে ক্ষয়ক্ষতি হয় তাইল্যান্ড সেনাশিবির এবং পার্শ্ববর্তী গ্রামগুলির। কিন্তু দ্রুত তাইল্যান্ড বায়ুসেনার ছ’টি এফ-১৬ যুদ্ধবিমান প্রত্যাঘাত করে বলে খবর। তার পর থেকে গত দু’দিন ধরে দুই দেশের সীমান্তে গোলাবর্ষণ চলছে।
প্রসঙ্গত, বিতর্কিত ‘পান্না ত্রিভুজ’-এর দখলদারি নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরে টানাপড়েন চলছে ব্যাঙ্কক-নম পেনের। তাইল্যান্ড, কম্বোডিয়া এবং আর এক পড়শি দেশ লাওসের সীমান্তবর্তী ওই ভূখণ্ডের দখল নিয়ে ১৯৬২ সালে আন্তর্জাতিক আদালত (ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অফ জাস্টিস বা আইসিজে) যে রায় দিয়েছিল, তা অনেকটা কম্বোডিয়ার পক্ষেই গিয়েছিল। কিন্তু চলতি বছরের মে মাসে কম্বোডিয়া সেনা সেখানে শিবির ও পরিখা নির্মাণের তৎপরতা শুরু করার পরে নতুন করে উত্তেজনা বাড়তে শুরু করে।