ইজ়রায়েলের নজরে কি এ বার ইরানের পারমাণবিক ঘাঁটি? এমনই সম্ভাবনার কথা জানালেন আমেরিকার গোয়েন্দারা। সংবাদমাধ্যম ‘সিএনএন’-এ প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, ইজ়রায়েলি সেনা ইরানের পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে আঘাত হানার পরিকল্পনা করছে। তবে এই হামলার বিষয়ে ইজ়রায়েলের সরকার চূড়ান্ত কোনও সিদ্ধান্ত নিয়েছে কি না, তা এখনও স্পষ্ট নয়।
গোয়েন্দা সূত্রকে উদ্ধৃত করে ‘সিএনএন’ জানিয়েছে, সম্প্রতি ইরানের পারমাণবিক ঘাঁটিগুলিতে ইজ়রায়েলের হামলার সম্ভাবনা উল্লেখযোগ্য ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে এই হামলার সম্ভাবনার নেপথ্যে কি পরোক্ষ ভাবে ইজ়রায়েল-আমেরিকার ‘বন্ধুত্ব’ কাজ করছে? অনেকের মতে, আমেরিকার সঙ্গে ইরান যদি পারমাণবিক চুক্তি করতে রাজি না হয়, তবে এই হামলা সম্ভাবনা আরও বৃদ্ধি পাবে।
রাষ্ট্রপুঞ্জের পরমাণু বিষয়ক নজরদারি সংস্থা ‘ইন্টারন্যাশনাল অ্যাটমিক এনার্জি এজেন্সি’ (আইএইএ)-র প্রধান রাফায়েল গ্রোসি সম্প্রতি ইরানের বিরুদ্ধে বিধান ভেঙে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কর্মসূচি এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ তুলেছিলেন। তার পরেই ওয়াশিংটন পরমাণু চুক্তি নিয়ে চাপ বাড়িয়েছিল। যদিও ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয় বার আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর থেকেই ইরানের সঙ্গে ‘পরমাণু চুক্তি’ নিয়ে উৎসাহী। তিনি বার বার তাঁর নিজের ইচ্ছার কথা প্রকাশ করেছেন। কখনও ধমকে-চমকে-হুঁশিয়ারি দিয়ে, আবার কখনও সরাসরি আলোচনায় বসার প্রস্তাব রেখে ইরানের সঙ্গে পরমাণু-কথা এগিয়ে নিয়ে যেতে চান ট্রাম্প। মার্চ মাসে ট্রাম্প ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতোল্লা খামেনেইকে চিঠি দিয়ে পরমাণু সমঝোতার জন্য চূড়ান্ত সময়সীমা দিয়েছিলেন। তবে ইরানও নিজেদের অবস্থানে অনড়। তাদের দাবি, ধমক বা হুঁশিয়ারি দিয়ে পরমাণু চুক্তি সই করানো যাবে না। আমেরিকার কাছে মাথা নত করবে না তারা।
আরও পড়ুন:
দিন দুয়েক আগেই আমেরিকা হুঁশিয়ারি দিয়েছিল, তারা ইরানকে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ করতে দেবে না! ওয়াশিংটনের এই দাবি নতুন করে দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা বাড়িয়েছে। মঙ্গলবারই খামেনেই আমেরিকার দাবি উড়িয়ে দিয়েছেন। তিনি জানান, ইরানের কেউ ওদের (আমেরিকা) অনুমতির জন্য অপেক্ষা করছে না। ইসলামি প্রজাতন্ত্র তার নিজস্ব নিয়ম অনুসরণ করে চলে। ভবিষতেও সেই নীতি মেনেই চলবে। উল্লেখ্য, পরমাণু চুক্তি নিয়ে ইতিমধ্যেই ইরান এবং আমেরিকা আলোচনায় বসার পরিকল্পনা করে বার কয়েক। কিন্তু এখনও পর্যন্ত কোনও সমাধানসূত্র বার হয়নি। সেই আবহেই ইজ়রায়েলের হামলার সম্ভাবনা ভাবাচ্ছে বিশ্বকে।