একটি-দু’টি নয়, পাঁচ পাঁচটি বোয়িং ৭৪৭ বিমান চিন থেকে উড়ে গিয়েছে ইরানের দিকে। বিশ্বে বিমান চলাচলের উপর নজরদারি চালানো সংস্থা ‘ফ্লাইটরেডার২৪’-কে উদ্ধৃত করে এমনটাই জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ‘ফক্স নিউজ়’। প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিমানগুলি উত্তর চিন থেকে উড়ে কাজ়াখস্তানের দিকে যায়। তার পর দক্ষিণে বাঁক নিয়ে উজ়বেকিস্তান এবং তুর্কমেনিস্তান পৌঁছোয়। রেডার-তথ্য বলছে, সেই সময় বিমানগুলির অভিমুখ ছিল ইরানের দিকে। তার পর অবশ্য রেডারে সেগুলির গতিবিধি ধরা পড়েনি।
প্রতিবেদনে একটি সূত্রকে উদ্ধৃত করে বলা হয়েছে, চিনের ওই বোয়িং বিমানগুলি আদতে লুক্সেমবার্গ যাচ্ছিল। কিন্তু সে ক্ষেত্রে বিমানগুলিকে ইউরোপের আকাশসীমায় দেখতে পাওয়ার কথা। তেমনটা ঘটেনি বলে জানিয়েছে ‘ফক্স নিউজ়’। আর এখানেই ঘনীভূত হয়েছে রহস্য। ভূরাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশ মনে করছেন, বিমানগুলি ইরানে পাঠিয়ে আদতে তেহরানের পাশে দাঁড়ানোর বার্তা দিয়েছে বেজিং। যদিও প্রকাশ্যে এই বিষয়ে মুখ খোলেনি চিন কিংবা উড়ান সংস্থা। বিমানগুলি ইরানেই রয়েছে, না কি কিছু সময়ের জন্য অবতরণ করে অন্যত্র উড়ে গিয়েছে, তা-ও এখনও স্পষ্ট নয়।
মার্কিন সংবাদমাধ্যটি জানিয়েছে, এই ধরনের বিমান সাধারণত যাত্রী পরিবহণ কিংবা পণ্য পরিবহণের ক্ষেত্রেই ব্যবহৃত হয়। বিমানগুলি যুদ্ধবিমান নয়। তবে এই ধরনের বিমানে খাদ্য, অস্ত্র কিংবা অন্য নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী চিন ইরানে পাঠাচ্ছে বলে মনে করা হচ্ছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ‘দ্য টেলিগ্রাফ’ বিমানগুলিকে ‘রহস্যময়’ বলে অভিহিত করেছে।
প্রসঙ্গত, বরাবরই বেজিঙের সঙ্গে তেহরানের সম্পর্ক বেশ মসৃণ। তা ছাড়া চিন তাদের অভ্যন্তরীণ চাহিদা মেটাতে যে গ্যাস এবং তেল আমদানি করে, তার ৪৩ শতাংশ আসে পশ্চিম এশিয়া, মূলত ইরান থেকে। সে দিক থেকে দেখতে গেলে ইরান বেজিঙের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। অন্য দিকে, শুল্কযুদ্ধের আবহে ওয়াশিংটন-বেজিং দূরত্ব আরও একটু বেড়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। সব মিলিয়ে ইজ়রায়েলের বিরুদ্ধে সংঘাতে চিন তলে তলে ‘বন্ধু’ ইরানকে সাহায্য করছে কি না, তা নিয়ে এখন জোর গুঞ্জন শুরু হয়েছে।