ইসলামাবাদের মাথায় ঋণের বোঝা বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে ২৩ লক্ষ কোটি টাকা (৭৬ লক্ষ কোটি পাকিস্তানি রুপি)। চলতি অর্থবর্ষের প্রথম ন’মাসের (পাকিস্তানের অর্থবর্ষ শুরু হয় জুলাই থেকে) পরিসংখ্যান তুলে ধরে এমনটাই জানিয়েছে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ় শরিফের সরকার। সোমবারই সে দেশের অর্থনৈতিক সমীক্ষার রিপোর্ট প্রকাশ করেছেন পাকিস্তানের অর্থমন্ত্রী মুহাম্মদ ঔরঙ্গজ়েব।
পাকিস্তানের পার্লামেন্টে মঙ্গলবার ২০২৫-২৬ অর্থবর্ষের জন্য বাজেট পেশ করার কথা শাহবাজ়দের জোট সরকারের। তার আগে সোমবার অর্থনৈতিক সমীক্ষা রিপোর্ট প্রকাশ করে পাক অর্থমন্ত্রীর দাবি, গত দু’বছর ধরে পাকিস্তানের অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে। চলতি অর্থবর্ষে (২০২৪-২৫) পরিস্থিতির আরও কিছুটা উন্নতি হয়েছে। চলতি অর্থবর্ষের প্রথম ন’মাসে পাকিস্তান সরকার যেমন দেশীয় ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ নিয়েছে, তেমনই বিদেশ থেকেও ঋণ নিয়েছে। অর্থবর্ষের প্রথম ন’মাসের হিসাবে পাকিস্তানের বিভিন্ন ব্যাঙ্ক থেকে শাহবাজ় সরকারের ঋণ রয়েছে ৫১ লক্ষ ৫০ হাজার কোটি পাকিস্তানি রুপি। অন্য বিভিন্ন জায়গা থেকে তাদের ঋণ রয়েছে ২৪ লক্ষ ৫০ হাজার কোটি পাকিস্তানি রুপির।
সোমবার অর্থনৈতিক সমীক্ষা রিপোর্ট প্রকাশের সময় পাক অর্থমন্ত্রী জানান, ২০২৩ সালে সে দেশে জিডিপি ০.২ শতাংশ কমে গিয়েছিল। ২০২৪ সালে সেখান থেকে পরিস্থিতি উন্নত হয়েছে। ২০২৪ সালে পাকিস্তানের জিডিপি বৃদ্ধির হার ২.৫ শতাংশে পৌঁছেছে। ২০২৫ সালে এই বৃদ্ধির হারকে ২.৭ শতাংশ পর্যন্ত নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্য রয়েছে পাকিস্তানের। ২০২৩ সালের তুলনায় গত বছরে পাকিস্তানের বৈদেশিক মুদ্রাভান্ডারও বৃদ্ধি পেয়েছে বলে দাবি পাক অর্থমন্ত্রীর। মঙ্গলবার পাকিস্তানের পার্লামেন্টে নতুন অর্থবর্ষের বাজেট পেশ হবে। তার পরে বুধ-বৃহস্পতি পার্লামেন্ট বন্ধ থাকবে এবং শুক্রবার থেকে বাজেট নিয়ে আলোচনা শুরু হবে।
আরও পড়ুন:
বস্তুত, ভারত-পাকিস্তান সাম্প্রতিক সংঘর্ষের পরে শাহবাজ় সরকারের এই বাজেটে আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে বলে মনে করা হচ্ছে। সম্প্রতি পাকিস্তানকে বাণিজ্য, বিনিয়োগ, উন্নয়নে জোর দেওয়ার কথা বোঝানোর সময় শাহবাজ় বলেছিলেন, হাতে ‘ভিক্ষার ঝুলি’ নিয়ে ঘুরবে পাকিস্তান, তার অতি বড় বন্ধুরাষ্ট্রও এখন আর সেই প্রত্যাশা করে না। ওই সময় শরিফ চিনকে ‘সর্বসময়ের বন্ধু’, সৌদি আরবকে ‘বিশ্বাসী বন্ধু’ বলে সম্বোধন করেন। তুরস্ক, কাতার, আরব আমিরশাহিকেও নিজের বন্ধু বলেই বর্ণনা করেন তিনি। অনেকের মতে, ‘ভিক্ষার ঝুলি’ মন্তব্যে নিজেদের দুর্বল অর্থনীতির বিষয়টিই আরও একবার স্পষ্ট করে তুলেছেন পাক প্রধানমন্ত্রী।