পহেলগাঁও কাণ্ডের পর ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা প্রশমিত করতে মধ্যস্থতা করার আগ্রহ দেখিয়েছে ইরান। এই পরিস্থিতিতে ইরানি প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজ়েশকিয়ানের সঙ্গে ফোনে কথা বললেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ় শরিফ। ইরানের সরকারি সংবাদ সংস্থা আইআরএনএ জানিয়েছে, শনিবার সন্ধ্যায় কথা হয়েছে দুই রাষ্ট্রনেতার। বস্তুত, পহেলগাঁওয়ে জঙ্গিদের হত্যালীলার পর থেকে ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। দু’দেশই একে অন্যের বিরুদ্ধে মৌখিক আক্রমণ শুরু করেছে। দুই পরমাণু শক্তিধর রাষ্ট্রের এই কূটনৈতিক আঘাত এবং প্রত্যাঘাতের পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছে অন্য দেশগুলিও।
ফোনালাপে ইরানি প্রেসিডেন্টকে পাকিস্তান সফরের জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছেন শাহবাজ়। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে উত্তেজনা প্রশমিত করতে ইরানের আগ্রহকে স্বাগত জানিয়েছেন তিনি। শাহবাজ়ের দাবি, পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার সঙ্গে পাকিস্তানের কোনও যোগ নেই। শনিবার ইরানের প্রেসিডেন্ট পেজ়েশকিয়ানের সঙ্গে ফোনালাপে আবারও সেই একই দাবি করেন পাক প্রধানমন্ত্রী। পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম ‘ডন’ এর প্রতিবেদন অনুসারে, শাহবাজ় জানান, পাকিস্তান সব ধরণের সন্ত্রাসবাদের নিন্দা করে এবং পহেলগাঁওয়ে সাম্প্রতিক জঙ্গি হামলার সঙ্গেও তাদের কোনও সম্পর্ক নেই।
গত মঙ্গলবার জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে জঙ্গিদের হত্যালীলায় ২৬ জন নিরস্ত্র মানুষের মৃত্যু হয়েছে। মৃতদের মধ্যে ২৫ জনই ছিলেন পর্যটক। গোয়েন্দা রিপোর্টে উঠে এসেছে, গত মঙ্গলবার ওই হামলায় স্থানীয় কয়েকজন জঙ্গি জড়িত থাকার অভিযোগ উঠলেও বাকি জঙ্গিরা পাকিস্তান থেকে এ দেশে এসেছিল। কাশ্মীরে ওই জঙ্গিহানার পর থেকে ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে কূটনৈতিক স্তরে উত্তেজনা বৃদ্ধি পেয়েছে। সিন্ধু চুক্তি স্থগিত, পাকিস্তানিদের ভিসা বাতিল-সহ বেশ কিছু পদক্ষেপ করেছে নয়াদিল্লি। পাল্টা ইসলামাবাদও ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ভারতকে তারা আর নিজেদের আকাশসীমা ব্যবহার করতে দেবে না বলে জানিয়েছে। শিমলা চুক্তি নিয়েও হুঁশিয়ারি দিয়েছে ইসলামাবাদ। এর মধ্যে উপত্যকায় নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর সংঘর্ষবিরতি লঙ্ঘনেরও অভিযোগ উঠেছে পাক সেনার বিরুদ্ধে।
আরও পড়ুন:
বস্তুত, গত মঙ্গলবারের ওই ঘটনার পর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে কথা বলেছেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ভারতের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন তিনি। তবে নয়াদিল্লি-ইসলামাবাদ দ্বন্দ্বে মধ্যস্থতার কোনও আকাঙ্ক্ষা নেই মার্কিন প্রেসিডেন্টের। তাঁর কথায়, ‘‘ভারত এবং পাকিস্তান নিজেরাই কোনও না কোনও ভাবে এই সমস্যার সমাধান করবে।’’