ঘূর্ণিঝড় রাই-এর তাণ্ডব-চিত্র। শনিবার মধ্য ফিলিপিন্সে। পিটিআই
টাইফুন রাই-এর তাণ্ডবে বিপর্যস্ত ফিলিপিন্স। দেশের মধ্য এবং দক্ষিণাঞ্চলের উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া এই ঘূর্ণিঝড় ইতিমধ্যেই ৩১ জনের প্রাণ কেড়েছে বলে প্রশাসন সূত্রের খবর। আশঙ্কা, মৃত্যুর সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। আহতের সংখ্যা তিন বলে প্রশাসন সূত্রের খবর। ঝড়ের প্রভাবে দেশের বেশির ভাগ প্রদেশ জুড়ে বিদ্যুৎ পরিষেবা তো ব্যাহত হয়েছেই, একই পরিস্থিতি টেলি যোগাযোগ ব্যবস্থারও।
সর্বোচ্চ প্রায় ১৯৫ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টায় বয়ে চলা এই ঘূর্ণিঝড় সাম্প্রতিককালে ফিলিপিন্সে আছড়ে পড়া ঝড়গুলির মধ্যে সবচেয়ে বিধ্বংসী ছিল বলে আবহাওয়া দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে। শুক্রবার রাতে দক্ষিণ চিন সাগরের দিকে চলে গিয়েছে ঝড়টি। ঝড়ের আগে কমপক্ষে তিন লক্ষ মানুষকে নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে আনা হয়েছে। না হলে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারত বলে মনে করছে প্রশাসন। যে ৩১ জনের প্রাণহানির খবর মিলেছে তাঁদের বেশির ভাগেরই ভেঙে পড়া গাছের তলায় চাপা পড়ে মৃত্যু হয়েছে বলে খবর।
ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে বাস্তুহারা বহু মানুষ। সংবাদমাধ্যমগুলির তোলা ছবিতে দেখা যাচ্ছে, তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ে রয়েছে বেশির ভাগ বাড়ি। উড়ে গিয়েছে বহু ভবনের ছাদ। ঘূর্ণিঝড়টি দেশের যে দ্বীপটিতে সবার আগে আছড়ে পড়েছিল সেই দিনাগাটের পরিস্থিতি ভয়াবহ। বিদ্যুৎ বিভ্রাট এবং যোগাযোগ ব্যবস্থা ধসে পড়ার জেরে সেখানকার মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি।
তবে দ্বীপটির গভর্নর আর্লিন ব্যাগ-আও প্রদেশটির সরকারি ওয়েবসাইটে কোনওমতে একটি বিবৃতি প্রকাশ করেছেন। লিখেছেন, ‘‘দ্বীপটি পুরো মাটিতে মিশে গিয়েছে।’’ আর্লিন আরও জানিয়েছেন, দ্বীপটির রাজধানী থেকে ইতিমধ্যেই কয়েকজনের মৃত্যুর খবর মিলেছে। তবে শহরতলি অঞ্চলগুলির কী পরিস্থিতি তা অজানা। কারণ, সেগুলি একেবারেই বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব খাবার, জল, অস্থায়ী ছাউনি, জ্বালানি এবং প্রয়োজনীয় ওষুধপত্র দ্বীপটিতে পাঠানোর ব্যবস্থা করার আর্জি জানিয়েছেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘এ যাত্রায় হয়তো বেঁচে গিয়েছি আমরা, তবে এখনই সাহায্য না-পেলে কী হবে জানি না। দ্বীপ হওয়ায় আমাদের সাধ্য কম।’’ দিনাগাটের হাসপাতালগুলি প্রত্যেকটিই ক্ষতিগ্রস্ত। দ্বীপের বাইরে যাওয়ায় ব্যবহৃত ভেসেলগুলিও আর জলে নামানোর যোগ্য নেই। দ্বীপটির ৯৫% বাড়ির ছাদ উড়ে গিয়েছে।
পড়শি দ্বীপ শিয়ারগাও-এর অবস্থাও খুবই খারাপ। ফিলিপিন্সের বোহোল প্রদেশেও ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব গুরুতর। ঝড়ের প্রভাবে প্লাবনের জেরে অনেকেই ছাদ এবং গাছের ডালে আশ্রয় নিয়েছিলেন। তাঁদের উদ্ধার করছেন উপকূলরক্ষী বাহিনী।
প্রেসিডেন্ট রড্রিগো দুতের্তে জানান, কোভিড মোকাবিলায় দেশের আপৎকালীন তহবিলের বেশির ভাগটাই খরচ হয়ে গিয়েছে। এই সময়ে ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডব প্রশাসনকে কঠিন পরিস্থিতির মুখে ঠেলে দিয়েছে। প্রদেশগুলিকে সাহায্য পাঠাতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছেন তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy