Advertisement
E-Paper

হাসিনাকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেওয়ায় অসন্তোষ রাষ্ট্রপুঞ্জের! রায়কে ‘গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত’ বলে মেনেও প্রশ্ন তুলল সাজা নিয়ে

সোমবার বাংলাদেশের ট্রাইবুনাল হাসিনাকে ‘দোষী’ সাব্যস্ত করেছে। মৃত্যুদণ্ডের আদেশও দিয়েছে। এই রায়কে ‘গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত’ বলে মেনে নিলেও ফাঁসির সাজা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে রাষ্ট্রপুঞ্জ।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১৮ নভেম্বর ২০২৫ ১০:৩৫
বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। — ফাইল চিত্র।

বাংলাদেশের আদালত শেখ হাসিনাকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেওয়ায় অসন্তুষ্ট রাষ্ট্রপুঞ্জের মানবাধিকার সংগঠন। সোমবার ঢাকায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল হাসিনার ফাঁসির সাজা ঘোষণা করেছে। ট্রাইবুনালের রায় ঘোষণাকে এক ‘গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত’ বলে ব্যাখ্যা করলেও হাসিনাকে ফাঁসির সাজায় আপত্তি রয়েছে রাষ্ট্রপুঞ্জের মানবাধিকার সংগঠনের।

হাসিনাকে নিয়ে বাংলাদেশের ট্রাইবুনাল রায় ঘোষণার পরে সোমবার রাতে একটি বিবৃতি প্রকাশ করেন রাষ্ট্রপুঞ্জের মানবাধিকার সংগঠনের মুখপাত্র রবিনা শামদাসানি। সেখানে তিনি লেখেন, ‘‘এই রায় বাংলাদেশে গত বছরের বিক্ষোভের সময়ে দমন পীড়নের শিকার হওয়া ব্যক্তিদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত।’’ বস্তুত, গত ফেব্রুয়ারিতে বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে একটি তথ্যানুসন্ধান রিপোর্ট তৈরি করেছিল রাষ্ট্রপুঞ্জের মানবাধিকার সংগঠন। রবিনা জানান, ওই রিপোর্ট প্রকাশের পর থেকেই তাঁরা নির্দেশদাতা এবং নেতৃত্বের জায়গায় থাকা ব্যক্তিদের আন্তর্জাতিক মাপকাঠি অনুসারে জবাবদিহির আওতায় আনার জন্য বলে আসছেন। ক্ষতিগ্রস্তদের সমস্যার সুরাহা এবং ক্ষতিপূরণেরও দাবি জানিয়ে আসছেন তাঁরা।

এই মামলার ক্ষেত্রে যে অভিযুক্তের (হাসিনার) অনুপস্থিতিতে বিচার প্রক্রিয়া চলেছে এবং মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়েছে, তা-ও স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন রাষ্ট্রপুঞ্জের মানবাধিকার সংগঠনের মুখপাত্র। বিবৃতিতে তিনি জানান, আন্তর্জাতিক অপরাধের অভিযোগ এবং অন্য জবাবদিহি চাওয়ার বিষয়গুলি যাতে ন্যায়বিচারের আন্তর্জাতিক মাপকাঠি যথাযথ ভাবে পূরণ করে, তা ধারাবাহিক ভাবে বলে আসছে রাষ্ট্রপুঞ্জের মানবাধিকার সংগঠন। তিনি লেখেন, ‘‘মৃত্যুদণ্ডের রায়ের জন্য আমরা দুঃখ প্রকাশ করছি। আমরা সব পরিস্থিতিতে এর (মৃত্যুদণ্ডের) বিরোধিতা করি।’’

শুধু রাষ্ট্রপুঞ্জের মানবাধিকার সংগঠনই নয়, বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মানবাধিকার গোষ্ঠীও এই রায়ের সমালোচনা করেছে। ব্রিটেন থেকে পরিচালিত আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন ‘অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল’ মনে করছে, এই বিচারপ্রক্রিয়া ‘সুষ্ঠু এবং ন্যায়সঙ্গত’ হয়নি। তাদের মতে, গত বছরের জুলাই-অগস্টে মানবাধিকার লঙ্ঘনের গুরুতর অভিযোগের ঘটনায় দমন-পীড়নের শিকার হওয়া ব্যক্তিদের ন্যায়বিচার এবং জবাবদিহি পাওয়া প্রয়োজন। তবে মৃত্যুদণ্ডের আদেশে মানবাধিকার আরও বেশি করে লঙ্ঘিত হয়। ব্রিটেনের ওই সংগঠনের বক্তব্য, ‘‘অভিযুক্তদের অনুপস্থিতিতে নজিরবিহীন দ্রুততার সঙ্গে বিচার প্রক্রিয়া এগিয়েছে। ফলে এই মামলার ক্ষেত্রে ন্যায়বিচার নিশ্চিত হওয়া নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন উঠে এসেছে।’’

বেলজিয়াম ভিত্তিক মানবাধিকার গোষ্ঠী ‘ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপ’-ও মনে করছে, এই বিচারপ্রক্রিয়া সমালোচনামুক্ত নয়। তাদের বক্তব্য, অভিযুক্তদের অনুপস্থিতিতে বিচার হলে, তা থেকে প্রায়শই বিতর্কের সূত্রপাত হয়। এ মামলার ক্ষেত্রে যে দ্রুততার সঙ্গে শুনানি হয়েছে, তা বিবাদী পক্ষের সুযোগ-সুবিধার ঘাটতি এবং সুষ্ঠু বিচার নিয়ে প্রশ্নের অবকাশ রাখে বলেই মনে করছে তারা। তবে এই সমালোচনাকে গত বছরের জুলাইয়ের ঘটনাগুলিকে হালকা ভাবে নেওয়ার জন্য ব্যবহার করা উচিত নয়, তা-ও জানিয়েছে বেলজিয়াম ভিত্তিক ওই সংগঠন।

Sheikh Hasina Bangladesh dhaka
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy