ভিড়ে ঠাসা ছিল অস্ট্রেলিয়ার সিডনি শহরের বন্ডি সমুদ্রসৈকত। ইহুদিদের হানুকা উৎসব চলছিল। সিডনির ইহুদি গোষ্ঠীর মানুষ সেই উপলক্ষে সৈকতে ভিড় করেছিলেন। কিন্তু মুহূর্তে ছারখার হয়ে যায় সব আয়োজন। দুই বন্দুকধারী আচমকা সৈকতে চলে আসেন। ইহুদিদের লক্ষ্য করে নির্বিচারে গুলি চালাতে শুরু করেন। ১০ মিনিটের সেই হামলায় সিডনির সমুদ্রের ধারে মৃত্যু হয়েছে ১৫ জনের। এক বন্দুকবাজকে ধরলে মৃতের সংখ্যা ১৬! অস্ট্রেলিয়ার পুলিশ সোমবার সকালে জানিয়েছে, বন্দুকবাজ দু’জন সম্পর্কে পিতা ও পুত্র। তবে কী কারণে হামলা, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
বন্ডি সৈকতের ঘটনাকে সন্ত্রাসবাদী হামলার তকমা দিয়েছে অস্ট্রেলিয়া সরকার। পুলিশ জানিয়েছে, বন্দুকবাজ পিতা সাজিদ আক্রম (৫০)। তাঁর নামে আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স ছিল। তাঁকে সঙ্গ দেন তাঁর ২৪ বছরের পুত্র নবিদ। সৈকতেই পুলিশের গুলিতে প্রৌঢ়ের মৃত্যু হয়েছে। হামলাকারী পুত্র গুরুতর জখম অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁকে পুলিশি প্রহরায় রাখা হয়েছে। এ ছাড়া, আরও ৪০ জন জখম অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি। তাঁদের মধ্যে দু’জন পুলিশ আধিকারিকও রয়েছেন। চোট গুরুতর হলেও তাঁদের অবস্থা আপাতত স্থিতিশীল।
বন্দুকবাজের হামলার পর সিডনির বন্ডি সমুদ্রসৈকত। ছবি: রয়টার্স।
পুলিশ জানিয়েছে, রবিবার বন্ডি সৈকতের উৎসবে অন্তত ১০০০ জন শামিল হয়েছিলেন। সৈকতের একটি অংশে উৎসব চলছিল। ফলে সেই জায়গাটি ভিড়ে ঠাসা ছিল। আচমকা সেখানে বন্দুক নিয়ে ঢুকে পড়েন দু’জন আততায়ী। নির্বিচারে গুলি চালান। যাঁকে সামনে পেয়েছেন, মেরেছেন তাঁরা। মহিলা, শিশু বা বয়স্কদেরও রেয়াত করা হয়নি। নিহত ১৫ জনের মধ্যে ১০ থেকে ৮৭ বছর বয়সিরা রয়েছেন।
আরও পড়ুন:
সমাজমাধ্যমে হামলার সময়ের একটি ভিডিয়ো ছড়িয়ে পড়েছে। সেখানে দেখা গিয়েছে, এক যুবক খালি হাতে এগিয়ে বন্দুকবাজকে পিছন দিক থেকে জাপটে ধরেন এবং তাঁর হাত থেকে বন্দুক কেড়ে নেন। তার পরেই তাঁকে ধরা সম্ভব হয়েছে। এই ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার ডট কম। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে দাবি, ওই যুবকের নাম আহমেদ আল আহমেদ। তিনি বন্ডি সৈকতে ফল বিক্রি করেন। ঘটনায় তিনিও আহত হয়েছেন এবং হাসপাতালে রয়েছেন।
পুলিশ জানিয়েছে, বন্ডি সৈকতের কাছে দু’টি বোমা সক্রিয় অবস্থায় রাখা ছিল। সেগুলিকে চিহ্নিত করে পরে নিষ্ক্রিয় করা হয়। জানা গিয়েছে, নিহত বন্দুকবাজ প্রৌঢ়ের কাছে ছ’টি বন্দুক ছিল। সেগুলিই হামলায় ব্যবহার করা হয়েছিল। কী ভাবে তিনি তার লাইসেন্স পেলেন, খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আগে থেকে পুলিশের খাতায় এই পিতা-পুত্রের নাম ছিল কি না, তা-ও স্পষ্ট করেনি পুলিশ।