Advertisement
E-Paper

‘শয়তানের খোঁজ’ অভিযান কী? কাদের সন্ধানে ইউনূস সরকার? দু’দিনে হাজারের বেশি গ্রেফতার বাংলাদেশে

বাংলাদেশে শান্তি ফেরাতে মুহাম্মদ ইউনূসের সরকার নতুন অভিযান শুরু করেছে। আইনশৃঙ্খলারক্ষী বাহিনী খুঁজছে ‘শয়তান’দের। দু’দিনের মধ্যে সহস্রাধিক মানুষকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৭:২৮
‘শয়তানের খোঁজে’ নতুন অভিযান চালু করেছে বাংলাদেশের মুহাম্মদ ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকার।

‘শয়তানের খোঁজে’ নতুন অভিযান চালু করেছে বাংলাদেশের মুহাম্মদ ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকার। গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।

‘শয়তানের খোঁজ অভিযান’ (অপারেশন ডেভিল হান্ট) শুরু হয়েছে বাংলাদেশে। শনিবার থেকে দেশের নানা প্রান্তে চলছে ধরপাকড়। দু’দিনে সহস্রাধিক মানুষকে গ্রেফতার করেছে বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলারক্ষী বাহিনী। কিন্তু কী এই ‘ডেভিল হান্ট’? ‘ডেভিল’ বা ‘শয়তান’ বলতে কাদের বোঝানো হচ্ছে? কেনই বা এত ধরপাকড়?

বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, শনিবার রাত থেকে রবিবার দুপুর পর্যন্ত ‘শয়তানের খোঁজ’ অভিযানে সারা দেশে মোট ১,৩০৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাঁদের অধিকাংশই প্রাক্তন শাসকদল আওয়ামী লীগের কর্মী বা সেই দলের সমর্থক। দেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সূত্রে খবর, বাংলাদেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নত করতে, শান্তি ফেরাতে এই নতুন অভিযানের পরিকল্পনা। প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের বক্তব্য, এক দল মানুষ দেশ জুড়ে অশান্তি সৃষ্টির চেষ্টা করছেন। ষড়যন্ত্র এবং সন্ত্রাসমূলক কাজকর্মে জড়িয়ে পড়ছেন তাঁরা। এই দলের মূল উদ্দেশ্য, বাংলাদেশকে অশান্ত করে অন্তর্বর্তী সরকারের ভাবমূর্তি কালিমালিপ্ত করা। এই দলটিকে ঠেকাতেই কাজ করবে ‘শয়তানের খোঁজ’ অভিযান। মূলত পূর্বতন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনুগামী এবং আওয়ামী লীগের সদস্যেরাই অশান্তি করছেন বলে অভিযোগ।

যাঁরা অশান্তি সৃষ্টি করছেন, আগে তাঁদের চিহ্নিত করবেন আইনশৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যেরা। কী ভাবে তাঁরা কার্যক্রম পরিচালনা করছেন, তা শনাক্ত করা হবে। দেশের গোয়েন্দা বিভাগকে এ বিষয়ে বাড়তি সতর্ক এবং সক্রিয় হতে বলা হয়েছে। এর পর ওই সমস্ত ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে দ্রুত আইন এবং বিচারব্যবস্থার আওতায় আনা হবে। ‘শয়তানের খোঁজ’ অভিযানের প্রাথমিক লক্ষ্য সেটাই।

ঘটনার সূত্রপাত ধানমন্ডি থেকে। ৩২ নম্বর ধানমন্ডিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়িতে সম্প্রতি ভাঙচুর চালানো হয়। ক্রেন নিয়ে এসে মুজিবের স্মৃতিবিজড়িত বাড়িটির অনেকটা অংশ ভেঙে ফেলা হয়। ভাঙচুর এবং অগ্নিসংযোগ করা হয় ধানমন্ডিতে হাসিনার সুধা সদনেও। সেই ঘটনার সমালোচনা করে বিবৃতি দিয়েছিল ভারত সরকার। এর পর গাজীপুরে নতুন করে অশান্তি হয়। অভিযোগ, বাংলাদেশের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্যেরা শুক্রবার সেখানে এক প্রাক্তন মন্ত্রীর বাড়িতে ভাঙচুর চালাতে গিয়েছিলেন। সেখানে স্থানীয়েরা তাঁদের পাল্টা মারধর করলে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। সংঘর্ষে বেশ কয়েক জন আহত হন।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অবশ্য দাবি, গাজীপুরে একটি ডাকাতির খবর পেয়ে তা ঠেকাতে গিয়েছিলেন তাঁরা। সেই সময়ে তাঁদের মারধর করা হয়। গোটা ঘটনায় দায়িত্বে গাফিলতির কথা স্বীকার করে ক্ষমা চেয়েছেন গাজীপুরের পুলিশ কমিশনার। বিক্ষোভ সামলাতে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত আধিকারিককে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। এর পরের দিনই আইনশৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনী, নিরাপত্তা সংস্থাগুলির সঙ্গে বৈঠক করে ইউনূস সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। ‘শয়তানের খোঁজ’ অভিযানের সূচনা হয় সেই বৈঠক থেকে। শনিবার গাজীপুরে গিয়ে ৪০ জনকে গ্রেফতার করে আইনশৃঙ্খলারক্ষী বাহিনী। তার পরের দিন ধরপাকড়ের সংখ্যা আরও বৃদ্ধি পায়। উদ্ধার করা হয়েছে অনেক অস্ত্রশস্ত্র। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সূত্রে জানানো হয়েছে, ‘শয়তানের খোঁজ’ অভিযান দীর্ঘমেয়াদী হবে। দেশে শান্তি ফেরাতেই এই অভিযান। ফলে যত দিন না সেই উদ্দেশ্য সফল হচ্ছে, তত দিন অভিযান চলবে।

Bangladesh Bangladesh Unrest Bangladesh Situation Operation Devil Hunt
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy