Advertisement
E-Paper

দেশে বিদ্যুৎ পরিষেবায় আমূল পরিবর্তন এসেছে তাঁর হাত ধরে! বন্ধ হয়েছে লোডশেডিং, সেই ঘিসিংকেই চাইছে নেপাল?

স্থানীয় বিভিন্ন সূত্রে দাবি করা হয়েছে, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হওয়ার দৌড়ে অনেকটাই এগিয়ে রয়েছেন কুল মান। সুশীলা এবং বলেন্দ্রকে ছাপিয়ে কেন হঠাৎ করে কুল মানের নাম ভেসে উঠল, কেনই বা অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধানের পদে কুল মানের চাহিদা বাড়তে শুরু করেছে বিক্ষোভকারীদের কাছে?

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৬:৫৪
Who is Kulman Ghising, Why Nepal is wanting this man to be as interim PM

কে এই কুল মান ঘিসিং? ছবি: সংগৃহীত।

সুশীলা কার্কী না বলেন্দ্র শাহ — বিক্ষোভ-আন্দোলনে উত্তাল নেপালের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধানের দৌড়ে যখন এই দু’জনের নাম উঠে আসে, তখন সেই দৌড়ে আরও এক জনের নাম ভেসে উঠল। তিনি কুল মান ঘিসিং। স্থানীয় বিভিন্ন সূত্রে দাবি করা হয়েছে, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হওয়ার দৌড়ে অনেকটাই এগিয়ে রয়েছেন কুল মান। সুশীলা এবং বলেন্দ্রকে ছাপিয়ে কেন হঠাৎ করে কুল মানের নাম ভেসে উঠল, কেনই বা অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধানের পদে কুল মানের চাহিদা বাড়তে শুরু করেছে বিক্ষোভকারীদের কাছে? কে এই কুল মান?

কুল মান পেশায় ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার। পাশাপাশি এক জন পরামর্শদাতা হিসাবেও কাজ করেন তিনি। নেপালের বিদ্যুৎ দফতরের (নেপাল ইলেকট্রিসিটি অথরিটি বা এনইএ) অধিকর্তা ছিলেন কুল মান। কিন্তু ২০২৫-এর মার্চে ওলির সরকার (নেপালের পদত্যাগী প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি) কুল মানকে তাঁর পদ থেকে সরিয়ে দেয়। যুব সম্প্রদায়ের মধ্যে কুল মানের জনপ্রিয়তাও রয়েছে। শুধু যুব সম্প্রদায় কেন, নেপালবাসী তাঁর কাছে কৃতজ্ঞ বলে বিভিন্ন সূত্রে দাবি করা হয়েছে।

নেপালের সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, কুল মানের জনপ্রিয়তার নেপথ্যের অন্যতম কারণ হল, তিনি দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরব ছিলেন। এ ছাড়াও তাঁর উদ্যোগে নেপালের দীর্ঘ দিনের বিদ্যুৎবিভ্রাট সমস্যার সমাধান হয়েছে। তাঁর প্রচেষ্টাতেই নেপালে লোডশেডিং একেবারে বন্ধ হয়ে গিয়েছে। আর সে কারণেও নেপালিদের মধ্যে কুল মানের জনপ্রিয়তা রয়েছে।

১৯৭০ সালের ২৫ নভেম্বর নেপালের রামেছাপ জেলায় জন্ম কুল মানের। ভারতের সঙ্গেও কুল মানের নিবিড় যোগ রয়েছে। স্কুলজীবন নেপালে কাটলেও, উচ্চশিক্ষার জন্য ভারতে আসেন কুল মান। তিনি ঝাড়খণ্ডের জামশেদপুরের রিজিওনাল ইনস্টিটিউঠ অফ টেকনোলজি (আরআইটি) থেকে ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে পড়াশোনা করেন। তার পর নেপালের পুলচওক ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজেও পড়েন তিনি।

ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে তাঁর দক্ষতা এবং এক জন সৎ মানুষ হিসাবে নেপালে তাঁর যে ভাবমূর্তি তৈরি হয়েছিল, সেই ভাবমূর্তির জন্যই নেপালের বিদ্যুৎ দফতরের অধিকর্তার পদে বসানো হয়েছিল তাঁকে। ২০১৬-২০২০ পর্যন্ত কার্যকালের প্রথম মেয়াদ ছিল তাঁর। আবার দ্বিতীয় বারের জন্যও তাঁকে অধিকর্তার পদে বহাল রাখা হয়েছিল (২০২১-২০২৫)।

বিদ্যুৎ দফতরের অধিকর্তা হওয়ার পরই প্রথম যে কাজটি তিনি করেছিলেন, সেটি হল নেপাল লোডশেডিংয়ের সমস্যা চিরতরের জন্য দূর করা। আর সেই কাজের জন্যই তিনি আরও জনপ্রিয় হন। অধিকর্তার পদে থাকাকালীন নেপালের বিদ্যুৎ পরিষেবায় আমূল পরিবর্তন আনেন। বিদ্যুৎ উৎপাদন, বিদ্যুৎ বণ্টন ব্যবস্থায় পরিবর্তন করেন। বিদ্যুৎ চুরির ঘটনা বন্ধ হয় তাঁর সময়েই। এমনকি বিদ্যুৎ বিলের ক্ষেত্রেও বদল আনেন। বিদ্যুৎ আমদানি এবং রফতানির ক্ষেত্রেও আমূল পরিবর্তন আসে তাঁর হাত ধরেই।

২০২৫ সালে মার্চে তাঁকে অধিকর্তার পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। কুল মানের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে, সময় মতো রিপোর্ট দিচ্ছেন না তিনি। ভারতের সঙ্গে বিদ্যুৎ ব্যবস্থা নিয়ে আলোচনায় কারও অনুমোদন নেননি। সরকারি নির্দেশিকা অমান্য করেছেন— এ রকম নানাবিধ অভিযোগ তুলে তাঁকে সরিয়ে দেওয়া হয়। যদিও এই সমস্ত অভিযোগ কুল মানের ভাবমূর্তি এবং জনপ্রিয়তায় বিন্দুমাত্র আঁচড় কাটতে পারেনি। বিদ্যুৎ পরিষেবা নিয়ে নাজেহাল নেপালবাসীদের কাছে ত্রাতা হয়ে ওঠেন এই ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার। তাঁকেই কি প্রধানমন্ত্রীর পদে দেখতে চাইছেন বিক্ষোভকারীরা?

Kulman Ghising Nepal Violence Nepal Unrest
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy