বাঁধনছাড়া গতিতে ছুটছে সোনা-রুপোর দাম। তাতে ধনতেরসের বাজার মার খাবে কি না, প্রশ্ন উঠছিল। শনিবার সংশয়ে দাঁড়ি পড়ল। ধনতেরসের প্রথম দিনে বড় বিক্রেতারা তো বটেই, ভাল ব্যবসার মুখ দেখল ছোট-মাঝারি গয়না দোকানও। তবে পরিসংখ্যানে দেখা গিয়েছে, দাম বেশি বলে টাকার অঙ্কে বিক্রি বেড়েছে বিপুল। ওজনের নিরিখে তা বরং কিছুটা কমেছে। দ্বিতীয় দিন, অর্থাৎ রবিবারে ভিড় আরও বাড়তে পারে বলে আশা।
বেশ কিছু দিন হল ১০ গ্রাম সোনার দাম লক্ষাধিক। কেজি প্রতি রুপো দৌড়চ্ছে ২ লক্ষ টাকার দিকে। গয়না বিক্রেতাদের দাবি, এত দাম উপেক্ষা করে বিক্রি বৃদ্ধির কারণ একাধিক। এক, বহু ক্রেতা দাম আরও বৃদ্ধির আশঙ্কায় কিনে রাখছেন। দুই, একাংশের কাছে গয়না কেনা মানে এখন ভাল লগ্নি, যার মোটা রিটার্ন দেয়। তিন, ধনতেরসের দিন সোনা-রুপো কেনা শুভ মনে করেন অনেকে। সব মিলিয়েই বাজার তেতে গিয়েছে।
পিসি চন্দ্র জুয়েলার্সের এমডি উদয় চন্দ্র বলেন, ‘‘আমাদের প্রতিটি দোকানে ভিড় উপচে পড়েছে।’’ একই দাবি সেনকো জুয়েলার্সের এমডি শুভঙ্কর সেনের। তাঁর পর্যবেক্ষণ, ‘‘আমাদের ৬০-৭০ শতাংশ ছিলেন মধ্যবিত্ত। তবে অধিকাংশ ৩ থেকে ৮/৯ গ্রামের মধ্যে হাল্কা গয়না কিনেছেন।’’ অঞ্জলি জুয়েলার্সের অনর্ঘ উত্তীয় চৌধুরীর বক্তব্য, আসন্ন বিয়ের মরসুমের জন্য অনেকে গয়না কিনেছেন। গত বারের থেকে বিক্রি বেড়েছে ৭-৮ শতাংশ। রাখালচন্দ্র দে জুয়েলার্সের ডিরেক্টর নবীনচন্দ্র জানাচ্ছেন, অনেকে কিনতে এসে জেনেছেন সোনা এত চড়া। বাধ্য হয়ে কম ওজনের হাল্কা গয়না কিনেছেন। তবে অনেকেরই লক্ষ্য ছিল লগ্নি, স্রেফ শখ মেটানো নয়। বেলঘরিয়ার ছোট দোকান পিসি পোদ্দার জুয়েলার্সের মালিক কৌশিক পোদ্দার বলেন, ‘‘এত দামে ছোটরা মার খাব কি না, চিন্তায় ছিলাম। বিক্রি ভাল হয়েছো।’’ বঙ্গীয় স্বর্ণশিল্পী সমিতির সাধারণ সস্পাদক টগর পোদ্দারের আশা, এটা বহাল থাকলে বহু কারিগর পেশায় ফিরবেন।
অল ইন্ডিয়া জেম অ্যান্ড জুয়েলারি ডোমেস্টিক কাউন্সিলের ডিরেক্টর সমর দে মতে, “বাণিজ্য এবং ভূ-রাজনৈতিক অস্থিরতার জেরে সোনার দাম আরও বাড়তে পারে, এই আশঙ্কা ধনতেরসের বাজারকে আরও বেশি চাঙ্গা করেছে।’’
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)