Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

খুনের পরে হেঁটে চলে যায় আততায়ী

মঙ্গলবার সকালে ওই বাগানবাড়ির শৌচাগারে দু’টি সুটকেস থেকে উদ্ধার হয় প্রদীপ বিশ্বাস (৫৫) ও তাঁর স্ত্রী আল্পনা বিশ্বাসের (৪৫) দেহ। ঘর ও শৌচাগারে রক্তের ছাপ ছিল। ঘর থেকে মেলে রক্তমাখা একটি কাঁচি এবং কিছু পোশাক।

ট্রলি ব্যাগের ভিতরে রাখা রয়েছে মৃতদেহ। —ফাইল চিত্র।

ট্রলি ব্যাগের ভিতরে রাখা রয়েছে মৃতদেহ। —ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ অগস্ট ২০১৯ ০২:২৫
Share: Save:

প্রৌঢ় দম্পতিকে খুন করার পরে আততায়ী হেঁটে বেরিয়ে গিয়েছিল। নরেন্দ্রপুরের তিউরিয়ায় বাগানবাড়িতে খুনের তদন্তে নেমে এমন তথ্যই উঠে এসেছে বলে দাবি করছেন পুলিশ অফিসারেরা। তাঁদের আরও দাবি, ওই ঘটনায় জখম হয়েছে আততায়ীও।

মঙ্গলবার সকালে ওই বাগানবাড়ির শৌচাগারে দু’টি সুটকেস থেকে উদ্ধার হয় প্রদীপ বিশ্বাস (৫৫) ও তাঁর স্ত্রী আল্পনা বিশ্বাসের (৪৫) দেহ। ঘর ও শৌচাগারে রক্তের ছাপ ছিল। ঘর থেকে মেলে রক্তমাখা একটি কাঁচি এবং কিছু পোশাক। পুলিশ জানিয়েছে, প্রদীপের শরীরে কোনও আঘাতের চিহ্ন মেলেনি। তবে আল্পনার মাথায় দেড় ইঞ্চি গভীর একটি ক্ষত রয়েছে। এক ফরেন্সিক অফিসার বলেন, ‘‘শৌচাগারে যতটা রক্ত ছিল এবং কাপড়ে যতটা রক্ত লেগে ছিল, সব মিলিয়ে তার পরিমাণ প্রায় তিন লিটার। আল্পনার মাথার ক্ষতের যা গভীরতা, তাতে ওই পরিমাণ রক্তক্ষরণ হওয়ার সম্ভাবনা কম।’’ তদন্তকারীদের ধারণা, মহিলার মাথায় ছোট ক্ষত ওই কাঁচি থেকেই হয়েছে। এ ছাড়া ঘর থেকে আর কোনও ধারালো জিনিস মেলেনি।

বুধবার রাতে ঘটনাস্থলে পুলিশ কুকুর নিয়ে আসা হয়। প্রথমেই সে যায় শৌচাগারে। এর পরে ঘরে এসে রক্তমাখা চাদর শুঁকে বাইরে বেরিয়ে আসে। সদর দরজা দিয়ে বেরিয়ে প্রায় আধ কিলোমিটার হেঁটে চলে আসে তিউরিয়া মোড়ে। পুলিশ কুকুরটি আরও এগিয়ে যাচ্ছিল। কিন্তু কয়েকটি পথ-কুকুর তাকে ঘিরে ধরে চিৎকার শুরু করায় সে ভয় পেয়ে গাড়িতে উঠে পড়ে।

এক তদন্তকারী অফিসার জানান, প্রাথমিক ভাবে মনে হচ্ছে, আততায়ীর রক্তও বিছানায় পড়েছিল। সেই রক্তের গন্ধ শোঁকার পরেই রাস্তা ধরে এগিয়ে যায় পুলিশ কুকুরটি। ওই অফিসারের ব্যাখ্যা, যদি বাড়ির বাইরে থেকে আততায়ী গাড়িতে উঠে পড়ত, তা হলে পুলিশ কুকুর বাইরে গিয়েই ফের ঘরে ফিরে আসত। কিন্তু সে তা করেনি। যা থেকে অনুমান, ওই বাগানবাড়ির আশপাশে কোনও বাড়ি না থাকা সত্ত্বেও আততায়ী কোনও ঝুঁকি নেয়নি। হেঁটেই চলে গিয়েছিল। কোনও গাড়ি ব্যবহার করেনি। কারণ, নির্জন এলাকায় গাড়ি নিয়ে যাতায়াত করলে লোকের চোখে পড়ার সম্ভাবনা ছিল।

ওই বাগানবাড়ির মালিক দীপঙ্কর দে ও তাঁর ছেলে সমুদ্রকে বৃহস্পতিবার দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করেন তদন্তকারীরা। জেরা করা হয় প্রদীপের দুই ভাইঝিকেও। পুলিশ জানায়, এই ঘটনায় বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট) গঠন করা হয়েছে। যার নেতৃত্বে আছেন ডিআইজি (প্রেসিডেন্সি রেঞ্জ) রাজেশ যাদব।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Crime Murder SIT Kolkata Police
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE