Advertisement
০৫ মে ২০২৪

মাটির নীচে পাইপের ফাটল খুঁজতে জিআইএস মানচিত্র

শহরের ভূগর্ভস্থ পানীয় জল ও নিকাশির অবস্থা কী তা নিয়ে মানচিত্র তৈরিতে কলকাতা পুরসভা আগে উদ্যোগী হলেও তা কার্যকর হয়নি। ফলে, অধরাই থেকে গিয়েছে ভূগর্ভস্থ নিকাশি এবং পানীয় জলের পাইপের ছবি।

রামগড়ের বিদ্যাসাগর কলোনিতে জন্ডিস আক্রান্তের বাড়িতে সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী ও ৯৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর দেবাশিস মুখোপাধ্যায়। —নিজস্ব চিত্র।

রামগড়ের বিদ্যাসাগর কলোনিতে জন্ডিস আক্রান্তের বাড়িতে সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী ও ৯৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর দেবাশিস মুখোপাধ্যায়। —নিজস্ব চিত্র।

কৌশিক ঘোষ
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৭ মে ২০১৯ ০০:০০
Share: Save:

শহরের ভূগর্ভস্থ পানীয় জল ও নিকাশির অবস্থা কী তা নিয়ে মানচিত্র তৈরিতে কলকাতা পুরসভা আগে উদ্যোগী হলেও তা কার্যকর হয়নি। ফলে, অধরাই থেকে গিয়েছে ভূগর্ভস্থ নিকাশি এবং পানীয় জলের পাইপের ছবি। এ বার আবার কলকাতা এনভায়রনমেন্ট ইমপ্রুভমেন্ট ইনভেস্টমেন্ট প্রোগাম (কেইআইআইপি) কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে সেই মানচিত্র তৈরির পরিকল্পনা বাস্তবায়িত করার চেষ্টা শুরু হয়েছে। এই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে শহরে জলের ও নিকাশির পাইপের ফাটল মানচিত্রের মাধ্যমেই শনাক্ত হবে। তাতে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হবে। বর্তমানে কোনও পাইপে ফাটল খুঁজতে পুরসভার আধিকারিকদের গলদঘর্ম হতে হয়।

এই প্রকল্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত এক আধিকারিক জানান, কলকাতা শহরের বিভিন্ন ওয়ার্ডের ভূগর্ভস্থ অবস্থা কী তা জানতে প্রায় ৮ কোটি টাকা খরচ করে নতুন প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। আশা করা যাচ্ছে আগামী এক বছরের মধ্যেই সেই কাজ শেষ হবে। পুরসভা সূত্রের খবর, এর আগেও গত ২০ বছরের মধ্যে পুরসভা শহরের বিভিন্ন ওয়ার্ডের মানচিত্র তথা ভূগর্ভস্থ জল ও পাইপলাইনের সামগ্রিক ছবি তোলার চেষ্টাও করেছিল। কিন্তু প্রযুক্তিগত ও প্রশাসনিক জটিলতায় তা বন্ধ হয় যায়। ফলে, আধুনিক প্রযুক্তি জিওগ্রাফিক ইনফরমেশন সিস্টেম (জিআইএস) পদ্ধতি কাজে লাগিয়ে নতুন করে এই মানচিত্র তৈরির কাজ শুরু হল। বিভিন্ন ওয়ার্ড ছাড়াও বিভিন্ন কেইআইআইপি প্রকল্পে সংযোজিত সমস্ত ওয়ার্ডে যেখানে নিকাশির কাজ হচ্ছে, তার উপর বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।

কলকাতা পুরসভা সূত্রে খবর, শহরে বিভিন্ন ওয়ার্ডের তৎকালীন সমস্ত বাড়ি এবং জলাশয়, রাস্তা-সহ ভূগর্ভস্থ নিকাশির পুঙ্খানুপুঙ্খ বিবরণ দেওয়া ছিল। এই ‘স্মার্ট ম্যাপ’ দেখে পরবর্তীকালে অ্যাসেসমেন্ট করা হত। ১৯৩৩ সালে কলকাতা পুরসভার বাইরের কিছু অংশ নিয়ে ফের একটি মানচিত্র তৈরি করা হয়। ১৯৫৪ সালে সেই মানচিত্রটি পরিবর্তন এবং পরিমার্জন করে তৈরি হয় রেভিনিউ ম্যাপ। পুর কর্তৃপক্ষ জানান, ১৯৯৭ সালে প্রথম কেন্দ্রীয় সরকারের একটি সংস্থার সঙ্গে যৌথ ভাবে ‘ডিজিটাল’ মানচিত্র তৈরির কাজ শুরু করলেও মাঝপথে তা আটকে যায়। প্রযুক্তির কারণে কিছু ত্রুটি থাকায় তৎকালীন পুর কর্তৃপক্ষ সেটি বাতিল করে ফের ২০০৪ সালে নতুন করে জিআইএস পদ্ধতিতে মানচিত্র তৈরি করা হয়। কিন্তু এ ক্ষেত্রে পুরনো স্মার্ট ম্যাপের সাহায্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

মানচিত্র তৈরি করা গেল না কেন?

পুরসভার বক্তব্য, মানচিত্র তৈরির সময়ে যে ধরনের তথ্য দরকার ছিল তা মেলেনি। এই প্রকল্প বাস্তবায়িত করতে বিভিন্ন সময়ে দরপত্রের জটিলতা থাকায় সেই প্রকল্পও বাতিল হয়ে গিয়েছিল। কলকাতা পুরসভার প্রাক্তন নগর স্থপতি দীপঙ্কর সিংহ বলেন, ‘‘জিআইএসের মাধ্যমে মানচিত্র তৈরি জরুরি। কিন্তু পুরসভার পুরনো ‘স্মার্ট ম্যাপ’ ও মানচিত্র বিশেষজ্ঞদের নিয়েই এই প্রকল্পের পরিকল্পনা করা উচিত। কারণ সেখানেই রয়েছে সংশ্লিষ্ট এলাকার প্রকৃত তথ্য।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

KMC GIS Geographic Information System
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE