Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

পাঁচ দিন বাবার মৃতদেহ আগলে ছেলে, বেহালা মনে করাচ্ছে রবিনসন স্ট্রিট

পুলিশ সূত্রে খবর, বেহালার পর্ণশ্রী থানা এলাকার ডঃ এম জি রোডের বাসিন্দা রবীন্দ্রনাথ ঘোষ যক্ষ্মায় আক্রান্ত হয়ে মারা যান পাঁচ দিন আগে, রবিবার।

প্রতীকী চিত্র

প্রতীকী চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ জানুয়ারি ২০২০ ১৯:২৫
Share: Save:

রবিনসন স্ট্রিটের কঙ্কাল কাণ্ডেরই পুনরাবৃত্তি যেন। মৃত বাবার পচাগলা দেহের সঙ্গে একই ঘরে পাঁচ দিন কাটালেন বেহালার এক মধ্যবয়স্ক ব্যক্তি অজিতকুমার ঘোষ। বাড়ি থেকে ঢিল ছোঁড়া দূরত্বে থাকতেন তাঁর ভাই। তিনি ঘুণাক্ষরেও টের পাননি কিছু। বৃহস্পতিবার সকালে ভাইয়ের বাড়ি গিয়ে বাবার মৃতদেহ দেখে হতভম্ভ হয়ে যান। পুলিশে খবর দেন। ওই দৃশ্য দেখে অবাক হয়ে যান দুঁদে পুলিশকর্তারাও।

পুলিশ সূত্রে খবর, বেহালার পর্ণশ্রী থানা এলাকার ডঃ এম জি রোডের বাসিন্দা রবীন্দ্রনাথ ঘোষ (৮৫) যক্ষ্মায় আক্রান্ত হয়ে মারা যান পাঁচ দিন আগে, রবিবার। বাবার মৃত্যুতে ভেঙে পড়েন তার ছোট ছেলে অজিতকুমার ঘোষ। কাউকে কিছু জানানো তো দূর, মৃতদেহ ঘরে রেখে স্বাভাবিক জীবনযাপনই করছিলেন অজিত।

ওই বৃদ্ধের বড় ছেলে অশোককুমার ঘোষ ওই একই পাড়ায় অন্য বাড়িতে থাকেন। এ দিন সকালে তিনি বাবার সঙ্গে দেখা করতে যান। অশোকবাবু জানান, সে সময়ে বাড়ি ছিলেন না তাঁর ভাই অজিত। বাড়িতে ঢোকার মুখে পচা গন্ধ পেয়ে সন্দেহ হয়। ঘরে ঢুকে দেখেন, বাবার পচাগলা দেহ পড়ে আছে। স্তম্ভিত অবস্থায় তিনি পর্ণশ্রী থানার পুলিশকে ফোনে সব জানান। পুলিশ এসে মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়।

পুলিশ সুত্রে খবর, অজিতবাবু মানসিক ভাবে সুস্থ নন। তাঁদের অনুমান, বাবাকে হারাতে চাননি তিনি। তাই তাঁর মৃতদেহ ঘরে রেখে দিয়েছিলেন অজিত। তিনি তেমন কিছু করতেনও না। অবসরপ্রাপ্ত বেসরকারি কর্মী বাবার সঞ্চয়েই চলত দু’জনের সংসার।

অজিতবাবুর কাণ্ড মনে করিয়ে দিচ্ছে পার্ক স্ট্রিটের পার্থ দে-র ঘটনা। ২০১৫-র ১০ জুন। রবিনসন স্ট্রিটের একটি বাড়ির শৌচাগার থেকে উদ্ধার হয়েছিল ৭৭ বছরের এক ব্যক্তির অগ্নিদগ্ধ দেহ। সেই বাড়িতে গিয়ে পুলিশ জানতে পারে, মৃত ব্যক্তির ছেলে তাঁর দিদির কঙ্কালের সঙ্গে মাসের পর মাস ওই বাড়িতে ছিলেন। দিদির কঙ্কালকে খেতেও দিতেন ভাই— পার্থ দে। ২০১৭ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি বাথরুমে অগ্নিদগ্ধ হয়ে মারা যান পার্থ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Death Partha Dey Behala
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE