Advertisement
০৭ মে ২০২৪
Crime

শ্বশুরবাড়িতে বধূর রহস্যমৃত্যু, নিগ্রহের অভিযোগ

রবিবার রাতে শ্বশুরবাড়ি থেকেই তাঁর দেহ উদ্ধার হয়। ঘটনায় সোমবার রাত পর্যন্ত কেউ গ্রেফতার হয়নি।

তিতলি বর(ডান দিকে)।

তিতলি বর(ডান দিকে)।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৩:৪৪
Share: Save:

এক গৃহবধূর অস্বাভাবিক মৃত্যু ঘিরে রহস্য তৈরি হয়েছে।

পুলিশ জানিয়েছে, তিতলি বর (২৩) নামে ওই তরুণীর পরিবারের তরফে তাঁর শ্বশুরবাড়ির বিরুদ্ধে বধূ নির্যাতনের অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। বেহালার পর্ণশ্রী থানা এলাকার বেচারাম চ্যাটার্জি রোডে থাকতেন ওই বধূ।

রবিবার রাতে শ্বশুরবাড়ি থেকেই তাঁর দেহ উদ্ধার হয়। ঘটনায় সোমবার রাত পর্যন্ত কেউ গ্রেফতার হয়নি। ওই তরুণীর শ্বশুরবাড়ির লোকজন বেপাত্তা বলে জানিয়েছে পুলিশ। তাদের খোঁজ চলছে।

পুলিশ জানায়, ২০১২ সালে মহেশতলা থানা এলাকার মালিপাড়ার বাসিন্দা তিতলির সঙ্গে পর্ণশ্রীর বেচারাম চ্যাটার্জি রোডের বাসিন্দা সোমনাথ বরের বিয়ে হয়। তাঁদের চার বছরের একটি মেয়ে এবং দেড় বছরের একটি ছেলে রয়েছে। তিতলির ভাই সোমনাথ হালদার বলেন, ‘‘রবিবার রাত আড়াইটে নাগাদ জামাইবাবু ফোন করে বলেন, দিদি আমগাছের ডালের সঙ্গে গলায় দড়ি বেঁধে আত্মহত্যা করেছে। ফোন পাওয়া মাত্র রাতেই দিদির বাড়িতে গিয়ে দেখি, দিদি ঘরের মেঝের উপরে অচৈতন্য অবস্থায় পড়ে রয়েছে।’’ সোমনাথের অভিযোগ, ‘‘দিদি অচৈতন্য অবস্থায় পড়ে থাকলেও পাশের ঘরে ওঁর শাশুড়ি ও ননদ দিদির দুই ছেলেমেয়েকে নিয়ে ঘুমোনোর ভান করছিল। জামাইবাবু নেশা করছিল। বাড়ির বাইরে দিদির শ্বশুর পায়চারি করছিল।’’

সোমনাথের অভিযোগ, ‘‘দিদিকে ওরা সবাই মিলে মেরে ফেলেছে। দিদি আমগাছের ডালের সঙ্গে গলায় দড়ি বেঁধে আত্মহত্যা করছে বলে জামাইবাবু দাবি করলেও তা মিথ্যা। কারণ সোমবার রাতে দিদির বাড়ি গিয়ে দেখি, সিলিং ফ্যানের সঙ্গে গামছা ঝুলছে।’’ রবিবার গভীর রাতে পর্ণশ্রী থানার পুলিশ তিতলিকে বিদ্যাসাগর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়।

দুই বোন, এক ভাইয়ের মধ্যে বড় তিতলি। কয়েক বছর আগে তার বাবা মারা গিয়েছেন। দিদির মৃত্যুর জন্য জামাইবাবু-সহ তার পরিবারকে দায়ী করছেন সোমনাথ। তাঁর অভিযোগ, ‘‘আগেও দিদিকে একাধিক বার মারধর করেছে ওরা। দিদি তেমন কিছু না বললেও বুঝতে পারতাম। জামাইবাবু এক বার মারধর করায় দিদি আমাদের বাড়ি চলে এসেছিল। পুলিশ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিক, এটাই চাই।’’ পুলিশ জানিয়েছে, মৃতার স্বামী সোমনাথ বর পেশায় রিকশাচালক। তিনি বেশির ভাগ সময়ই নেশাগ্রস্ত থাকতেন। এই নিয়ে স্ত্রীর সঙ্গে মাঝেমধ্যেই ঝামেলা হত। বেচারাম চ্যাটার্জি রোডে পাশাপাশি দু’টি টালির ঘরে তিতলি, তাঁর স্বামী, দুই ছেলেমেয়ে এবং শ্বশুরবাড়ির লোকজন থাকতেন। মৃতার ভাই সোমবার সকালে দিদির স্বামী, শ্বশুর, শাশুড়ি এবং ননদের বিরুদ্ধে বধূ নির্যাতনের মামলা দায়ের করেন। লালবাজারের এক কর্তা বলেন, ‘‘ঘটনার তদন্ত চলছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Crime Death Kolkata Police
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE