বাবার পানের দোকান আর এক টুকরো জমিই পরিবারের একমাত্র সম্বল। বাবার পাশে দাঁড়াতে, মায়ের চোখের জল মুছতে বদ্ধপরিকর কোয়েল গোস্বামী। এ বারের উচ্চ মাধ্যমিকে তাঁর প্রাপ্ত নম্বর ৪৯১, রাজ্যের মধ্যে আরও ১০ জনের সঙ্গে সপ্তম স্থানে কোয়েল।
জলপাইগুড়ির কচুয়া বোয়ালমারি হাই স্কুলের কলা বিভাগের ছাত্রী কোয়েলের প্রথম পছন্দ বই। নতুন জামা কিংবা সাজগোজের সৌখিনতা তাঁর করা হয়নি, বরং পরিবারের কথা ভেবে তিনি নিজের খুঁটি শক্ত করার দিকে বেশি নজর দিয়েছেন। তবে শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় থেকে শুরু করে সমরেশ মজুমদার, সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়, সত্যজিৎ রায়ের লেখা পড়তে ভালবাসেন। মন খারাপ হলে সঙ্গী হয় সঙ্গীত। গিটার শেখা শুরু করলেও মাঝপথে ছেড়ে দিতে হয়। তাই চাকরির পাওয়ার পর ফের গিটার শিখতে চান কোয়েল।
আরও পড়ুন:
কোয়েলের কথায়, “পরিবারের আর্থিক অস্বচ্ছলতার ছবিটা বদলাতে প্রথমে ভেবেছিলাম উচ্চ মাধ্যমিকের পরই চাকরি করব। কিন্তু বড়দের সঙ্গে আলোচনার পর বুঝলাম, নিজের খুঁটি শক্ত না থাকলে খুব বেশি পরিবর্তন আসবে না। তাই নিজের স্বপ্নপূরণ করার উপর আমি বেশি জোর দিতে চাই।”
তাঁর স্বপ্ন ইংরেজির প্রফেসর হওয়া। কোয়েলের মা বাসন্তি গোস্বামী জানিয়েছেন, কোনও বায়না শুনিনি কোনওদিন। শুধু বই-এর জন্য আবদার করেছে মেয়ে। তিনি আরও বলেন, “মেয়েটা আমার খুব কষ্ট করেছে। আশা ছিল যে ভাল রেজাল্ট করবে। নাম ঘোষণার পর ভগবানকে প্রণাম করেছি বারবার।” কোয়েলের বাবা অশোক গোস্বামীর বিশ্বাস, তাঁর মেয়ে আরও এগিয়ে যাবে।