একাদশ এবং দ্বাদশের বৃত্তিমূলক বিষয়ের পরীক্ষার নম্বর বিভাজনে পরিবর্তন করা হয়েছে। উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের তরফে জানানো হয়েছে, মোট ১০০ নম্বরের পরীক্ষা নেওয়া হবে। এর মধ্যে থিয়োরি পরীক্ষায় ৫০ নম্বর এবং প্র্যাকটিক্যাল পরীক্ষায় ৫০ নম্বর বরাদ্দ করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০১৩-তে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের অধীনে ৪ টি বৃত্তিমূলক বিষয়ে পড়ার সুযোগ ছিল। বর্তমানে মোট ১৬টি বিষয় নিয়ে একাদশ এবং দ্বাদশে পড়ানো হয়ে থাকে। এর মধ্যে রয়েছে আইটি, অটোমোবাইল, রিটেল, সিকিওরিটি, হেলথকেয়ার, ইলেকট্রনিক্স, প্লাম্বিং, কনস্ট্রাকশন, অ্যাপারেল, বিউটি অ্যান্ড ওয়েলনেস, অর্গানাইজ়ড রিটেলিং এবং ট্যুরিজ়ম ও হসপিটালিটির মতো বিষয়গুলি।
কিন্তু কেন হঠাৎ নম্বর বিভাজনে বদল আনা হল?
সেমিস্টার পদ্ধতিতে ৯(২) রেগুলেশন অনুযায়ী ছাত্র ছাত্রীদের বাংলা, ইংরেজি-সহ অন্য তিনটি বিষয়ে উত্তীর্ণ হতে হবে। ঐচ্ছিক বিষয় হিসাবে নেওয়া বৃত্তিমূলক বিষয়ের নম্বর ‘বেস্ট অফ ফাইভ’-এর অন্তর্ভুক্ত হবে না। নিয়মের রদবদল হওয়ায় পড়ুয়া এবং শিক্ষকদের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। তা ছাড়াও এই বিষয়গুলির পঠনপাঠন সংক্রান্ত কাজও পরিচালিত হয়ে থাকে বেসরকারি সংস্থার মাধ্যমে। সমস্যার সমাধান করতেই উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের নির্দেশে বৃত্তিমূলক বিষয়গুলিতে এ বার নম্বর বিভাজনে পরিবর্তন আনা হয়েছে।
আরও পড়ুন:
আগে কী ছিল?
২০২২-এ উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের তরফে নির্দেশিকা দেওয়া হয়, ২০২৩-২৫ শিক্ষাবর্ষ থেকে বৃত্তিমূলক বিষয়গুলি ‘ইলেক্টিভ’ বিষয় হিসাবে বেছে নিতে পারবে পড়ুয়ারা। যদিও ২০২৩-এর সেপ্টেম্বরে সেই নির্দেশ বাতিল করা হয়। জানানো হয়, শিক্ষার্থীরা শুধুমাত্র ঐচ্ছিক বিষয় হিসেবে বৃত্তিমূলক বিষয় বেছে নিতে পারবেন। উল্লেখ্য, এর আগে বৃত্তিমূলক বিষয়গুলিতে ৭০ নম্বর প্র্যাকটিক্যাল এবং ৩০ নম্বর থিয়োরির জন্য বরাদ্দ করা হয়েছিল।
তবে নম্বর বিভাজনের কথা উল্লেখ করলেও তার পাঠ্যক্রম এখনও প্রকাশিত হয়নি। পঠনপাঠনের জন্য পর্যাপ্ত বই-ও বহু পড়ুয়ার হাতে পৌঁছায়নি। বৃত্তিমূলক বিষয়ে এক এক বার এক এক রকম নির্দেশ আসাসয় বিভ্রান্ত হচ্ছেন একাদশ শ্রেণির পড়ুয়া এবং শিক্ষক-শিক্ষিকারা। তাঁদের দাবি, রেজিস্ট্রেশনে ঐচ্ছিক নাকি কম্পালসারি ইলেক্টিভ— কোন বিভাগে ওই বিষয় রাখবে, তা নিয়ে সংসদের নির্দেশিকায় স্পষ্ট কিছু উল্লেখ নেই।
পশ্চিমবঙ্গ এনএসকিউএফ শিক্ষক পরিবারের রাজ্য সম্পাদক শুভদীপ ভৌমিকের অভিযোগ, উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ হাতে কলমে শেখার বিষয়গুলি নিয়ে ছেলেখেলা করছে। জাতীয় এবং রাজ্য শিক্ষানীতিতে মেন স্ট্রিম এডুকেশনে বৃত্তিমূলক বিষয়গুলোতে জোর দেওয়ার কথা বললেও, বাস্তবে এই শিক্ষার প্রকৃত পরিকাঠামোই নেই। তিনি বলেন, “ছাত্রছাত্রীদের বঞ্চিত করা হচ্ছে। সংসদের সুস্পষ্ট নির্দেশিকা না এলে বিভ্রান্তি থেকেই যাচ্ছে। একাদশ শ্রেণিতে যাতে ছাত্রছাত্রীরা এই বিষয়গুলি কম্পালসারি ইলেক্টিভ বিষয় হিসাবে পড়তে পারে তার ব্যবস্থা করা প্রয়োজন। একই সঙ্গে স্কুলগুলিকে পর্যাপ্ত বই এবং হাতে কলমে শেখার জন্য ল্যাবের পরিকাঠামো তৈরি করে দিতে হবে।”