খাবারের সঙ্গে পেটের সম্পর্ক শুধুই কিন্তু পেট ভরানোর নয়। বরং স্বাস্থ্যের খেয়াল রাখতে হলে, কখন, কোনটি খাবেন সেই বিষয়ে সচেতনতা দরকার। পুষ্টির সঙ্গে সুস্থতার নিবিড় যোগ নিয়ে যতই আলাপ-আলোচনা বাড়ছে, ততই বদল হচ্ছে খাদ্যাভ্যাসে। সামান্য এক টুকরো চকোলেট কিংবা বিস্কুটেও পুষ্টিগুণ খুঁজছেন ক্রেতা, আর সেই চাহিদার কথা মাথায় রেখে বাজারে আসছে স্বাস্থ্যকর নানা খাবার। পুষ্টিগুণ বুঝেই খাবার কিনছেন, খাচ্ছেনও। কিন্তু ‘স্বাস্থ্যকর’ হিসাবে যেটি খাচ্ছেন, তা ততটাই স্বাস্থ্যকর কি?
গ্লুটেন মুক্ত খাবার: ইদানীং বাজারজাত নানা পণ্যের মোড়কে লেখা থাকছে ‘গ্লুটেন ফ্রি’। অর্থাৎ এতে গ্লুটেন নেই। পাস্তা থেকে আটা, পাউরুটি —প্যাকেটে ‘গ্লুটেন ফ্রি’ দেখে তবেই কিনছেন? গ্লুটেন না থাকলেই খাবার স্বাস্থ্যকর হবে, আর থাকলে হবে না এমন কিন্তু নয়। গমের আটা-সহ বিভিন্ন খাবারে প্রাকৃতিক ভাবে গ্লুটেন থাকে। কারও কারও গ্লুটেনে অ্যালার্জি থাকে বা গ্লুটেন সহ্য হয় না। যাঁদের তা সহ্য হয় না শুধু তাঁদের জন্যই গ্লুটেন ফ্রি খাবার। সকলকেই তা খেতে হবে, এমনটা নয়।
আরও পড়ুন:
এনার্জি বার: স্বাস্থ্যকর খেতে হবে। তাই দোকান থেকে এনার্জি বার বা প্রোটিন বার কিনছেন আর খাচ্ছেন? চিকিৎসক থেকে পুষ্টিবিদদের একাংশ বলছেন, এই বারেও অনেক সময় চিনি বা এমন অনেক উপাদান থাকছে যা শরীরের জন্য বিশেষ উপকারী নয়। স্বাদ এবং গন্ধের জন্য কৃত্রিম উপাদানের ব্যবহার হয় কোনও কোনও বারে। সুতরাং স্বাস্থ্যকর ভাবলেও, তা কতটা স্বাস্থ্যকর তা নিয়ে প্রশ্ন থাকে। বদলে বিভিন্ন রকম বাদাম খাওয়া যেতে পারে। শুকনো ছোলাও শরীরে প্রোটিনের চাহিদা পূরণ করে কোনও ক্ষতি ছাড়াই।
ফলের রস: ফলের রস ক্ষতিকর, তা তো হতেই পারে না। টাটকা ফলের রস পুষ্টিগুণে ভরপুর হলেও, বাজারচলতি কৌটোজাত বা প্যাকেটজাত ফলের রস নিয়ে সংশয় থাকেই। এতে অনেক সময় স্বাদের জন্য কৃত্রিম চিনি দেওয়া হয়। তা ছাড়া ফলের রস দীর্ঘ দিন ভাল রাখার জন্য প্রক্রিয়াজাত রাসায়নিকও ব্যবহার হয়। পুষ্টিবিদেরা বলেন, খেতে হলে টাটকা ফল খান। চাইলে রস খেতে পারেন। তবে সেটি টাটকা ফল থেকে বানিয়ে নিতে হবে।
সব্জির চিপ্স: চিরপরিচিত আলুর চিপ্সের বদলে স্বাস্থ্যরক্ষায় অনেকেই বেছে নিচ্ছেন সব্জির চিপ্স। কিন্তু দোকানের জিনিসগুলি কী ভাবে, কতটা তেলে তৈরি হচ্ছে জানা থাকছে না। চিপ্স ভাল রাখতে প্রক্রিয়াজাত রাসায়নিকের ব্যবহার হতেই পারে। সবচেয়ে ভাল হয় বাড়িতেই চিপ্স যদি বানিয়ে নেওয়া যায়। ছাঁকা তেলে ভাজলে সব্জির গুণ নষ্ট হবে। এয়ার ফ্রায়ারে অল্প তেলে তা বানালে কিছুটা হলেও পুষ্টিগুণ বজায় থাকবে।
ডায়েট সোডা: কার্বোনেটেড পানীয়ে প্রচুর চিনি থাকে। ক্যালোরির পরিমাণ অনেক। সেই কারণেই ডায়েট সোডা বেছে নিয়েছেন। এতেও কিন্তু কৃত্রিম শর্করার ব্যবহার হয়। আসলে প্যাকেটজাত খাবার ‘স্বাস্থ্যকর’ বলে বিক্রি করতে হলেও স্বাদের খেয়াল রাখতে হয়। সে কারণে এমন কোনও কোনও জিনিস মেশানো হয়, যা স্বাদ বাড়িয়ে দেয় কিন্তু স্বাস্থ্যকর উপযোগিতা থাকে না।