অফিস থেকে বাড়ি ফিরেই অনেকে সোফায় বসে মোবাইল ঘাঁটতে বসেন।একের পর এক রিল দেখে সময় পেরিয়ে যায়। আবার কেউ টিভি দেখেই ঘণ্টার পর ঘণ্টা কাটিয়ে দেন। এতে সময় কাটে ঠিকই, কিন্তু মনের চাপ কি আর কমে? সারাদিনের পরিশ্রমের পরে শারীরিক ও মানসিক যে ক্লান্তি তৈরি হয় তা মোবাইল ঘেঁটে বা টিভি দেখে দূর হয় না। বরং সমাজমাধ্যমের কিছু বিষয় মনকে আরও উত্তেজিত ও উদ্বিগ্ন করে তোলে। তার চেয়ে সন্ধ্যায় এমন কিছু করতে পারেন যাতে মানসিক চাপ, দুশ্চিন্তা কমবে। মন তো ভাল হবেই, শরীরও থাকবে চনমনে। পরদিনের কাজের উৎসাহও পাবেন।
সন্ধ্যার কোন কোন কাজে মন ভাল থাকবে?
হালকা স্ট্রেচিং বা মেডিটেশন
বাড়ি ফিরে সবচেয়ে আগে যে কাজটি করতে পারেন, তা হল হালকা কিছু ব্যায়াম। অনেকেই ভাববেন, খাটাখাটনি করে এসে ব্যায়াম করার ইচ্ছাই থাকবে না। তবে রোজ যদি ১৫ মিনিট করেও সময় বার করতে পারেন, তা হলে উপকারই হবে। স্ট্রেচিং, প্রাণায়ামের মতো ব্যায়াম ক্লান্তি দূর করবে, শরীর চাঙ্গা করে তুলবে নিমেষে। সেই সঙ্গে চোখ বুঝে কিছুটা সময়ে মেডিটেশন করে নিতে পারেন। এতে দিনভরের চিন্তা থেকে মুক্তি পাবেন।
গান শুনুন
গান বা সুরও কিন্তু আপনার অস্থির জীবনকে দিতে পারে শান্তির প্রলেপ। যেমন গান পছন্দ তেমনই শুনুন, সুর আপনাকে কখনওই নিরাশ করবে না। মন খারাপ লাগলে তা ভাল হয়ে যাবে।
আরও পড়ুন:
পছন্দের বই পড়ুন
বই পড়ার অভ্যাসে ভাটা পড়েছে অনেকেরই। এখন পড়ার চেয়ে ইউটিউবে ভিডিয়ো দেখা বা অডিয়ো স্টোরি শোনায় আগ্রহ বেশি। ভাল বিষয়বস্তু রয়েছে এমন ভিডিয়ো অবশ্যই দেখতে পারেন, তবে সেই সঙ্গে কিছুটা সময় বার করে পছন্দের কোনও বই পড়ুন। বই তো এখন ‘পিডিএফ ভার্সনে’ নেট দুনিয়ায় সদাই মিলছে। কিন্তু, বইয়ের যে একটা গন্ধ আছে, উত্তেজনা আছে, বই হাতে নিয়ে অনুভব করে পড়ার যে মজা, তা কম্পিউটার বা মোবাইল স্ক্রিনে পাওয়া যায় না। রোজ এই অভ্যাস রাখতে পারলে মানসিক ক্লান্তি অনেকটাই দূর হবে।
লেখালিখি
শেষ কবে হাতে চিঠি লিখে ডাকবাক্সে ফেলেছেন, এ প্রশ্ন করলে অনেকেই মাথা চুলকোবেন। কিছুদিন আগেও জীবনের পরতে পরতে জড়িয়ে ছিল এমন অনেক কিছু, আজ যা হারাতে বসেছে। লেখালিখির অভ্যাস তেমনই একটি। যাঁরা পেশাগত ভাবে লেখার কাজে জড়িত তাঁদের কথা আলাদা, তবে রোজের দিনচর্চা, আনন্দের মুহূর্ত ক’জনই বা লিখে রাখেন! ডায়েরি লেখার অভ্যাসও হাতেগোনা মানুষেরই রয়েছে। বাসে বা ট্রেনে উঠলেই দেখা যায়, বেশির ভাগের ঘাড় নিচু। দু’হাতের বুড়ো আঙুলই ঘোরাফেরা করছে স্মার্টফোনের পর্দায়! কাগজ-কলম সহযোগে লেখার অভ্যাসই হারিয়ে গিয়েছে। সেই অভ্যাস ফিরিয়ে আনতে পারলে মানসিক চাপ বিদায় নেবে অল্প দিনেই।
চ্যাট নয়, কথা বলুন
মোবাইলে একটি ছোট্ট টেক্সট, তাতেই কথা বলা হয়ে গেল। ফোন করে গল্প করা বা মুখোমুখি বসে আড্ডা দেওয়ার তাগিদ অনেকটাই কমেছে। যতটা সময় গল্প-আড্ডায় যাবে, ততটা সময় মোবাইলে রিল দেখে কাটাতেই পছন্দ করছেন অনেকে। তবে মনোবিদেরা বলছেন, অবসর সময়টা মোবাইল দূরে রাখুন। লোকজনের সঙ্গে কথা বলুন, মেলামেশা করুন, তাতেই মন ভাল থাকবে।