ঘুম থেকে উঠে কারও দিন শুরু হয় করলার রস দিয়ে। কেউ খান নিমের রসও। প্রচণ্ড তেতো— কিন্তু উপকারিতার কথা ভেবে তা দিয়েই সকাল শুরু করেন অনেকে। ছোটদেরকেও অনেক সময় অভিভাবকেরা এমন রস খাওয়ান।
করলা এবং নিম— হেঁশেলের দু’টি অন্যতম উপকরণই শরীরের জন্য উপকারী। লিভার ভাল রাখতে, শর্করা বশে রাখতে দুইয়ের মধ্যে বেছে নেবেন কোনটি?
আরও পড়ুন:
করলার রস
শর্করার মাত্রা: সকালে এক গ্লাস করলার রস খেলে অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে থাকে রক্তে শর্করার মাত্রা।এতে থাকে পলিপেপটাইড পি, যা অনেকটা ইনসুলিন হরমোনের মতো কাজ করে।
দূষিত পদার্থ বার করে দেয়: শরীর থেকে দূষিত পদার্থও বার করে দেয় করলার রস। সকালে এক গ্লাস করলার রস খেলে রক্ত পরিষ্কার হয়।
হজমশক্তি বৃদ্ধি করে: করলার রস হজমশক্তিও বাড়ায়। রোজ সকালে করলার রস খেলে পেট পরিষ্কার থাকে। খিদে বাড়ে। বাড়ে বিপাকহার।
শরীর ভাল রাখে: বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গিয়েছে, করলার রসে এমন কিছু উপাদান রয়েছে, যেগুলি ক্যানসার প্রতিরোধক হিসাবে কাজ করে।
স্বাস্থ্য ভাল রাখে: হৃদ্যন্ত্রের স্বাস্থ্যের জন্যও তা ভাল। তা ছাড়া ভিটামিন সি, এ, অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট থাকে এতে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির পাশাপাশি অক্সডেটিভ স্ট্রেস দূর করতেও সাহায্য করে।
নিমের রস
নিমের ভেষজ গুণের সংখ্যা একাধিক। নিমে শতাধিক সক্রিয় উপাদান রয়েছে যেগুলি অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট এবং প্রদাহনাশক হিসেবে অত্যন্ত কার্যকর।
লিভার ও কিডনি ভাল রাখে: নিমে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট রয়েছে, যা কিডনি ও লিভার ভাল রাখতে সাহায্য করে। রক্ত পরিশুদ্ধ করতেও নিমের রস খাওয়ার চল রয়েছে।
অ্যান্টি-ব্যাক্টেরিয়াল: নিমে অ্যান্টি-ব্যাক্টেরিয়াল এবং প্রদাহনাশক উপাদান রয়েছে। সংক্রমণ দূর করতে সাহায্য করে এটি।
শর্করা বশে রাখে: নিমে থাকা উপাদান রক্তে শর্করা বশে রাখতেও সাহায্য করে।
লিভারের জন্য কোনটি ভাল?
করলায় রয়েছে ফ্ল্যাভোনয়েডস এবং ফেনোলিক যৌগ— যা শক্তিশালী অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট। শরীরের পক্ষে ক্ষতিকর ফ্রি র্যাডিক্যালের সঙ্গে মোকাবিলা করে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমাতে তা অত্যন্ত কার্যকর। ‘জার্নাল অফ ক্লিনিক্যাল বায়োকেমিস্ট্রি অ্যান্ড নিউট্রিশন’-এ প্রকাশিত গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে, করলার রস লিভারের অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমাতে এবং দূষিত পদার্থ বার করে দিতে সাহায্য করে।
নিমে রয়েছে ফ্ল্যাভোনয়েডস, অ্যালকালয়েডস-এর মতো উপাদান। অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট রয়েছে এতেও। লিভারের স্বাস্থ্য ভাল রাখে নিমও। অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট বার্ধক্য প্রতিরোধ করে ত্বক ভাল রাখতে সাহায্য করে।
ফলে শরীর ভাল রাখতে নিম বা করলার রস, যেটা সহজে মিলছে সেটাই খাওয়া যাবে। তবে উপকারী বলেই তা কিন্তু অতিরিক্ত মাত্রায় খাওয়া চলে না। শরীর সুস্থ থাকতে যে কোনও খাবারই পরিমিত খাওয়া দরকার পরামর্শ দেন পুষ্টিবিদেরা।