Advertisement
E-Paper

পরীক্ষার চাপে দৃষ্টিশক্তি হারাচ্ছে সন্তান! ভারতেই ঘটেছে ওই ঘটনা, কেন এমন হতেই পারে?

প্রাথমিক পরীক্ষায় চোখের কোনও সমস্যাই ধরা পড়েনি। তাই তাঁরা আরও গভীরে গিয়ে পরীক্ষা করেন। তাতেই বেরোয় রোগের বীজ। চিকিৎসক জানাচ্ছেন, তাঁদের সন্দেহ হয় ছেলেটি হয়তো ম্যালিঙ্গারিং-এ আক্রান্ত।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১৪ অক্টোবর ২০২৫ ১২:৩৭

গ্রাফিক— আনন্দবাজার ডট কম।

এক অদ্ভুত সমস্যা নিয়ে হাসপাতালে এমার্জেন্সিতে ভর্তি করানো হল এক কিশোরকে। বয়স ১৬। আপাতদৃষ্টিতে শারীরিক অসুস্থতা চোখে পড়ে না। অথচ আচমকাই চোখে কিছু দেখতে পাচ্ছে না সে। দু’টি চোখেরই এক অবস্থা!

চিকিৎসকেরা প্রথমে একটু বিভ্রান্ত ছিলেন। তাই বিষয়টি বোঝার জন্য নানা পরীক্ষানিরীক্ষা চলল। শেষে দেখা গেল, এই হঠাৎ কিছু দেখতে না পাওয়ার কারণ একটাই— পরীক্ষার চাপ!

এই ঘটনার সাক্ষী দিল্লির এক চক্ষুচিকিৎসক আশিস মারকান ঘটনাটির বিবরণ দিয়েছেন তাঁর সমাজমাধ্যমের হ্যান্ডলে। তিনি বলছেন, ‘‘ছেলেটির পরীক্ষার তখনও দু’এক দিন বাকি। তাকে নিয়ে হাসপাতালের এমার্জেন্সিতে হাজির হয়েছিলেন তাঁর মা। প্রচণ্ড ভয় পেয়েছিলেন মহিলা। কারণ তাঁর ১৬ বছরের সন্তান আলো ছাড়া আর কিছুই দেখতে পাচ্ছিল না।’’

প্রাথমিক পরীক্ষায় চোখের কোনও সমস্যাই ধরা পড়েনি। চোখের রোগ শনাক্ত করার জন্য শুরুতে চিকিৎসকেরা যে সমস্ত পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেন, যেমন চোখের মণির গঠন, তারারন্ধ্রের গঠন, চোখের প্রতিক্রিয়া দেখা, সবই ঠিকঠাক ছিল। কিন্তু যেহেতু তাতে সমস্যার সমাধান মিলছিল না, তাই তাঁরা আরও গভীরে গিয়ে পরীক্ষা করেন। তাতেই বেরোয় রোগের বীজ। চিকিৎসক বলছেন, ‘‘নানা পরীক্ষার পরে আমাদের সন্দেহ হয়, ছেলেটি হয়তো ম্যালিঙ্গারিং-এ আক্রান্ত।’’

ম্যালিঙ্গারিং আসলে কী?

ম্যালিঙ্গারিং কোনও চোখের রোগ নয়। কোনও শারীরিক সমস্যাও নয়। এটি আদতে একটি আচরণ। চিকিৎসক বলছেন, ‘‘খুব স্পষ্ট ভাবে বললে এটি হল অবচেতনে রোগের মিথ্যাচার করে কোনও বিষয়ে সুবিধা পাওয়ার চেষ্টার একটি ধরন। আর সেই আচরণের ইতিহাসও বহু পুরনো। ‘ডায়াগনস্টিক অ্যান্ড স্ট্যাটিস্টিক্যাল ম্যানুয়াল অফ মেন্টাল ডিজ়িজ়’-এর পঞ্চম সংস্করণে এর উল্লেখও করা হয়েছে। সেই সঙ্গে এ-ও বলা হয়েছে যে, এটি মানসিক সমস্যাও নয়। বরং মনোযোগ আকর্ষণের বা কোনও অপ্রিয় পরিস্থিতি থেকে ছাড় পাওয়ার একটি ইচ্ছাকৃত পদ্ধতি মাত্র।’’ তবে কি ছেলেটি পরীক্ষায় না বসার জন্য অভিনয় করছিল? চিকিৎসক জানাচ্ছেন, এ ক্ষেত্রে বিষয়টি ইচ্ছাকৃত ছিল না।

পরীক্ষার চাপে কি সত্যিই দৃষ্টিশক্তি হারাতে পারে?

ম্যালিঙ্গারিং কি না সন্দেহ হওয়ার পরে ওই কিশোরের মনস্তাত্ত্বিক বিশ্লেষণও করানো হয়। তাতেই জানা যায়, ছেলেটির ক্ষেত্রে সত্যিই পরীক্ষার চাপের কারণে ‘ফাংশনাল ভিশন লস’ হয়েছিল। ওই চিকিৎসক জানাচ্ছেন, অত্যধিক মানসিক চাপে মস্তিষ্ক অদ্ভুত ভাবে প্রতিক্রিয়া দিতে পারে, যা কখনও সখনও বাঁধাধরা হিসাবের বাইরেও যেতে পারে। এ ক্ষেত্রেও তেমনই কিছু হয়েছিল। তবে নানা ধরনের কাউন্সেলিং এবং চিকিৎসা পদ্ধতি চালানোর দু’সপ্তাহ পরে ওই ছেলেটির দৃষ্টিশক্তি আবার স্বাভাবিক হয়।

Exam Stress Vision Loss at Young Age
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy