Advertisement
E-Paper

জলশূন্যতা কমাতে ডাবের জল না কি ‘ওআরএস’, কোন পানীয় বেশি ভাল?

শরীর থেকে জল বেরিয়ে গেলে সমস্যা হতে পারে নানা রকম। শুরুতেই সচেতন না হলে ঘটতে পারে বিপদ। জলশূন্যতা মেটাতে ডাবের জল না কি ওআরএস, কোনটি খাওয়া ভাল?

শেষ আপডেট: ১২ অক্টোবর ২০২৫ ১৯:০১
জলের ঘাটতি মেটাতে ডাবের জল না কি ওআরএস— কোনটি ভাল?

জলের ঘাটতি মেটাতে ডাবের জল না কি ওআরএস— কোনটি ভাল? ছবি: এআই সহায়তায় প্রণীত।

ভরা শরতেও বৃষ্টি কমছে না। ফল, ঘরে ঘরে জ্বর, সর্দিকাশি, তারই সঙ্গে পেটখারাপ। আবার রোদ যখন উঠছে তা বেশ চড়া। পেটখারাপ হোক বা রোদে বেশি ঘোরাঘুরি— জলশূন্যতা হতে পারে যখন তখন। কখনও অতিরিক্ত শ্রম, শরীরচর্চা করে জল ঠিকমতো না খেলে শরীরের জলের অভাব ঘটতে পারে। শরীরে জলের মাত্রা কম গেলে ব্যক্তি শুধু নেতিয়ে পড়েন না, ক্ষেত্রবিশেষে তা প্রাণঘাতীও হতে পারে।

চিকিৎসকেরা জানান, শরীরে জলশূন্যতা দেখা দিলে নষ্ট হয় ইলক্ট্রোলাইটের ভারসাম্য। শুধু জল নয়, শরীর থেকে বেরিয়ে যায় জরুরি কিছু খনিজও। সোডিয়াম, পটাশিয়াম, ক্লোরাইড, ক্যালশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম ইত্যাদি খনিজ পদার্থগুলির ভারসাম্য বজায় রাখা সুস্থ থাকার পক্ষে খুবই জরুরি। তার ফলেই মাথা ধরা, ক্লান্তির মতো উপসর্গ দেখা যায়। শারীরবৃত্তীয় নানা কার্যকলাপও থমকে যেতে পারে শরীরে এই খনিজগুলির অভাব হলে।

মুম্বইয়ের পুষ্টিবিদ খুশমা শাহ এক সাক্ষাৎকারে জানাচ্ছেন, ডাবের জল হল প্রাকৃতিক ইলেক্ট্রোলাইট পানীয়। এতে পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম এবং সোডিয়াম রয়েছে। ডাবের জল শরীরের জন্য অবশ্যই উপকারী। অল্প একটু জলাভাব হলে, ডাবের জল ভাল। যেমন রোদে অনেক ক্ষণ হাঁটাহাটি, শরীরচর্চায় প্রচুর ঘাম হলে বা টানা উপোসের ফলে শরীরে জল এবং খনিজের অভাব হলে ডাবের জল অত্যন্ত উপযোগী। এতে থাকা প্রাকৃতিক শর্করা দ্রুত শরীরে শক্তির জোগান দেয়। ডাবের জলে মেলে অ্যান্টি-অক্সিড্যান্টও, যা অক্সিডেটিভ স্ট্রেস থেকে শরীরকে সুরক্ষা দেয়।

তবে জলশূন্যতার আরও কারণ থাকতে পারে। ক্রমাগত বমি, আন্ত্রিকের ফলে শরীরে থেকে দ্রুত প্রবল পরিমাণে জল এবং খনিজ বেরিয়ে যেতে শুরু করে। এমন পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্য দরকার হয় ওআরএস। ওআরএস-এর পুরো কথা ‘ওরাল রিহাইড্রেশন সলিউশন’। আন্ত্রিক বা বমি হলে শরীর থেকে প্রয়োজনীয় লবণ, জল বেরিয়ে যেতে থাকে। তখন শরীরে প্রয়োজনীয় জল ও খনিজ লবণের ভারসাম্য বজায় রাখতে রোগীকে ওআরএস খাওয়ানো হয়। এটি বিশেষ ভাবে তৈরি। যাতে দ্রুত শরীরে শর্করা, ইলেক্ট্রোলাইটের ভারসাম্য রক্ষিত হয়। এতে পটাশিয়াম, সোডিয়াম নির্দিষ্ট মাত্রায় মেশানো থাকে। প্রচণ্ড গরমে রোদে দীর্ঘ ক্ষণ ঘোরাঘুরি বা শরীরচর্চার পরেও এটি খাওয়া যায়। তবে মাপ জানা জরুরি।

কতটা খাওয়া দরকার?

শরীরে যাতে জলের ঘাটতি না হয়, সে জন্য দিনে এক গ্লাস ডাবের জল খাওয়া যেতে পারে। উপোসের দিনে বা বাইরে ঘোরাঘুরি হলে দু’গ্লাস খাওয়া যায়। তবে এক সঙ্গে দু'গ্লাস না খাওয়াই উচিত।

আন্ত্রিক, বমি হলে দিনে প্রয়োজন মতো ২০০-৪০০ মিলিলিটার ওআরএস খাওয়া যেতে পারে। তবে তা একবারে নয়। বমি বা মলত্যাগের পর শরীর ঝিমিয়ে যেতে শুরু করলে অল্প অল্প করে ওআরএস খেতে হবে। শিশুদের ক্ষেত্রে চামচে করে তা খাওয়ানো যেতে পারে।

পুষ্টিবিদেরা বলছেন, ডাবের জল শরীর ভাল রাখতে এমনিও খাওয়া যায়। জলশূন্যতা অল্প হলে ডাবের জলেই সমাধান হতে পারে। বিশেষত, উপোসের পর ডাবের জল খাওয়া ভাল। তবে সমস্যা গুরুতর হলে, জল বেশি মাত্রায় বেরিয়ে যেতে শুরু করলে ওআরএস-ই ভরসা।

তবে এ ছাড়াও নুন, চিনি দিয়ে দইয়ের পাতলা ঘোল, পাতিলেবুর শরবতও শরীরে জলের ঘাটতি দূর করে। পুষ্টিবিদের পরামর্শ, শরীরের প্রয়োজন অনুযায়ী ইলেক্ট্রোলাইট পানীয় বেছে নিতে হবে।

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy