জাঙ্ক ফুডের প্রতি আসক্তি কমানো সহজ নয়। টানা সাত দিন কড়া ডায়েটে থাকার পরে এক-আধটা বার্গার বা পিৎজ়া খেতে মন চাইবেই। নিদেনপক্ষে সসেজ, সালামি বা চিকেন নাগেটস দেখলে জিভে জল আসবে। আর বাইরের রোল-চাউমিন পেলে তো কথাই নেই! ইউটিউব খুললেই খাবারের বিজ্ঞাপনের ছড়াছড়ি। ফেসবুকের নানা রিলে ফুড ভ্লগারদের দাপাদাপি। জাঙ্ক ফুডের হরেক রকম বিজ্ঞাপনে ভরে রয়েছে সমাজমাধ্যমের পাতাও। সেখানে লোভনীয় সব খাবারের ছবি, বিপুল ছাড়ের আকর্ষণ। এই সব দেখে জাঙ্ক খাবারের প্রতি আকর্ষণ আরও বেড়ে চলেছে। তবে হার্ভার্ড মেডিক্যাল স্কুলের গবেষকেরা বলছেন, এই আকর্ষণ শুধু দেখে নয়, এর নেপথ্যে রোজের কিছু অভ্যাসও দায়ী। কেন বার বার এই সব খাবার খেতে মন চায়, তার কিছু কারণ আছে।
বাইরের খাবারের প্রতি এই যে লোভ, খেয়ে ফেলার ইচ্ছা, তার জন্য কিন্তু সকালের জলখাবার খাওয়ার অভ্যাসটিই দায়ী। শুনতে অবাক লাগলেও সত্যি। হার্ভার্ডের গবেষকেরা দাবি করেছেন, সকালের জলখাবারে যাঁরা লুচি, পরোটা বা বেশি চিনি দেওয়া ব্রেকফাস্ট সিরিয়াল, প্যাকেটজাত ফলের রস, সাদা পাউরুটি বেশি খান, তাঁদেরই জাঙ্ক ফুড খাওয়ার ইচ্ছা বেশি হয়। প্রাতরাশে খুব বেশি কার্বোহাইড্রেট খেলেও বাইরের খাবার খাওয়ার ইচ্ছা বেশি হয়। গবেষকদের মত, সকালের জলখাবারে প্রোটিন জাতীয় খাবার বেশি খেলে এই আসক্তি কমে যাবে। শুধু তা-ই নয়, দিনভর ‘বিঞ্জ ইটিং’-এর প্রবণতাও কমবে।
আরও পড়ুন:
জাঙ্ক ফুডে আসক্তি কমাতে হলে প্রাতরাশে কী খাবেন?
সকালের জলখাবারে ২০-৩০ গ্রাম প্রোটিন রাখাই জরুরি, এমনটাই মত গবেষকদের। দু’টি ডিম খেলে ১২ গ্রাম প্রোটিন পাওয়া যাবে, যা চাহিদা পূরণ করতে পারবে না। কাজেই এর সঙ্গে আরও কিছু খেতেই হবে। তবে বয়স, উচ্চতা, ওজন, কী ধরনের কাজ করেন, কতটা পরিশ্রম করেন, এই সব কিছুর উপরেই নির্ভর করবে ঠিক কতটা প্রোটিন জরুরি। যাঁরা দু’টি করে ডিমসেদ্ধ খাচ্ছেন, তাঁরা সঙ্গে দু’টি রাগি বা বাজরার রুটি ও এক বাটি ফল রাখুন। এতে প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট ও ফাইবারের চাহিদা মিটে যাবে।
আরও পড়ুন:
নিরামিষ খেলে, মুগডালের ইডলি বা দোসা, পনিরের পুর ভরা দোসা খাওয়া যেতে পারে। অতিরিক্ত মিষ্টি বা মধু মেশানো ব্রেকফার্স্ট সিরিয়াল খাবেন না। বদলে ঘরে পাতা টকদই, ওট্স, ডালিয়া বা কিনোয়া ও নানা রকম বাদাম এবং বীজ খেতে পারেন। সকালের জলখাবার যত ভারী ও প্রোটিন সমৃদ্ধ হবে, ততই সারা দিনের খাই খাই বাতিক কমবে। পেটভরা অবস্থাতেও পছন্দের খাবার দেখে খেয়ে ফেলার প্রবণতা কমবে।