শুধু ওজন ঝরানোর জন্যই নয়, চিনি খাওয়া স্বাস্থ্যের পক্ষে আরও নানা ভাবে ক্ষতিকর।
যাঁরা মিষ্টি খেতে ভালবাসেন, তাঁদের পক্ষে চট করে মিষ্টি ছেড়ে দেওয়া সহজ নয়। তা-ও যদি কেউ মনের জোরে মিষ্টি-চকোলেট-আইসক্রিম ছেড়েও দেন, তা হলেও চায়ে চিনি দেওয়া বা সকাল-বিকেল নানা রকমারি কেক বিস্কুট খেয়ে ফেলা বন্ধ করতে পারেন না। হঠাৎ হঠাৎই তাঁদের চিনির জন্য মন ছটফট করে। অনেক সময়ে দীর্ঘ সময় ধরে মিষ্টি না খেলে মন বিষণ্ণও হয়ে পড়ে। তখন মনে হয় এক টুকরো চকোলেট খেয়েই ফেলি! কিন্তু বোঝার আগেই হয়তো গোটা চকোলেটটাই শেষ করে ফেলেন। এ ভাবেই ওজন কমানোও হয় না। আবার শরীরে নানা রকম রোগও বাসা বাঁধে।
অতিমারিতে সকলেই কমবেশি স্বাস্থ্য সচেতন হয়ে উঠেছেন। কিন্তু অনেক সমই স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন করার সবচেয়ে বড় শত্রু হয়ে ওঠে এই চিনিই। মনে রাখতে হবে মিষ্টি খাওয়ার ইচ্ছে মূলত মনের খিদে, শরীরের নয়। খিদে পেলে মিষ্টি খেতে ইচ্ছে সে ভাবে হয় না, বরং আমাদের মন ভাল করার জন্যেই মূলত মিষ্টি খাওয়ার ইচ্ছে জাগে। তাই একটু সতর্ক থাকলেই চিনি বাদ দিতে পারবেন রোজকার খাদ্যতালিকা থেকে। কী করে জেনে নিন।
১। মিষ্টি খাওয়ার ইচ্ছে হলেই এক গ্লাস জল খেয়ে নিতে পারেন। অনেক সময়ই তা ভালই কাজ দেয়।
২। নিয়মিত মাল্টিভিটামিন খেলে শরীরে জরুরি পুষ্টিগুণের ঘাটতি হবে না। তা হলে মিষ্টি খাওয়ার প্রবণতাও কমে যাবে।
৩। বেশ অনেকটা গরম জলে স্নান করতে পারেন ৫-৭ মিনিট। গবেষণা বলছে, স্নানের পরও আর মিষ্টি খাওয়ার ইচ্ছে থাকে না।
৪। কম খেয়ে থাকবেন না। খিদের মুখে মিষ্টি খাওয়া আরও বেশি বিপজ্জনক। বেশি খেয়ে ফেলার প্রবণতা তৈরি হয়। তাই দুপুরের বা রাতের খাবার এতটা কম খাবেন না যে পরে খিদে পেয়ে যায়।
৫। টুকটাক খিদের মুখেই সকলে বেশি মিষ্টি বা মিষ্টি জাতীয় জিনিস খেতে পছন্দ করেন। তাই আগে থেকে কিছু স্বাস্থ্যকর খাবার তৈরি করে রান্নাঘরে বা অফিসের ব্যাগে রেখে দিন।
৬। প্রোটিন বেশি করে খান। মাছ, মাংস বা ডিম খেলে অনেক ক্ষণ পেট ভরা থাকে। খিদেও কম পায়। খিদের মুখে ডিম সেদ্ধ খেতে পারেন। তা হলে মিষ্টি জিনিস খাওয়ার প্রবণতা দূর হয়।
৭। ফল খান মিষ্টি খাওয়ার ইচ্ছে হলে। স্ট্রবেরি, কমলালেবু, আঙুর বা মোসাম্বির মতো মিষ্টি ফল খেলে আর চিনি খাওয়ারও ইচ্ছে করবে না। পিনাট বাটার দিয়ে কলা খেতে পারেন।
৮। পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুম দরকার শরীরের। না হলেই মিষ্টি খাওয়ার প্রবণতা বেড়ে যায়।
৯। মিষ্টি খাওয়ার ইচ্ছে যেহেতু মনের খিদে, তাই অনেক সময়ে মনকে একটু ভুলিয়ে রাখলে সেই ইচ্ছেটাও চলে যায়। কোনও বন্ধুর সঙ্গে কিছু ক্ষণ গল্প করে নিতে পারেন। কোনও পডকাস্ট শুনতে পারেন। বা ইউটিউবে অন্য কোনও ভিডিয়ো দেখেও মন ভুলিয়ে রাখতে পারেন।
১০। মিষ্টি খেলে আমাদের শরীরে ডোপামিন তৈরি হয়। সেই কারণেই মনও ভাল হয়। তবে এটা তৈরি করার আরও একটি উপায় রয়েছে— শরীরচর্চা। মিষ্টি খাওয়ার ইচ্ছে হলে একটু দৌড়ে আসতে পারেন। কিংবা ব্রিস্ক ওয়াক বা জোরে হাঁটাও কাজ দেয়। এতে আপনার স্বাস্থ্যও ভাল থাকবে, আবার মিষ্টি খাওয়ার ইচ্ছেটাও চলে যাবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy