এই ঠান্ডায় সকাল সকাল শরীরচর্চা করতে মোটেই ইচ্ছে করে না। অথচ পিঠ, কোমরের ব্যথায় একেবারে নাজেহাল অবস্থা। সামান্য কোমর নিচু করে মাটি স্পর্শ করতে গেলেই তা টের পাওয়া যায়। সারা দিন কম্পিউটার, ল্যাপটপে ঘাড় গুঁজে কাজ করে মেরুদণ্ডেরও দফারফা। চিকিৎসকেরা বলছেন, স্পাইনাল কর্ড বা শিরদাঁড়ায় সাধারণত যে ধরনের সমস্যা দেখা যায়, তার মূলে রয়েছে ফ্লেক্সিবিলিটি বা নমনীয়তার অভাব। তার জন্য অবশ্যই শারীরিক কসরত জরুরি। সারা দিনের মধ্যে অন্তত আধ ঘণ্টা সময় বার করে যদি ব্যাঘ্রাসন অভ্যাস করা যায় তা হলে এই ধরনের সমস্যা অনেকটা নিয়ন্ত্রণে থাকে।
সংস্কৃতে ‘ব্যাঘ্র’ মানে বাঘ। গভীর ঘুম থেকে উঠে বাঘ যে ভাবে আড়মোড়া ভাঙে, এই আসন করার সময়ে দেহের ভঙ্গি অনেকটা তেমনই হয়।
আরও পড়ুন:
কী ভাবে করবেন?
· প্রথমে ম্যাটের ওপর হাঁটু গেড়ে বসুন। দুই হাত কাঁধ বরাবর সোজা করে মাটিতে রাখুন। পিঠ থাকবে মাটির সমান্তরালে। সামনের দিকে তাকিয়ে মুখ ও মাথা সোজা রাখুন পিঠের সঙ্গে সরলরেখায়। এটি শুরুর অবস্থান।
· ডান পা উপরের দিকে তুলুন। হাঁটু থেকে ভাঁজ করে পা মাথার কাছে আনার চেষ্টা করতে হবে। পায়ের বুড়ো আঙুল মাথার দিকে থাকবে। এই অবস্থানে শিরদাঁড়া খানিকটা নীচের দিকে নেমে আসবে।
· এ বার ধীরে ধীরে শ্বাস টানতে টানতে ডান পা নীচে নামিয়ে হাঁটু ভাঁজ করে বুকের কাছে আনার চেষ্টা করুন। একই সঙ্গে মাথা হাঁটুর দিকে নামিয়ে আনুন। কিন্তু কোনও অবস্থাতেই পা বা হাঁটু যেন মাটিতে ঠেকে না যায়। পিঠ উটের কুঁজের মতো উঁচু থাকবে।
· এই ভাবে এক রাউন্ড সম্পূর্ণ হবে। আস্তে আস্তে শুরুর অবস্থানে ফিরে আসুন। ডান পা দিয়ে এই আসন অভ্যাস করুন ৩–৫ রাউন্ড। একই ভাবে বাঁ পা প্রথমে মাথার ওপরে ও পরে ভাঁজ করে সামনের দিকে এনে অভ্যাস করতে হবে ৩–৫ রাউন্ড।
আরও পড়ুন:
কেন করবেন?
ব্যাঘ্রাসন অভ্যাস করলে শিরদাঁড়ার নমনীয়তা বৃদ্ধি পায়। পদযুগল সঞ্চালনের সময়ে পিঠের স্নায়ু উজ্জীবিত হয়। এই আসন নিয়মিত অভ্যাস করলে সায়টিক স্নায়ুর ব্যথায় আরাম মেলে। এ ছাড়া নিতম্ব ও ঊরুর বাড়তি মেদ ঝরাতে সাহায্য করে এই আসন।
সতর্কতা:
হাঁটুর ব্যথা, অনিয়ন্ত্রিত উচ্চ রক্তচাপ, মাথা ঘোরা, ঘাড় ও শিরদাঁড়ার সমস্যা থাকলে আসনটি অভ্যাস করার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।