কিডনি হোক বা পিত্তথলি— পাথর হয় অনেকেরই। আগে যা মাঝেমধ্যে শোনা যেত, এখন তা শোনা যায় আকছারই। চিকিৎসকেরা বলেন, অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন, অস্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া, জল কম খাওয়ার অভ্যাসই রয়েছে এর নেপথ্যে।
কিডনি হল শরীরের এক গুরুত্বপূর্ণ প্রত্যঙ্গ, যা ছাঁকনির কাজ করে। শরীর থেকে দূষিত পদার্থ বার করে দেয় মূত্রের মাধ্যমে। মূত্রের বেশ কিছু অপ্রয়োজনীয় উপাদান, খনিজ জমে পাথর তৈরি হয়। ক্যালশিয়াম অক্সালেট, ক্যালশিয়াম ফসফেট, ইউরিক অ্যাসিড থেকেই তৈরি হয় পাথর। তবে পিত্তথলির পাথর তৈরি হয় কোলেস্টেরল, বিলিরুবিন জমে। অতিরিক্ত ফ্যাটযুক্ত খাবার নিয়মিত খেলে পিত্তথলিতে পাথর হওয়ার ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়।
আরও পড়ুন:
কিডনি হোক বা পিত্তথলি— পাথর হলে কষ্ট কম নয়। ব্যথা-যন্ত্রণা তো আছেই। কারও কারও বমি, অস্বস্তিও হয়। চিকিৎসকেরা বলেন, কিডনিতে এক বার পাথর হলে তাঁর বার বার পাথর হতে পারে। জীবনধারায় বদল না আনলে, এমন প্রবণতা ঠেকানো দুষ্কর। কী ভাবে কিডনি এবং পিত্তথলিতে পাথর হওয়ার ঝুঁকি এড়াবেন?
জল: কিডনিতে পাথর হওয়ার প্রবণতা এড়ানোর প্রথম শর্তই হল জল খাওয়া। জল খেলে শরীরে দূষিত পদার্থ জমতে পারে না। প্রস্রাবের মাধ্যমে বেরিয়ে যায়। চিকিৎসকেরা বলেন, দিনে অন্তত ৩-৪ লিটার জল খাওয়া দরকার।
ওজন: আচমকা ওজন বেড়ে যাওয়া আবার দ্রুত ওজন কমানোর ফলেও কখনও কখনও পাথর হওয়ার ঝুঁকি বাড়তে পারে। কারণ, দুই ক্ষেত্রেই শরীরে হঠাৎ করে হরমোনের হেরফের হতে পারে। তার ফলে গল ব্লাডারে পাথর হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দেয়। সেই কারণে নিয়মিত শরীরচর্চা খুব জরুরি।
খাবার বাদ না দেওয়া: অনেকেই ঠিক করে প্রাতরাশ সারেন না। কেউ আবার খেলেও অস্বাস্থ্যকর, অতিরিক্ত ফ্যাট জাতীয় খাবার বেছে নেন। দীর্ঘ সময় না খেয়ে থাকলে যকৃতে কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়তে পারে। তার ফলে, পিত্তথলিতে পাথর জমার ঝুঁকি বেড়ে যায়।
সঠিক খাদ্যাভ্যাস: কিডনিতে এক বার পাথর জমলে অক্সালেট রয়েছে, এমন খাবার পরিমিত পরিমাণে খাওয়া দরকার। খাদ্যতালিকায় রাখা দরকার বিভিন্ন রকম ফল, সব্জি। লেবু জাতীয় ফল খুবই ভাল। টাটকা সব্জি খাওয়া উচিত। তবে বেশি নুন এবং চিনি জাতীয় খাবার, উচ্চ মাত্রায় অক্সালেট রয়েছে, এমন খাবার যেমন পালংশাক, বাদাম ইত্যাদি মাত্রাতিরিক্ত খাওয়া ঠিক নয়।
পিত্তথলিতে পাথর হওয়ার প্রবণতা কমাতে ফ্যাট ছাড়া প্রোটিন, ফাইবার যুক্ত খাবার, স্বাস্থ্যকর ফ্যাট পাতে রাখা দরকার। মাছ, মাংস, ডিম, টাটকা শাকসব্জি খেতে হবে। পাশাপাশি রিফাইন্ড কার্বোহাইড্রেট (ময়দা, চিনি), প্রক্রিয়াজাত মাংস, অতিরিক্ত ফ্যাট জাতীয় খাবার বাদ না দিলেই বিপদ।