Advertisement
E-Paper

প্যান্ডেলে দীর্ঘ ক্ষণ দাঁড়িয়েও হাঁটু টনটন করবে না, বাতের ব্যথাবেদনা নিয়েও ঠাকুর দেখতে পারেন

পুজোয় ভিড় ঠেলে ঠাকুরও দেখতে পারবেন, আবার হেঁটে হেঁটে এ প্যান্ডেল থেকে ও প্যান্ডেল চষে বেড়াতেও পারবেন। কেবল কয়েকটি বিষয় মাথায় রাখতে হবে।

বুদ্ধদেব চট্টোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ০১ অক্টোবর ২০২৫ ১৫:০২
If you follow a few rules, you can still enjoy visiting the pandal even with arthritis pain

পায়ের ব্যাথা নিয়েও ঠাকুর দেখতে পারেন, উপায় বলে দিলেন চিকিৎসক। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

ষষ্ঠীতে দক্ষিণ কলকাতার চেতলা অগ্রণী, সপ্তমীতে মহম্মদ আলি পার্ক কিংবা অষ্টমীতে উত্তর কলকাতার অলিগলি ঘুরে ঠাকুর দেখার পরিকল্পনা না হলে কি আর বাঙালির দুর্গাপুজো জমে! পুজোর সময়ে শহরের এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্ত চষে ফেলতে মন চায়। পুজোর সাজ থেকে খাওয়াদাওয়া, ঠাকুর দেখা— ক’টা দিন অফিস, সংসার, হেঁশেল সব কিছু থেকে ছুটি নিয়ে আনন্দ করার ইচ্ছায় বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে একটিই ব্যাপার। বাতের ব্যথা। বয়স ত্রিশ হোক বা ষাট, হাঁটুর ব্যথায় কাবু এখন অনেকেই। কিছু ক্ষণ শুয়ে থাকার পর উঠতে গেলে ব্যথা, বসে থেকে দাঁড়াতে গেলে ব্যথা, সিঁড়ি ভাঙতে গেলেও টনটনিয়ে ওঠে হাঁটু। পুজো প্যান্ডেলে দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে থাকার যন্ত্রণা সইতে হবে ভেবে, অনেকেই পিছিয়ে যাচ্ছেন। বিশেষ করে কেউ হাঁটুতে অস্ত্রোপচারের পরে হিমশিম খাচ্ছেন, কারও উঠতে-বসতে গেলে পায়ের পাতা থেকে হাঁটু অবধি ঝনঝনিয়ে উঠছে। তাই বলে কি পুজোর আনন্দ মাটি হবে?

একেবারেই নয়। পুজোয় ভিড় ঠেলে ঠাকুরও দেখতে পারবেন আবার হেঁটে হেঁটে এ প্যান্ডেল থেকে ও প্যান্ডেল চষে বেড়াতেও পারবেন। কেবল কয়েকটি বিষয় মাথায় রাখতে হবে। হাঁটুতে যাঁদের অস্ত্রোপচার হয়েছে তাঁরা ভেবেই বসে আছেন যে, হেঁটে হেঁটে ঠাকুর দেখতে পারবেন না। তা কিন্তু একেবারেই নয়। বরং হাঁটুতে অস্ত্রোপচার বা হাঁটু প্রতিস্থাপন হলে ব্যথা কম হবে। তুলনায় আর্থ্রাইটিসের ব্যথা বেশি ভোগাবে। সে ক্ষেত্রে কিছু নিয়ম মানতেই হবে।

অনেকেই জিজ্ঞাসা করেন, কয়েক দিনের জন্য ব্যথানাশক ওষুধ খেয়ে কি কাজ চালানো যাবে? তা করা ঠিক নয়। এর অন্য পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আছে। তার চেয়ে রোজ কিছুটা করে পায়ের ব্যায়াম করুন। তাতেই ব্যথা নিয়ন্ত্রণে থাকবে। একটি রবারের টিউব নিন। সাইকেলের টায়ারে যেমন থাকে। দোকানে পেয়ে যাবেন। চেয়ারের পায়ার নীচে টিউবটি গলিয়ে দিন। পিঠ সোজা রেখে চেয়ারে বসুন। টিউবে দুই পা গলান। পায়ের পাতার উপর টিউবটি থাকবে। এ বার টিউবে গলানো অবস্থাতেই দুই পা একসঙ্গে সামনের দিকে তুলুন আর নামান। ৩ সেটে ১২ বার করে করুন। এতে পায়ের জোর বাড়বে।

পুজোয় যদি হেঁটে ঠাকুর দেখতে চান, তা হলে এখন থেকে খাওয়াদাওয়া ও বিশ্রামে নজর দিন। ভাজাভুজি, জাঙ্ক ফুড বন্ধ করতে হবে। পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিতে হবে। পা মুড়ে মাটিতে বসা, একটানা বসে টিভি দেখা বা কম্পিউটারে কাজ করা চলবে না। বার বার সিঁড়ি চড়া ও নামার কারণে হাঁটুর ব্যথা বাড়তে পারে। কী ধরনের জুতো পরছেন, তা-ও জরুরি। সরু হিল বা প্ল্যাটফর্ম হিলও চলবে না। এক দিন আনন্দ করবেন বলে হিল পরলেই কিন্তু বিপদ। তার থেকে আরামদায়ক জুতো পরুন, ব্যথা কম ভোগাবে।

একটানা কখনওই ঘণ্টার পর ঘণ্টা ঠাকুর দেখবেন না। মাঝে বিরতি নিন। খুব ভিড়ের মধ্যে অনেক ক্ষণ লাইন দিয়ে ঠাকুর দেখা থেকে বিরত থাকুন। অনেক প্যান্ডেলেই বয়স্কদের বসার জায়গা করা হয়। সেখানে কিছু ক্ষণ বিশ্রাম নিন। ঘণ্টা দুয়েক হাঁটাহাঁটি করে বাড়িতে এসে বরফজলে ১৫ মিনিট পা ডুবিয়ে বসুন। পেশির ক্লান্তি দূর হবে। ব্যথা যদি বাড়াবাড়ি পর্যায়ে পৌঁছয়, তা হলে প্যারাসিটামলের সঙ্গে ট্রামাডোল ওষুধের কম্বিনেশন করে খেতে পারেন, এতে কাজ হবে। খুব বেশি ব্যথার জন্য অ্যাসিক্লোফেনাক ও সেরাটিওপোপটাইডেজ়ের কম্বিনেশন খেলে উপকার হবে। মনে রাখবেন, বাতের ব্যথা নিরাময় হয় না, একে নিয়ন্ত্রণে রাখতে হয়। আর জীবনযাপনে সংযমই সেই নিয়ন্ত্রণের উপায়।

Arthritis Problem Knee Pain Puja Special 2025
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy