ক্লান্ত শরীর বিছানায় এলিয়ে দিলেই নেমে আসে ঘুম। ঘরে আলো জ্বলছে কি না, খাওয়া হল কি না— সেই হুঁশও থাকে না অনেকের। এমন ঘুমের জন্য যে কথা শুনতে হয় না তা নয়, তবু এমন ঘুম ভাল, বলবেন যাঁরা অনিদ্রার শিকার, তাঁরাই।
আরও পড়ুন:
ঘুম যদি না হয়, ক্লান্তি, গা ম্যাজম্যাজে ভাব তো থাকেই, নিয়মিত ঘুমের ঘাটতি শরীরে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে, বলেন চিকিৎসকেরা। কিন্তু ঘুম যাঁদের আসে না, তাঁরা কী করবেন?
তরুণ প্রজন্মের অনেকেরই বক্তব্য, রাতে কিছুতেই দু’চোখের পাতা এক হয় না, যত ঘুম সবটাই আসে ভোররাতে। সকালে উঠতে অসুবিধা হয়। তবে এই সমস্যার সমাধানে সহজ তিন পন্থার কথা বলছেন নেটপ্রভাবী আমেরিকান চিকিৎসক ভ্যাসিলি এলিওপোলুস। সমাজমাধ্যমে প্রয়োজনীয় নানা বিষয়ে সহজ পরামর্শ দেন তিনি। ভ্যাসিলি বলছেন, শোয়ার সময় তিন অভ্যাস বদলানো প্রয়োজন।
ঘরের আবহ আরামদায়ক
ঘরের পরিবেশ অবশ্যই আরামদায়ক হওয়া প্রয়োজন। বেশি গরম যেমন কষ্টকর, তেমনই অতিরিক্ত ঠান্ডাতেও ঘুমের ব্যঘাত হতে পারে। ঘরে এসি থাকলে ১৮-২৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে তাপমাত্রা রাখা যেতে পারে। যাঁর যেমন তাপমাত্রায় আরাম হয়, তেমনটাই রাখতে হবে। হালকা ঠান্ডায় পাতলা চাদর গায়ে জড়িয়ে নিলে আরামে ঘুম এসে যাবে।
নীল আলোর বদলে লাল
ঘরের নীল আলোটি বদলে লাল করতে বলছেন চিকিৎসক। কারণ, নীল আলো থাকলে শরীর মনে করে, এটি দিন। সে কারণে ঘুমোতে যাওয়ার অন্তত আধ ঘণ্টা আগে ঘরে মৃদু লালচে আলো জ্বালিয়ে রাখা যেতে পারে। এতে শরীরের কাছে নির্দেশ পৌঁছবে, রাত হয়েছে, ঘুমোনো প্রয়োজন।
নাক দিয়ে শ্বাস
অনেকেরই অভ্যাস থাকে নাকের বদলে মুখ খুলে হাঁ করে শ্বাস নেওয়া। সর্দি হলে বিষয়টি আলাদা। কিন্তু ভাল ঘুমের জন্য নাক দিয়ে শ্বাস নেওয়া এবং প্রশ্বাস ছাড়ার অভ্যাসটি জরুরি। প্রথমে সতর্ক ভাবে সেই কাজ করা যেতে পারে। হাঁ করে ঘুমোলে দ্রুত গলা শুকিয়ে যায়, হৃৎস্পন্দনও কখনও বেশি হয় যায়। এতে ঘুমের সমস্যা হয়।
ঘুমের ধরন
কেউ বিছানায় গা এলিয়ে দিলেই গভীর ঘুমে তলিয়ে যান না। প্রত্যেক রাতে ঘুমোনোর সময়ে ৫-৬টি স্লিপ সাইক্ল সম্পূর্ণ হয়। এর মধ্যে রেম (আরইএম অর্থাৎ র্যাপিড আই মুভমেন্ট) ও এনআরইএম অর্থাৎ নন-র্যাপিড আই মুভমেন্টের ভাগ রয়েছে। ঘুমের প্রথম দিকে ধীরে ধীরে শ্বাস, হৃৎস্পন্দন ধীর গতিতে হতে শুরু করে। মস্তিষ্কের কাজও শ্লথ হয়। ধীরে ধীরে গভীর ঘুম নেমে আসে।
চিকিৎসকেরা বলেন, এক জন মানুষের প্রত্যেক দিন ছয় থেকে আট ঘণ্টা ঘুম দরকার। ঘুমের প্রধান কাজ হল, শরীরের ক্ষতিগ্রস্ত কোষগুলি পুনরুজ্জীবিত করা। ঘুমের সঙ্গে হরমোনের ভারসাম্য, হার্টের ভাল থাকা-সহ অনেক বিষয় জড়িয়ে থাকে।
একই সঙ্গে চিকিৎসকেরা সতর্ক করছেন, ঘুমের সমস্যার প্রধান কারণ মোবাইল। শুয়ে পড়ার অন্তত আধ ঘণ্টা আগে থেকে মোবাইল সরিয়ে রাখা খুব জরুরি। রাতের খাওয়া একটু হালকা এবং সহজপাচ্য হলেও ঘুমে ব্যাঘাত ঘটবে না।