সময়ের সঙ্গে শরীর ফিট রাখতে বা ওজন কমাতে নানা রকমের ডায়েট চর্চার কেন্দ্রে চলে আসে। যেমন এই মুহূর্তে সমাজমাধ্যমে ‘ওয়ান মিল আ ডে’ (ওএমএডি বা ‘ওম্যাড’) ঘিরে কৌতূহল দানা বেঁধেছে। অর্থাৎ এই ডায়েট অনুসরণ করলে, ব্যক্তি দিনে মাত্র এক বার খাবার খাবেন। সম্প্রতি, ওজন কমানোর জন্য বলিউড প্রযোজক কর্ণ জোহরকে নিয়ে কৌতূহল দেখা দিয়েছে। ইন্ডাস্ট্রির অন্দরের খবর, কর্ণ এই পদ্ধতিতেই তাঁর ওজন কমিয়েছেন। অন্য দিকে, শাহরুখ খানও নাকি নিজেকে ফিট রাখতে দিনে এক বারের বেশি খাবার খান না। কিন্তু এই ডায়েট কি সকলের জন্য উপযুক্ত?
চিকিৎসকদের একাংশের মতে, ‘ওম্যাড’ আসলে ‘ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং’-এর একটি ধরন। ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিংয়ের ক্ষেত্রে দিনের একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই ব্যক্তিকে খাবার খাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়। অন্য দিকে ‘ওম্যাড’-এর ক্ষেত্রে দিনে কেবলমাত্র এক বার খাবার খাওয়ার নিয়ম। দ্রুত ওজন কমাতে দু’রকম ডায়েট পরিকল্পনাই উপকারী। ‘ওম্যাড’-এর ক্ষেত্রে এক ঘণ্টার মধ্যে প্রয়োজনীয় খাবার খেয়ে নিতে হবে। দিনের বাকি সময় পানীয় চলতে পারে।
আরও পড়ুন:
কাদের ক্ষেত্রে এই ডায়েট কার্যকর
উপবাস করলে দেহ তার প্রয়োজনীয় ক্যালোরি শরীরে জমা মেদ থেকে সংগ্রহ করে। জানা যাচ্ছে, যাঁদের স্থূলত্বের সমস্যা রয়েছে, তাঁদের ক্ষেত্রে ‘ওম্যাড’ খুবই কার্যকর। দিনে এক বার খেতে হয় বলে, সারা দিনের ক্যালোরি মাপা বা খাবারের পরিকল্পনার জটিলতা থাকে না। কী কী খেতে হবে, তা নিয়েও জটিলতা থাকে না বলে এই ডায়েট অনুসরণ করা সহজ। এই ধরনের ডায়েটে যেহেতু এক বার খাবার খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়, সে ক্ষেত্রে পুষ্টিবিদেরা জানিয়েছেন, ওই একটি খাবারে যেন বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি উপাদান উপস্থিত থাকে, সে দিকে খেয়াল রাখা উচিত।
‘ওম্যাড’ কাদের ক্ষেত্রে বিপজ্জনক
চিকিৎসকদের মতে, দীর্ঘ সময় ধরে এই ধরনের ডায়েট অনুসরণ করলে শরীরে পুষ্টির অভাব দেখা দিতে পারে। তার ফলে নানা রোগ সৃষ্টি হতে পারে। শরীরে কোনও দীর্ঘকালীন রোগ থাকলে এই ধরনের ডায়েটে ঝুঁকি বাড়ে। উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবিটিস জাতীয় রোগে আক্রান্তদের ক্ষেত্রেও দীর্ঘ সময় উপবাস করে থাকা উচিত নয়। ‘ওম্যাড’ থেকে পেশির ঘনত্ব কমে যেতে পারে। অনেক সময় দিনের একটা বড় সময় পেট খালি রাখার জন্য মেজাজ খিটখিটে হয়ে যেতে পারে। চিকিৎসকদের একাংশ জানিয়েছেন, অনেক সময়েই মানুষ এই ধরনের ডায়েট মাঝপথে ছেড়ে দেন।
সুতরাং, ‘ওম্যাড’ অনুসরণ করার আগে জানতে হবে, কাদের ক্ষেত্রে এই ধরনের ডায়েটের পরিকল্পনা প্রযোজ্য। ওজন কমাতে এই ধরনের ডায়েট অনুসরণ করতে চাইলে কৌশলমাফিক এগোনো উচিত। তার আগে প্রয়োজন কোনও পুষ্টিবিদের সঙ্গে পরামর্শ করা।