কেউ বলবেন, ওজন কমানো কঠিন নয়। আবার, কারও কাছে তা যেমন কঠিন, তেমনই বিরক্তিকর। কারণ, মেদ ঝরাতে গেলে দু’টি শর্ত জরুরি। এক বাড়তি ক্যালোরি খরচ করতে হবে। দুই খেতে হবে মেপে, বেছে নিতে হবে পুষ্টিকর খাবার।
কারও কারও ধারণা, পুষ্টিকর খাবার সুস্বাদু নয়। তা ছাড়া, দিনের পর দিন পছন্দের খাবার খেতে না পারাও এক সময় ক্লান্তিকর হয়ে ওঠে।তবে পুষ্টিবিদেরা বলছেন, বিশেষ কষ্ট না করেও এ ক্ষেত্রে ‘কেষ্ট’ মিলতে পারে।
পছন্দের খাবার বাদ দিতে হবে না। শুধু লাগাম টানতে হবে পরিমাণে। বদলাতে হবে উপকরণ। আর স্বাস্থ্যকর অভ্যাস তৈরি হলেই বাকি কাজটি হয়ে যাবে। রুটি, ভাত— যেগুলি ভাল লাগে, সে সব খেয়েই গলবে মেদ।
ভাত: দিনের শেষে ভাত না খেলে অনেকেরই স্বস্তি হয় না। তবে সাদা ভাতে মূলত ক্যালোরি মেলে, পুষ্টিগুণ থাকে না। বদলে ব্রাউন রাইস, ব্ল্যাক রাইস, জেসমিন রাইস, পারবয়েলড রাইস খাওয়া যেতে পারে। ব্রাউন বা পারবয়েলড রাইসে বাড়তি কিছুটা ফাইবার মেলে। এই ধরনের চালের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স মধ্যম মানের। অর্থাৎ খেলেও খুব দ্রুত শর্করার মাত্রা বৃদ্ধি পায় না। পুষ্টিবিদেরা বলেন, ভাত খাওয়ায় সমস্যা নেই, পরিমাণ এবং তার সঙ্গে কী খাওয়া হচ্ছে তা জরুরি। ক্যালোরি এবং পুষ্টির অঙ্ক ঠিক থাকলেই হল।
রুটি: ময়দা পুরোপুরি বাদ দেওয়াই ভাল। বদলে গমের আটা, জোয়ার, বাজরা, রাগির আটা— খাওয়া যেতে পারেন। গমের আটার সঙ্গে বাজরা বা রাগির আটা খানিক মিশিয়ে রুটি করলেও হবে। এতে ফাইবার এবং পুষ্টির মাত্রা বৃদ্ধি পাবে।
সিরিয়াল: মুজ়লি, বাজারচলতি সিরিয়াল অনেকেই প্রাতরাশে রাখেন। এগুলি স্বাস্থ্যকর হলেও, এতে কৃত্রিম চিনি থাকে। পুষ্টিবিদেরা বলছেন, ভাল হয় যদি ওট্স প্রাতরাশে রাখা যায়। কিনোয়া, ওট্স এগুলি সকালের খাবারে জুড়ে নেওয়া যায়।
কিশমিশ,খেজুর: চিনির বদলে কৃত্রিম চিনি বরং প্রাকৃতিক মিষ্টত্বেই ভরসা করতে বলছেন পুষ্টিবিদেরা। অনেকে চিনির বদলে গুড় খান। এতে ক্যালোরি নিয়ন্ত্রণ করা যায় না বা বিশেষ লাভ হয় না। চা-কফিতে চিনি বাদ দেওয়া ভাল। দুধ, স্মুদি খেতে হলে বা চাটনি খেতে হলে, চিনি বাদ দিয়ে খেজুর, কিশমিশ যোগ করা যায়। প্রয়োজনে একটু বেশি দেওয়া যেতে পারে মিষ্টত্ব আনতে।
চাটনি: এয়ার ফ্রায়ারে নাম মাত্র তেলে তৈরি ভাজাভুজি খাচ্ছেন। এর সঙ্গে সস্ খেলেই সমস্যা। কারণ এতে চিনি তো বটেই, প্রক্রিয়াজাত রাসায়নিক ব্যবহার হয় অনেকসময়। বদলে বাড়িতে তৈরি কাসুন্দি, ধনেপাতার চাটনি, বাদামের চাটনি, টম্যাটোর চাটনি খাওয়া যেতে পারে।