Advertisement
E-Paper

দামেও সস্তা, পুষ্টিতেও ভরপুর, দিনে ৩টি ডিম খেলে কী হবে? কী বলছেন পুষ্টিবিদেরা?

সোম হোক বা মঙ্গল, রোজই ডিম খাচ্ছেন। কিন্তু ক’টা করে? দিনে তিনটি করে ডিম কি প্রোটিনের চাহিদা মেটাতে সক্ষম?

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২১ জুলাই ২০২৫ ১৪:২৪
দিনে তিনটি ডিম খেলে  কী হবে?

দিনে তিনটি ডিম খেলে কী হবে? ছবি: সংগৃহীত।

‘সানডে হো ইয়া মনডে, রোজ খাও আন্ডে’। এক সময় বিজ্ঞাপনি প্রচারের জনপ্রিয় স্লোগান ছিল এটাই। ‘ন্যাশনাল এগ কো-অর্ডিনেশন কমিটি’-র বিজ্ঞাপনটি তৈরি হয়েছিল ডিম খাওয়ায় উৎসাহ বৃদ্ধির জন্য। চিকিৎসক থেকে পুষ্টিবিদেরাও একই কথা বলেন।

একটি ডিম থেকে শক্তি মেলে ৭৮ ক্যালোরি। এতে প্রোটিন থাকে ৬.৩ গ্রাম, ফ্যাট ৫.৩ গ্রাম। এ ছাড়াও এতে মেলে স্বাস্থ্যকর ফ্যাট। ভিটামিন বি১২, ভিটামিন এ, ফসফরাস, সেলিনিয়াম-সহ একাধিক খনিজ। ডিমকে তাই সস্তায় পুষ্টিকর বলা চলে। কিন্তু রোজ যে ডিম খাবেন, ক’টা করে? একটা, দুটো, তিনটে, না কি তার বেশি? এমন অনেকেই আছেন, যাঁরা দিনের শুরুটা ডিমের পোচ দিয়ে করলেন, দুপুরে ভাতের পাতে ডিম খাওয়া হল, আবার রাতে গিয়েও ডিম। তা ছাড়া অনেকেই ডিমের কারি, ভাত হলে একসঙ্গে দু'টি ডিম খান। তাই সারা দিনে তিনটি ডিম খাওয়া মোটেই অস্বাভাবিক বিষয় নয়।

তিনটি ডিম খেলে কী হয় শরীরে?

পুষ্টিগুণের জন্যই ডিমের কদর। তার উপর মাছ, মাংসের তুলনায় তা সস্তাও। সেই কারণে, প্রতি দিনই ডিম খাওয়া যায়, বলছেন পুষ্টিবিদ শম্পা চক্রবর্তী। তাঁর কথায়, ‘‘যাঁরা দিনে ঘণ্টাখানেক সাঁতার কাটেন, জিমে যান, দিনভর যথেষ্ট দৌড়াদৌড়ি করেন, কসরত করে ঘাম ঝরান, তাঁরা দিনে তিনটে ডিম খেতেই পারেন। তবে এক বারে না খেয়ে দিনের বিভিন্ন সময় একটা করে খাওয়াই ভাল। কিন্তু যাঁদের এমন পরিশ্রম হয় না তাঁরা কিন্তু এক দিনে তিনটি ডিম খেলে শরীরের ক্ষতি হতে পারে।’’ মুম্বইয়ের একটি হাসপাতালের পুষ্টিবিদ প্রতীক্ষা কদম বলছেন, ‘‘ডিমে রয়েছে নয় রকমের প্রয়োজনীয় অ্যামাইনো অ্যাসিড, যা পেশি গঠনের জন্য অত্যন্ত জরুরি। এতে মেলে কোলাইন, যা মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য খুব জরুরি। এতে থাকা লিউটেইন দৃষ্টিশক্তির জন্য ভাল।’’

এত পুষ্টিগুণ থাকা সত্ত্বেও একসঙ্গে তিনটি ডিম খাওয়া সকলের জন্য ভাল নয়, বলছেন আর এক পুষ্টিবিদ কণিকা মলহোত্র। কারণ, একটি ডিমে ১৮৬ মিলিগ্রামের কোলেস্টেরল মেলে। বিশেষত, যাঁদের ওজন বেশি, হার্টের সমস্যা রয়েছে, তাঁদের জন্য দিনে তিনটি ডিম খাওয়া মোটেও ঠিক নয়। শম্পার পরামর্শ, উচ্চ কোলেস্টরেলর সমস্যা থাকলে এক দিন অন্তর একটি করে ডিম খাওয়া ভাল।

কতগুলি ডিম দিনে খাওয়া দরকার?

শিশু থেকে বয়স্ক— সকলেই ডিম খেতে পারেন। বিশেষত বয়স্ক মানুষ, যাঁরা মাংস খান না বা মাছ খেতে পছন্দ করেন না, তাঁরা একটি ডিম খেলে শরীর অনেকটাই প্রয়োজনীয় পুষ্টি পাবে। তবে শম্পা বলছেন, এক বছরের কম বয়সি শিশুদের ডিমের কুসুম দেওয়া যেতে পারে। সাদাটা খাওয়াতে বারণ করা হয়, কারণ ডিমের এই অংশটি থেকে শিশুদের অ্যালার্জির ঝুঁকি থাকে। তবে এক বছরের পর থেকে ডিমের দুটো অংশই খাওয়ানো যেতে পারে। নিয়মিত একটি ডিম খাওয়াই যথেষ্ট। তবে শরীরচর্চা বেশি হলে দিনে দু’টি খাওয়া যেতে পারে।

প্রোটিনের চাহিদা পূরণে তিনটি ডিম কি যথেষ্ট?

তিনটি ডিমে ১৮-২১ গ্রামের মতো প্রোটিন মেলে। শরীরচর্চার পর বা যাঁদের কায়িক শ্রম বেশি হয়, শুধু এইটুকু প্রোটিন তাঁদের জন্য যথেষ্ট নয়। তা ছাড়া শুধু ডিম নয়, শরীরের জন্য অন্য খাবারেরও প্রয়োজনীয়তা থাকে। তাই শুধু ডিম খেয়ে শরীরের প্রোটিনের চাহিদাপূরণ সমর্থন করেন না পুষ্টিবিদেরাও। ডিমের ভিতরে থাকা ‘অ্যাভিডিন’ নামের গ্লাইকোপ্রোটিন শরীরের ভিতরে বায়োটিন শোষণে বাধা দেয়। বায়োটিন শরীরের খুব প্রয়োজনীয় উপাদান। চুল ভাল রাখতে ও ত্বক-নখের গঠনে সাহায্য করে এটি। বরং তাঁদের পরামর্শ, পেশাদার কারও সাহায্য নিয়ে দৈনন্দিন ডায়েট ঠিক করা দরকার। একই সঙ্গে তাঁরা মনে করাচ্ছেন, ডিমের গুণাগুণ পেতে হলে সেটি সেদ্ধ করে খাওয়া দরকার। বেশি তেলে অমলেট করলে, স্বাদ বাড়বে ঠিকই, কিন্তু গুণ কমে যাবে।

Egg Meal Egg Health Tips
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy