শরীর ও মনের যত্ন রাখতে যোগাসনের তুলনা নেই। ও দিকে, ওজন ঝরানো থেকে শরীরকে সক্রিয় রাখার জন্য নিয়মিত হাঁটাহাঁটি করলে অনেক উপকারিতা মেলে। কিন্তু কখনও এই দুয়ের যুগলবন্দির কথা শুনেছেন? হাঁটা ও যোগাসনকে একজোট করে নয়া অনুশীলন আবিষ্কার!
সাধারণ যোগাসন এবং হাঁটার থেকে এটি কী ভাবে আলাদা?
১. ম্যাট বা মাদুরের উপর বসে যোগাসন অভ্যাস করা হয়। অন্য দিকে, হাঁটা ও যোগাসনের এই যুগলবন্দিতে একসঙ্গে একাগ্রতা এবং সক্রিয়তার অনুশীলন সম্ভব।
২. প্রতিটি পা ফেলার সঙ্গে নিঃশ্বাস-প্রশ্বাসের ছন্দ মেলানোই এর মূলমন্ত্র।
৩. দেহের সঙ্গে মাটির সংযোগ রেখে হাঁটাচলা করার অভ্যাস তৈরি করা হয়।
৪. পার্ক, বাগান, সমুদ্র সৈকতে, এমনকি নিজের ঘরেও এটি অনুশীলন করা সম্ভব।
৫. প্রতি পদক্ষেপের সঙ্গে, প্রতি মুহূর্তের সঙ্গে একাত্ম হতে শেখায় এই আসন।
৬. প্রতিটি পা ফেলতে ফেলতে সেই মুহূর্তটির দিকেই কেবল নজর দিতে হবে। অর্থাৎ, এই আসনের সঙ্গে ওতপ্রোত ভাবে জড়িয়ে রয়েছে ‘মাইন্ডফুলনেস’-এর অনুশীলন।
ছবি: সংগৃহীত।
উপকারিতা
মন এবং শরীরে হাঁটা-যোগাসনের এই অনুশীলন অনেক ভাবে প্রভাব ফেলে। সারা শরীরে রক্ত সঞ্চালন উন্নত করে, পেশিকে মজবুত করে, গাঁটে ব্যথা সারানোর পাশাপাশি তার গতিশীলতা বাড়ায়। আর মনে? মননশীলতা, একাগ্রতা, শ্বাস-প্রশ্বাসের বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি করে বলে উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠার সমস্যা কমাতে সাহায্য করে। মনকে শান্ত করতে পারে এই ধরনের অভ্যাস। একসঙ্গেই শরীর এবং মনের যত্ন রাখতে পারে হাঁটা-যোগাসনের এই অনুশীলন।
কী ভাবে শুরু করবেন?
লক্ষ্য স্থির করতে হবে: শুরু করার আগে, কিছু ক্ষণ চুপ করে ভাবুন আপনি কী চাইছেন। মনকে শান্ত করতে, সেই মুহূর্তটিতে মনোযোগ দিতে, না কি অন্য কিছু।
প্রতি পদক্ষেপের সঙ্গে নিঃশ্বাস নিতে হবে: প্রতিটি পা ফেলার সঙ্গে সঙ্গে নিঃশ্বাস নেওয়া ও ছাড়াকে মিলিয়ে দিন। ধরা যাক, আপনি চারটি পা ফেলার সঙ্গে ধীরে ধীরে নিঃশ্বাস নিলেন এবং পরের চারটি ধাপে প্রশ্বাস ছাড়লেন।
আরও পড়ুন:
অল্প নড়াচড়া করতে হবে: হাঁটতে হাঁটতেই দুই হাত ছড়িয়ে স্ট্রেচিং অভ্যাস করতে পারেন, দুই কাঁধ ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে ব্যায়াম করুন। হাঁটায় সামান্য দুলুনি চলে এলেও সেটি ভাল। কেউ কেউ আরও বেশি সক্রিয় থাকতে দেহের উপরের অংশ সামনের দিকে ঝুলিয়ে ব্যায়াম করতে পারেন হাঁটতে হাঁটতে। কিন্তু খেয়াল রাখতে হবে, গতি যেন বেশি না থাকে।
মুহূর্তে উপস্থিত থাকতে হবে: আপনার পায়ের পাতা মাটি স্পর্শ করছে, আপনার দেহ স্পর্শ করে হাওয়া খেলে যাচ্ছে, আপনি নড়াচড়া করছেন ছন্দ মিলিয়ে, এই সব কিছই ঘটছে সেই মুহূর্তের মধ্যে। আপনাকে চেষ্টা করতে হবে, আপনার মন যেন ওই ঘটনাগুলির দিকে লক্ষ রাখে। এ ভাবেই ‘মাইন্ডফুলনেস’ অভ্যাস করতে হবে।
কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেত হবে: একেবারে শেষে ছোট একটি ধাপ রয়েছে, যা আপাত ভাবে গুরুত্বপূর্ণ মনে না হলেও মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী। মাইন্ডফুল হাঁটার এই অভ্যাস আপনাকে কী কী ভাবে বদলে দিচ্ছে, সেই বিষয়ে ভেবে দেখতে হবে। এই ব্যায়ামটির প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করার জন্য এক মুহূর্ত থেমে যেতে হবে।