ওজন কমাতে সহজ শরীরচর্চা হিসাবে হাঁটাহাটির বিকল্প নেই। হাঁটলে সমগ্র শরীরের ব্যয়াম হয়। খোলা হাওয়ায় মন ভাল হয়ে যায়। পায়ের পেশি মজবুত হয়, হৃদ্যন্ত্র ভাল থাকে। ভাল থাকে শরীর। কিন্তু শুধু হাঁটলেই কি ওজন কমবে? কখন হাঁটছেন, কতটা ও কী ভাবে হাঁটছেন, তা যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তেমনই হাঁটার পরেও করতে হবে কিছু কাজ, যা ওজন কমাতে সহায়ক হবে।
হাঁটার অনেক পদ্ধতি আছে, কেউ পছন্দ করেন ‘পাওয়ার ওয়াকিং’ অর্থাৎ, হাঁটার গতি হবে বেশি, ঘণ্টায় প্রায় ৫ কিলোমিটার। এমন হাঁটায় ঘাম ঝরবে বেশি, তাই ক্যালোরির ক্ষয়ও হবে দ্রুত। আবার ‘ইন্টারভ্যাল ওয়াকিং’-এর ক্ষেত্রে দ্রুত ও শ্লথ গতির মধ্যে সামঞ্জস্য আনার চেষ্টা করা হয়। যেমন ২ মিনিট দ্রুত হাঁটার পর, ১ মিনিট গতি কমিয়ে নিতে হবে। আবার দ্রুত গতিতে হাঁটতে হবে। আবার ওজন নিয়েও হাঁটেন অনেকে। সে যে ভাবেই হাঁটুন না কেন, হাঁটার পরে ৫টি কাজ অবশ্যই করতে হবে।
হাঁটার পরে কী কী কাজ করলে ওজন কমবে?
ডিটক্স পানীয়
হেঁটে এসেই ঢকঢক করে জল খাবেন না। বরং এই সময়টাতে পেশির শক্তি বাড়াতে খেতে হবে ডিটক্স পানীয়। অনেকে হাঁটতে হাঁটতেই এনার্জি ড্রিঙ্ক খান আবার হেঁটে আসার পরে প্রোটিন শেক খান। এই ধরনের পানীয় বাড়িতে নিয়ম মেনে বানাতে পারলে ভাল, কিন্তু যদি দোকান থেকে কেনা এনার্জি ড্রিঙ্ক বা প্রোটিন শেক হয়, তা হলে তাতে চিনির মাত্রা থাকবে বেশি। কিছু রাসায়নিকও মেশানো থাকবে, যা শরীরের জন্য ক্ষতিকর। এতে ক্যালোরি কমার বদলে বাড়বে। তাই বদলে শরীরে জলের ঘাটতি পূরণ করতে ও ক্যালোরির ভারসাম্য বজায় রাখতে খেতে হবে একটি বিশেষ ডিটক্স পানীয়। এক গ্লাস জলে আধ চামচ পিঙ্ক সল্ট ও একটি গোটা লেবু চিপে নিন। এই জল পান করলে মেদ ঝরার প্রক্রিয়া দ্রুত হবে।
আরও পড়ুন:
হাই-প্রোটিন প্রাতরাশ
সকালে হাঁটাই সবচেয়ে ভাল। যদি ঘুম থেকে উঠে হাঁটেন, তা হলে আগে কিছু খাবেন না। হেঁটে ফেরার আধ ঘণ্টা পরে জলখাবার খেতে পারেন আর সেই জলখাবারে প্রোটিনের পরিমাণ বেশি থাকতে হবে। তাতে অন্তত ৩০-৪০ গ্রাম প্রোটিন থাকতে হবে। সে জন্য জলখাবারে মুগ ডালের চিল্লা, ডিম সেদ্ধ, চিকেন সেদ্ধ খেতে পারেন। ছাতু, ছানাও রাখা যেতে পারে। যাঁরা রুটি খান, তাঁরা হাতে গড়া দুটো রুটি, একটা সেদ্ধ ডিম বা অমলেট, এক কাপ দই, আর স্যালাড রাখতে পারেন প্রাতরাশে। তা হলেই প্রোটিনের চাহিদা ঠিকঠাক পুষিয়ে যাবে। আর যদি প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবারই খেতে চান, তা হলে মুগ ডালের ইডলি বা দোসা, পনিরের পুর ভরা দোসা খাওয়া যেতে পারে। ভারী শরীরচর্চা করলে প্রাতরাশে দু'টি ডিম খাওয়া যেতে পারেই। বাদামও রাখতে পারেন পরিমিত পরিমাণে।
হাঁটার পরেই কিছু খাবেন না
হেঁটে আসার মিনিট পাঁচেকের মধ্যে কিছু খাবেন না। এই সময়ে খিদে পেলে অনেকেই যা খুশি খেয়ে ফেলেন। এতে লাভের চেয়ে ক্ষতিই হয় বেশি। অনেকেই হেঁটে এসে একপিস পাউরুটি বা একটি কলা অথবা একমুঠো ড্রাই ফ্রুট খেয়ে ভাবেন পুষ্টিকর কিছুই খেলেন। তবে এতে ক্যালোরি বেড়ে যেতে পারে। হাঁটার ৩০-৪০ মিনিট পরে একেবারে জলখাবার খাওয়াই ভাল।
স্ট্রেচিং
হেঁটে এসেই শুয়ে পড়বেন না। হাঁটার পরে পেশি শক্ত থাকে, সেই সময়ে কিছু স্ট্রেচিং করে নেওয়া ভাল। তাতে পেশির নমনীয়তা বাড়ে এবং মেদও দ্রুত ঝরে। কী ধরনের স্ট্রেচিং করবেন, তা ফিটনেস প্রশিক্ষকের কাছ থেকে জেনে নেওয়া ভাল।
ঠান্ডা বা গরম কিছু খাবেন না
হাঁটার সময়ে শরীরে রক্ত চলাচল বাড়ে। তাই হেঁটে এসেই খুব ঠান্ডা জল বা গরম চা অথবা কফি খেলে, শরীরের তাপমাত্রার হেরফের হয়। এতে অসুস্থ হয়ে পড়তে পারেন।