প্রতি বছর আষাঢ় মাসে শুক্লপক্ষের দ্বিতীয়া তিথিতে পালিত হয় রথযাত্রা উৎসব। চলতি বছর জুনের ২৭ তারিখ পালিত হবে রথযাত্রা। সকল হিন্দুদের কাছেই এই দিনের মাহাত্ম্য প্রচুর। কেবল পুরীধামেই নয়, বিশ্বের নানা প্রান্তে অত্যন্ত আড়ম্বরের সঙ্গে রথযাত্রা পালন করা হয়। শাস্ত্রমতে মানা হয় যে, রথযাত্রার দিনটি যে কোনও শুভ কাজ শুরু করার জন্য আদর্শ। এই দিন যে কোনও কাজ যদি নিষ্ঠা ও ভক্তির সঙ্গে করা যায় তা হলে সেই কাজের সুফল সারা বছর জুড়ে পাওয়া যায় বলে বিশ্বাস করা হয়। জ্যোতিষশাস্ত্রে এই দিন জীবনের নানা সমস্যা সমাধানের উদ্দেশে নানা টোটকা পালনের কথা বলা রয়েছে। সেই টোটকাগুলি যদি এই দিন সঠিক নিয়ম মেনে পালন করা যায় তা হলে জীবন হয় ঝঞ্ঝাটমুক্ত, অর্থসমস্যা যায় দূরে। জেনে নিন সেই টোটকাগুলি কী কী।
আরও পড়ুন:
রথযাত্রার টোটকা:
১. আর্থিক সঙ্কট দূর করতে: অনেক সময় অর্থকষ্ট কিছুতেই আমাদের পিছু ছাড়তে চায় না। এই অবস্থায় আপনাকে রক্ষা করতে পারেন প্রভু জগন্নাথ। রথযাত্রার দিন স্নান করে, শুদ্ধ বস্ত্র পরিধান করে যে কোনও জগন্নাথ মন্দিরে প্রভুর উদ্দেশে যে কোনও একটি ফল দান করুন। এরই সঙ্গে একটি পিতলের পাত্রে এক মুঠো আতপ চাল, দু’টুকরো কাঁচা হলুদ ও একটি এক টাকার কয়েন নিবেদন করুন। ভাগ্যের হাল ফিরবেই, জগন্নাথের আশীর্বাদে অর্থসমস্যাও দূর হবে। এ ছাড়া, লাল কাপড়ের মধ্যে কয়েকটি লবঙ্গ ও একটি এক টাকার কয়েন বেঁধেও জগন্নাথের চরণে অর্পণ করা যেতে পারে।
২. মনের ইচ্ছা পূরণ করতে: জগন্নাথকে মন দিয়ে ডাকলে মনের ইচ্ছা পূরণ হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায় বলে বিশ্বাস করা হয়। রথের দিন ১১টি তুলসীপাতা নিয়ে নিজের হাতে প্রভুর জন্য মালা তৈরি করুন। তবে খেয়াল রাখতে হবে যে তুলসীপাতা ছেদ করে যেন সেই মালা বানানো না হয়। বদলে তুলসীপাতার ডাঁটিগুলো সুতো দিয়ে বেঁধে মালা তৈরি করতে হবে। সেই মালা জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রাকে পরিয়ে নিজের মনের বাসনা জানান, খুব ভাল ফল পাবেন।
আরও পড়ুন:
৩. অশুভ দৃষ্টি এড়াতে: খারাপ মানুষের বিষনজর যদি এক বার আমাদের উপর পড়ে, তা হলে জীবন তছনছ হয়ে যায়। কোনও কাজই ঠিক হয় না। এ ক্ষেত্রে রথযাত্রার দিন সন্ধ্যাবেলা একটি মাটির প্রদীপে ঘি ও লবঙ্গ জ্বালিয়ে প্রভুর আরতি করুন। অশুভ দৃষ্টির কোপ থেকে মুক্তি পাবেন।
৪. সাফল্য পেতে: আমরা সকলেই জীবনে সফল হতে চাই। কিন্তু অনেক সময় জীবনে চলার পথে নানা বাধাবিপত্তি আসার ফলে সফলতার শিখরে পৌঁছোতে পারি না। জীবনে সফল হওয়ার জন্য তাই একটি হলুদ কাপড়ের মধ্যে ১১টি কড়ি, ১১ রকম ফল ও ১১ রকম মিষ্টি সাজিয়ে জগন্নাথদেবকে দান করুন। খুব ভাল ফল পাবেন।
আরও পড়ুন:
৫. বাড়ির নেগেটিভ শক্তি কমাতে: বাড়িতে অশান্তি লেগেই আছে? এর নেপথ্যে থাকতে পারে কোনও নেগেটিভ শক্তি। অনেক সময় বাড়িতে আমাদের অজান্তেই নেগেটিভ শক্তি প্রবেশ করে। এর ফলে বাস্তুর নানা ক্ষতি হয়, দাম্পত্য জীবনে সমস্যা দেখা দেয়, বাড়ির সদস্যেরা ঘন ঘন রোগব্যাধিতে ভুগতে শুরু করেন। এর থেকে রেহাই পেতে জগন্নাথদেবকে সাদা সুগন্ধযুক্ত ফুল নিবেদন করুন ও পাঁচ রকমের মিষ্টি দিন। এই দিন সন্ধ্যাবেলা কয়েকটি লবঙ্গ নিয়ে সেগুলি পুড়িয়ে জগন্নাথের আরতি করুন। তার পর সেই পোড়া লবঙ্গের ছাই বাড়ির চার কোণে ছড়িয়ে দিন।