সিদ্ধিদাতা গণেশের জন্মের সময় তাঁর মাতা দেবী দুর্গা সকলের সঙ্গে শনিদেবকেও নিমন্ত্রণ করেন তাঁর পুত্রের মুখ দেখে আশীর্বাদ করার জন্য। শনিদেব দেবী দুর্গার আমন্ত্রণ গ্রহণ করলেও দেবীর পুত্রের মুখ দেখে তাঁকে আশীর্বাদ করতে অনিচ্ছা প্রকাশ করেন। এতে দেবী রুষ্ট হন, ফলে অনিচ্ছাসত্ত্বেও শনিদেব গৌরী-পুত্রকে দর্শন করেন। শনিদেব দর্শন করা মাত্র শ্রীগণেশের মস্তক ভস্মীভূত হয়। এমতবস্থায় ভগবান বিষ্ণুর প্রচেষ্টায় হস্তীমস্তক দ্বারা শ্রীগণেশের পুনর্জীবন দান করা হয়। দেবী দুর্গা ক্রুদ্ধ এবং চিন্তিত হয়ে পড়েন। এ রূপ অবয়বের কারণে শ্রীগণেশ দেবতা রূপে পূজিত হবেন কি না এই চিন্তা তাঁর মাথায় ঘুরতে থাকে। অবশেষে দেবীকে শান্ত এবং চিন্তামুক্ত করতে সমস্ত দেবতাগণ অভয় দেন শ্রী গণেশ সৌভাগ্য, সমৃদ্ধির দেবতা এবং সিদ্ধিদাতা রূপে পূজিত হবেন।
আরও পড়ুন:
সমস্ত দেবতাদের আশীর্বাদে দেবাদিদেব মহাদেব এবং দেবী গৌরীর পুত্র শ্রীগণেশ সিদ্ধিদাতা বা সফলতা লাভের দেবতার স্থান পান। এই কারণে সমস্ত শুভকর্মে, এমনকি সমস্ত পুজোর প্রারম্ভে সিদ্ধিদাতার পুজো করা আবশ্যক। সিদ্ধিদাতার আশীর্বাদে সমস্ত কাজে সফলতা আসে।
আরও পড়ুন:
স্কন্দপুরাণ মতে, ভাদ্র মাসের শুক্লপক্ষের চতুর্থী তিথি সিদ্ধিদাতা গণেশের জন্মতিথি। প্রচলিত বিশ্বাস, এই দিনে আশীর্বাদদানের উদ্দেশ্যে মর্তে আগমন করেন শ্রীগজানন। বিশ্বাস এবং ভক্তিভরে উপাসনা করলে সিদ্ধিদাতা গণেশের আশীর্বাদ মেলে। সিদ্ধিদাতা গণেশের পুজোয় বুধ এবং কেতু গ্রহের প্রতিকার হয়।
জ্যোতিষশাস্ত্রে গ্রহ শান্তি এবং গ্রহের অশুভ প্রভাব হ্রাস বা নাশ করতে বিভিন্ন প্রতিকারের বিধান আছে। বিভিন্ন দেব-দেবীর আরাধনার মধ্যে দিয়েও গ্রহের প্রতিকার সম্ভব। যদিও এক দিন পুজো দিলেই গ্রহের অশুভ প্রভাব থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে না। নিয়ম করে দীর্ঘ দিন নির্দিষ্ট দেব-দেবীর আরাধনার মাধ্যমে নিশ্চিত সুফল প্রাপ্তি সম্ভব। নির্দিষ্ট তিথিতে, নির্দিষ্ট দেব-দেবীর পুজোয় যেমন বিশেষ ফল লাভ হয়, তেমনই সঠিক তিথিতে কোনও দেব-দেবীর পুজো শুরু করলে শীঘ্র সুফল প্রাপ্তি হয়।
সিদ্ধিদাতা গণেশের সঙ্গে বুধ এবং কেতুর সম্পর্ক রয়েছে। গণেশের পুজোয় বুধ এবং কেতু গ্রহের প্রতিকার হয়। যাঁরা বুধ বা কেতুর সমস্যায় আছেন, তাঁরা ভাদ্র মাসের শুক্লপক্ষের চতুর্থী তিথিতে অবশ্যই ভক্তিভরে গণেশের পুজো শুরু করুন। নিশ্চিত সুফল পাবেন।