ব্যক্তিগত আক্রোশ। সেই থেকে প্রতিশোধ নেওয়ার ভাবনা এসেছিল নয়ডার অশ্বিনী কুমারের। কী ভাবে ‘বন্ধু’কে ফাঁসানো যায়, তা ভাবতে গিয়েই মাথায় আসে ‘মুম্বইয়ে হামলা’র হুমকি দেওয়ার কথা। সেই বন্ধুর নামে মুম্বই ট্র্যাফিক পুলিশের হেল্পলাইন নম্বরে ফোন করে মুম্বই বিস্ফোরণের হুমকি দেন অশ্বিনী। গ্রেফতার হওয়ার পর পুলিশকে এমনই জানিয়েছেন তিনি।
মুম্বই ট্র্যাফিক পুলিশের হোয়াট্সঅ্যাপ হেল্পলাইনে হুমকি বার্তা আসে বৃহস্পতিবার। সেখানে বলা হয়, মুম্বইয়ের নানা জায়গায় বিস্ফোরণ ঘটানো হবে। শুধু তা-ই নয়, আরও বলা হয়, ৪০০ কেজি আরডিএক্স দিয়ে সেই বিস্ফোরণ ঘটিয়ে এক কোটি মানুষকে হত্যা করা হবে। আর সেই বিস্ফোরণ ঘটাতে ৩৪টি মানববোমা শহরে ঢুকেছে। ১৪ জন পাক জঙ্গিও শহরে ঢুকে পড়েছে বলে হুমকি দেওয়া হয়। পাকিস্তানি জঙ্গিগোষ্ঠী লশকর-ই-জিহাদির নাম উল্লেখ করা হয়েছিল বলে পুলিশ সূত্রে খবর।
পুলিশ জানিয়েছে, হুমকিবার্তা পাওয়ার পরেই তৎপরতা বাড়ে। বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি অভিযান চালানো হয়। কে হুমকিবার্তা পাঠিয়েছেন, সেই সন্ধানে নেমে তদন্তকারীরা জানতে পারে, নয়ডার কাছ থেকে ফোন করা হয়। সেই তথ্যের ভিত্তিতে অভিযানে নেমে নয়ডার ৭৯ সেক্টর থেকে অশ্বিনীকে গ্রেফতার করে সেক্টর ১১৩-র পুলিশ। তার পর অভিযুক্তকে তুলে দেওয়া হয় মুম্বই পুলিশের হাতে।
আরও পড়ুন:
জেরার মুখে হুমকিবার্তা দেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন অশ্বিনী। এমনটাই দাবি পুলিশের। তদন্তকারীদের সূত্রে জানা গিয়েছে, ব্যক্তিগত প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতেই অশ্বিনী হুমকি দিয়ে ফোন করেছিলেন। তদন্তকারী এক অফিসারের কথায়, ‘‘অভিযুক্ত তাঁর এক বন্ধুর উপর প্রতিশোধ নিতে চেয়েছিলেন। ২০২৩ সালে বিহারের পটনায় তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করেছিলেন ওই বন্ধু। তিন মাস জেলও খাটতে হয়েছিল অভিযুক্তকে। সেই রাগ পুষে রেখেছিলেন অশ্বিনী। সুযোগ খুঁজছিলেন, কী ভাবে বন্ধুকে ফাঁসানো যায়। বৃহস্পতিবার সেই বন্ধুর নাম ব্যবহার করেই মুম্বই পুলিশকে হুমকি দেন অভিযুক্ত।’’
অভিযুক্ত নয়ডায় থাকলেও আদতে তিনি পটনার বাসিন্দা। ৫১ বছর বয়সি অশ্বিনী গত পাঁচ বছর ধরে নয়ডার সেক্টর ৭৯-র একটি আবাসনে থাকছিলেন। তিনি নিজেকে এক জন জ্যোতিষী এবং বাস্তু বিশেষজ্ঞ বলে পরিচয় দিতেন।