সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি থাকাকালীন ২০১১ সালে ছত্তীসগঢ়ে মাওবাদী বিরোধী সালওয়া জুড়ুম অভিযানকে নিষিদ্ধ করেছিলেন তিনি। এ বার সেই রায়কে হাতিয়ার করে বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’র উপরাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী, অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি বি সুদর্শন রেড্ডিকে নিশানা করলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ-সহ বিজেপির নেতারা।
শাহ শুক্রবার অভিযোগ করেছেন, বিচারপতি হিসেবে রেড্ডি মাওবাদীদের পক্ষে রায় দিয়েছিলেন। তিনি বলেন, ‘‘সুদর্শনই সালওয়া জুড়ুম বন্ধ করেছেন। (ওই শিবির) বন্ধ না হলে অনেক আগেই দেশ থেকে মাওবাদ খতম হয়ে যেত।’’ ছত্তীসগঢ়ের উপমুখ্যমন্ত্রী তথা বিজেপি নেতা বিজয় শর্মাও শাহের সুরেই শনিবার বলেন, ‘‘২০১১ সালে ওই রায়ের পর গোটা বস্তার ডিভিশন জুড়ে আতঙ্কের ছায়া নেমেছিল। নকশালপন্থী জঙ্গিরা অবাধে হত্যালীলা চালাতে শুরু করায় গ্রামের পর গ্রাম জনশূন্য হয়ে পড়ে। যে বিচারপতি ওই রায় দিয়েছিলেন, তিনিই আজ কংগ্রেসের জোটের উপরাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী।’’ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের দেওয়া প্রতিশ্রুতি মেনে ২০২৬ সালের ৩১ মার্চের মধ্যে ছত্তীসগঢ় থেকে মাওবাদীদের পুরোপুরি নির্মূল করা হবে বলেও জানান বিজয়। শাহের মন্তব্যের জবাবে শনিবার বিচারপতি (অবসরপ্রাপ্ত) রেড্ডি বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে কোনও বিতর্কে জড়ানোর ইচ্ছা আমার নেই। কারণ, যে কোনও বিতর্কের ক্ষেত্রে শালীনতা বজায় রাখা প্রয়োজন।’’
আরও পড়ুন:
প্রসঙ্গত, ২০০৫ সালে ছত্তীসগঢ়ের তৎকালীন বিজেপি সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় মাওবাদী বিরোধী গণপ্রতিরোধ সালওয়া জুড়ুম (বাংলায় যার অর্থ, ‘শান্তি পুনরুদ্ধার’) অভিযান শুরু হয়েছিল। সে সময় আদিবাসী যুবকদের নিয়ে গঠিত ‘কোয়া কমান্ডো’ বাহিনী (সরকারি খাতায় ‘স্পেশ্যাল পুলিশ অফিসার’ এবং ‘আর্মড অক্সিলারি ফোর্সেস’) মাওবাদীদের জনবিচ্ছিন্ন করার যুক্তি দিয়ে অবুঝমাঢ়ের জঙ্গল জুড়ে বহু আদিবাসী গ্রামের বাসিন্দাদের তুলে এনে পুনর্বাসন শিবিরের ঘেরাটোপে বন্দি করেছিল বলে অভিযোগ। ২০১১ সালে সুপ্রিম কোর্টের তৎকালীন বিচারপতি রেড্ডি সালওয়া জুড়ুমকে ‘নিষিদ্ধ’ করেছিলেন। আগামী ৯ সেপ্টেম্বরের উপনির্বাচনে তিনি ‘ইন্ডিয়া’র প্রার্থী। পদত্যাগী জগদীপ ধনখড়ের উত্তরসূরি হওয়ার লড়াইয়ে তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী প্রাক্তন বিজেপি নেতা সিপি রাধাকৃষ্ণন।