ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল নয়াদিল্লি এবং সংলগ্ন এলাকা। বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানী দিল্লিতে কম্পন অনুভূত হয়েছে। রিখটার স্কেলে কম্পনের মাত্রা ছিল ৪.৪। জাতীয় ভূতত্ত্ব পর্যবেক্ষণ সংস্থা জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা ৪মিনিটে ভূমিকম্পটি হয়েছে। কম্পনের উৎসস্থল ছিল রাজধানী দিল্লি থেকে প্রায় ৬০ কিলোমিটার দূরে হরিয়ানার ঝজ্জরে। ভূপৃষ্ঠ থেকে ১০ কিলোমিটার গভীরে কম্পনটি হয়েছে। ভূকম্পের উৎসস্থল দিল্লি থেকে খুব দূরে না হওয়ায় তীব্রতা কম হলেও কম্পন বেশ ভালই অনুভূত হয়েছে রাজধানীতে।
ভূমিকম্পে এখনও পর্যন্ত হতাহতের কোনও খবর মেলেনি। তবে সাতসকালের এই কম্পনের জেরে রাজধানী দিল্লি এবং আশপাশের এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। অনেকেই ভয়ে বাড়ির বাইরে বেরিয়ে আসেন। এলাকাবাসীরা অনেকে জানাচ্ছেন, তাঁদের বাড়িতে ফ্যান এবং অন্য আসবাবপত্র কাঁপতে শুরু করেছিল।
রাজধানী সংলগ্ন উত্তরপ্রদেশের নয়ডা এবং হরিয়ানার গুরুগ্রামে প্রচুর সংস্থার অফিস রয়েছে। সেই এলাকাগুলিতেই কম্পন টের পাওয়া গিয়েছে। ভূমিকম্পের সময় অফিসগুলিতে কম্পিউটার কেঁপে ওঠে বলে দাবি করছেন ওই এলাকার অফিসগুলির কর্মীদের অনেকে। তাঁরাও ভয়ে বহুতল অফিস ছেড়ে বাইরে বেরিয়ে আসেন।
ভূমিকম্পের উৎসস্থল ঝজ্জর থেকে প্রায় ২০০ কিলোমিটার দূরে উত্তরপ্রদেশের পশ্চিম প্রান্তের মেরঠ এবং শামলিতেও কম্পন টের পাওয়া গিয়েছে। হরিয়ানার সোনিপত এবং হিসারেও ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে।
আরও পড়ুন:
এর আগে গত ফেব্রুয়ারিতেও দিল্লিতে ভূমিকম্প হয়েছিল। তখনও কম্পনের মাত্রা ছিল ৪।ভূবিজ্ঞানীদের অনেকের মতে, ভৌগোলিক অবস্থানগত কারণে দিল্লিতে ভূমিকম্প অস্বাভাবিক কিছু নয়। ন্যাশনাল ডিজ়াস্টার ম্যানেজমেন্ট অথরিটি (এনডিএমএ)-র তথ্য অনুযায়ী, ভারতীয় ভূখণ্ডের প্রায় ৫৯ শতাংশ এলাকায় ভূমিকম্পের ঝুঁকি রয়েছে।
সিসমিক জ়োনিং ম্যাপ অনুযায়ী, ভারতকে চারটি সিসমিক জ়োন বা ভূমিকম্প প্রবণ এলাকায় বিভক্ত করা হয়ে থাকে। এগুলি হল যাথাক্রমে জ়োন ২, জ়োন ৩, জ়োন ৪ এবং জ়োন ৫। এই জ়োন বা অঞ্চলগুলির মধ্যে জ়োন ৫ সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ এবং জ়োন ২-এ ঝুঁকি সবচেয়ে কম। আর ভূকম্প প্রবণতার নিরিখে দেশের রাজধানী দিল্লি পড়ে জ়োন ৪-এর আওতায়। ফলে মাঝেমাঝেই সেখানে ৫ থেকে ৬ মাত্রার ভূমিকম্পের আশঙ্কা দেখা দিতে পারে।