জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে পর্যটকদের উপর জঙ্গি হামলার ঘটনার পর কড়া পদক্ষেপ করেছে ভারত। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে একগুচ্ছ কড়া সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে আটারি-ওয়াঘা সীমান্ত। এটি পাকিস্তানের সঙ্গে ভারতের স্থলপথে বাণিজ্যের একমাত্র রাস্তা। এই সীমান্ত বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ভারতের সঙ্গে পাকিস্তানের বাণিজ্যিক সম্পর্ক প্রভাবিত হবে বলেই মনে করা হচ্ছে। অনেক পণ্যের আমদানি এবং রফতানি বন্ধ হয়ে যেতে পারে। ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে দুই দেশের অর্থনীতি। বিশেষজ্ঞদের একাংশ মনে করছেন, এর ফলে পাকিস্তানের সমস্যা হবে বেশি।
অমৃতসর থেকে মাত্র ২৮ কিলোমিটার দূরে আটারি ভারতের প্রথম স্থলবন্দর। পাকিস্তানের সঙ্গে স্থলপথে এই একটিমাত্র রাস্তা দিয়েই ভারতের বাণিজ্যের অনুমতি রয়েছে। ১২০ একর জমিতে বিস্তৃত, এক নম্বর জাতীয় সড়কের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত আটারি ভারত-পাকিস্তান বাণিজ্যের অন্যতম কাণ্ডারি। আফগানিস্তানের পণ্য আমদানির ক্ষেত্রেও আটারির ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ।
আরও পড়ুন:
পরিসংখ্যান বলছে, ২০২৩-২৪ সালে আটারি-ওয়াঘা সীমান্ত দিয়ে মোট ৩,৮৮৬.৫৩ কোটি টাকার বাণিজ্য হয়েছে। ৭১,৫৬৩ জন মানুষ এক বছরে এই সীমান্ত দিয়ে যাতায়াত করেছেন। ভারত থেকে যে সমস্ত পণ্য এই পথে পাকিস্তানে রফতানি করা হয়, তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য, সয়াবিন, মুরগির দানা, সব্জি, শুকনো লঙ্কা, প্লাস্টিক দানা এবং সুতো। এ ছাড়া, পাকিস্তান এবং আফগানিস্তান থেকে এই পথে ভারতে আসে মূলত শুকনো ফল, খেজুর, সিমেন্ট, জিপসাম, কাচ, লবণ (রক সল্ট) এবং নানা প্রকার ওষধি। সীমান্ত বন্ধ হয়ে গেলে এই সমস্ত পণ্যের আদানপ্রদানে সমস্যা হবে। বিশেষ করে এই ধরনের ছোট এবং মাঝারি শিল্পের উপর যাঁরা নির্ভর করে থাকেন, তাঁদের রুটিরুজিতে কোপ পড়তে চলেছে।
২০১৮-১৯ সাল থেকে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে বাণিজ্য তুলনামূলক কমে গিয়েছে। ভারতের আটারি সীমান্ত বন্ধের সিদ্ধান্ত এই বাণিজ্যে আরও প্রভাব ফেলতে পারে বলে অনুমান করছেন বিশেষজ্ঞেরা। আফগানিস্তানের পণ্য আমদানিতেও এর প্রভাব পড়বে।
পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলায় ২৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। তাঁদের মধ্যে ২৫ জন ভারতীয় এবং এক জন নেপালি নাগরিক। পাকিস্তান এই হামলার সঙ্গে কোনও রকম যোগাযোগ অস্বীকার করেছে। তবে পাক জঙ্গি সংগঠন লশকর-এ-ত্যায়বার শাখা দ্য রেসিসট্যান্স ফোর্স (টিআরএফ) হামলার দায় স্বীকার করেছে। তার পরেই নয়াদিল্লির এই পদক্ষেপ।