বাংলাদেশের জন্য প্রতিবেশীকে অগ্রাধিকার দেওয়ার নীতি থেকে কোনও অবস্থাতেই সরে আসবে না ভারত। বৃহস্পতিবার বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠকে এ কথা জানালেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি বলেন, ‘‘বাংলাদেশ বরাবরই ভারতের ‘নেবার ফার্স্ট’ নীতির গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ। আমাদের সরকারও সেই সম্পর্ক দৃঢ় করতে অঙ্গীকারবদ্ধ।’’
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ৫০ তম বিজয় দিবস উপলক্ষে বুধবার দিল্লির ‘ন্যাশনাল ওয়ার মেমোরিয়াল’-এ ‘স্বর্ণ বিজয় মশাল’ জ্বালেন প্রধানমন্ত্রী। ১৯৭১ সালের যুদ্ধে শহিদ ভারতীয় সেনাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান তিনি। মোদী এবং হাসিনা বৃহস্পতিবার মুক্তিযুদ্ধের প্রাণপুরুষ তথা স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপ্রধান শেখ মুজিবুর রহমানের একটি স্মারক ডাকটিকিট প্রকাশ করেন।
মহাত্মা গাঁধী এবং মুজিবুরকে নিয়ে তৈরি ‘বাপু-বঙ্গবন্ধু ডিজিট্যাল প্রদর্শনী’রও উদ্বোধন করেন দুই প্রধানমন্ত্রী। মোদী বলেন, ‘‘মহাত্মা এবং বঙ্গবন্ধু আমাদের যুবসমাজের অনুপ্রেরণা।’’ পাশাপাশি, ভার্চুয়াল শীর্ষবৈঠকে তাঁরা আনুষ্ঠানিক ভাবে চিলাহাটি-হলদিবাড়ি রেল যোগাযোগ প্রকল্পের সূচনা করেন। এই প্রকল্প কার্যকর হলে উত্তরবঙ্গের সঙ্গে বাংলাদেশের যোগাযোগ অনেক সহজ হবে। স্বাধীনতার পরে এই পথে রোল যোগাযোগ থাকলেও ১৯৬৫ সালের ভারত-পাক যুদ্ধের সময় তা বন্ধ হয়ে গিয়েছিল।
করোনা পরবর্তী পর্যায়ে এই প্রথম দুই প্রধানমন্ত্রীর বৈঠক হল। গত বছর নাগরিকত্ব (সংশোধনী) আইন চালু হওয়ার পরে দু’দেশে সম্পর্কে টানাপড়েন শুরু হয়েছিল। অনুপ্রবেশ বিতর্কের পাশাপাশি করোনা আবহে ভারত পেঁয়াজ রফতানি বন্ধ করায় প্রকাশ্যে ক্ষোভ জানিয়েছিল ঢাকা। এই আবহে দুই প্রধানমন্ত্রীর ভিডিয়ো কনফারেন্স ‘তাৎপর্যপূর্ণ’ বলেই মনে করছে কূটনৈতিক মহল।
আরও পড়ুন: কাঁথিতে শুভেন্দুর সহায়তা কেন্দ্র পুনর্দখল তৃণমূলের, ছেঁড়া হল ছবি
মোদী এবং হাসিনা বৃহস্পতিবার তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে দ্বিপাক্ষিক সমঝোতা সংক্রান্ত একটি চুক্তিও সই করেন। অন্যদিকে, বাংলাদেশ সফররত ভারতীয় প্রতিনিধিদলের উপস্থিতিতে ঢাকার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন ‘পদ্মা’-য় বাণিজ্য, কৃষি, হাইড্রোকার্বন এবং সীমান্তে হাতি চলাচলের ‘করিডোর’গুলির সুরক্ষা সংক্রান্ত ৭টি চুক্তি সই হয়। ঢাকার ভারতীয় হাইকমিশনার বিক্রম দুরাইস্বামী ভারতীয় প্রতিনিধিদলের নেতৃত্বে ছিলেন।
আরও পড়ুন: ‘লাভ জেহাদ’- এর অভিযোগে ফের গ্রেফতারি যোগী রাজ্যে