Advertisement
E-Paper

দিল্লি-ওয়াশিংটন বাণিজ্যচুক্তির জট কাটছে? ভারতীয় পণ্যে ৩৫ শতাংশ শুল্ক কমানোর পথে ট্রাম্প প্রশাসন, দাবি রিপোর্টে

ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয় বার মার্কিন প্রেসিডেন্ট হওয়ার পরই আমেরিকা সফরে গিয়েছিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেই সময়ই ভারত এবং আমেরিকার মধ্যে বাণিজ্যচুক্তি হওয়ার কথা জানান দুই রাষ্ট্রপ্রধান। তবে সেই চুক্তি এখনও চূড়ান্ত হয়নি।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২২ অক্টোবর ২০২৫ ১৩:০৯
India, US trade deal likely soon, may be huge tariff cuts, claim in report

ভারত-আমেরিকার মধ্যে বাণিজ্যচুক্তি স্বাক্ষরিত হবে শীঘ্রই। ছবি: এআই সহায়তায় প্রণীত।

ভারত এবং আমেরিকার বাণিজ্যচুক্তি জট কি কাটতে চলেছে? খুব শীঘ্রই এ ব্যাপারে ঘোষণা হবে, বাণিজ্যচুক্তি বিষয়ে যুক্ত ভারতের তিন শীর্ষ আধিকারিককে উদ্ধৃত করে এমনই জানাল সংবাদমাধ্যম ‘মিন্ট’। শুধু তা-ই নয়, একই সঙ্গে আরও সুখবরেরও ঘোষণার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানানো হয় ওই প্রতিবেদনে। সেই সুখবর শুল্ক-সংক্রান্ত, তা-ও উল্লেখ করা হয়েছে। প্রতিবেদন অনুযায়ী, ভারত এবং আমেরিকার মধ্যে বাণিজ্যচুক্তি সম্পন্ন হওয়ার পাশাপাশি ভারতীয় পণ্যের উপর আরোপিত ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্কের হার কয়েক গুণ হ্রাস পেতে পারে। শুল্কের পরিমাণ ১৫ থেকে ১৬ শতাংশে এসে দাঁড়াতে পারে বলেও ওই প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে!

ট্রাম্প দ্বিতীয় বার মার্কিন প্রেসিডেন্ট হওয়ার পরই আমেরিকা সফরে গিয়েছিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেই সময়ই ভারত এবং আমেরিকার মধ্যে বাণিজ্যচুক্তি হওয়ার কথা জানান দুই রাষ্ট্রপ্রধান। তবে বিগত কয়েক মাসের মধ্যে সেই চুক্তি এখনও চূড়ান্ত হয়নি। দুই দেশের প্রতিনিধিদল বার বার চুক্তির বিষয়বস্তু নিয়ে আলোচনা করেছেন। তবে কোনও পক্ষই চুক্তি স্বাক্ষরের ব্যাপারে চূড়ান্ত কোনও ঘোষণা করতে পারেনি। সূত্রের খবর, আলোচনা আটকে রয়েছে মূলত দুই ক্ষেত্রে। সূত্রের দাবি, আমেরিকার দুগ্ধ বা কৃষিজাত পণ্যের জন্য ভারতের বাজার খোলার দাবি নিয়ে কথা আটকে রয়েছে। তবে সেই জট কাটবে খুব তাড়াতাড়িই।

সরকারি কর্তাদের উদ্ধৃত করে ‘মিন্ট’-এর প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, আসন্ন আসিয়ান সম্মেলনের আগেই ভারত এবং আমেরিকার মধ্যে বাণিজ্যচুক্তি চূড়ান্ত হয়ে যাবে। আর আসিয়ান সম্মেলনের ফাঁকেই ট্রাম্প এবং মোদী মিলিত ভাবে তা ঘোষণা করতে পারেন। যদিও আসিয়ান সম্মেলনে মোদী ও ট্রাম্প উপস্থিত থাকবেন কি না, তা এখনও পর্যন্ত নিশ্চিত করেনি দুই দেশের প্রশাসন।

শুধু দুগ্ধ বা কৃষিজাত পণ্যের কাঁটা নয়, বাণিজ্যচুক্তির পথে রয়েছে রাশিয়ান তেলের বাধাও। রুশ তেল কেনা বন্ধ করতে দীর্ঘ দিন ধরে ভারতকে চাপ দিচ্ছে হোয়াইট হাউস। ইউক্রেন যুদ্ধে ক্রেমলিনকে চাপে রাখতে ট্রাম্প সরকারের পরিকল্পনার অংশ এটি। তারা বিষয়টিকে ভারতের সঙ্গে বাণিজ্যচুক্তির কৌশল হিসেবেও ব্যবহার করছে। ট্রাম্পও বার বার দাবি করছেন, রাশিয়া থেকে তেল কেনার পরিমাণ কমাবে ভারত, এমনই আশ্বস্ত করেছেন মোদী। যদিও এ ব্যাপারে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর তরফে কোনও মন্তব্য করা হয়নি। তবে ‘মিন্ট’-এর প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, চুক্তির অংশ হিসাবে রুশ তেল কেনা ধাপে ধাপে কমাবে ভারত!

ইউক্রেন যুদ্ধের আবহে রাশিয়ার থেকে তেল কেনার ‘শাস্তি’ হিসাবে ভারতীয় পণ্যের উপর জরিমানা-সহ মোট ৫০ শতাংশ শুল্কের বোঝা চাপিয়েছে আমেরিকা। ট্রাম্পের অভিযোগ, ভারতের সঙ্গে ব্যবসার লভ্যাংশ ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধে ব্যবহার করছে রাশিয়া। তবে সেই অভিযোগ এবং ট্রাম্পের শুল্কনীতির পরেও নয়াদিল্লি-মস্কোর সম্পর্কে এখনও পর্যন্ত চিড় ধরেনি। ২০২২ সালে ইউক্রেন আক্রমণ করার পর রাশিয়ার উপর বহু বিধিনিষেধ আরোপ করেছিল আমেরিকা-সহ পশ্চিমি বিশ্ব। অর্থনীতি বাঁচাতে তখন রাশিয়া সস্তায় তেল বিক্রি শুরু করে। ভারতও সেই সুযোগ কাজে লাগায়। রাশিয়া থেকে প্রচুর ছাড়ে তেল কিনতে শুরু করে নয়াদিল্লি। গত কয়েক বছরে ০.২ শতাংশ থেকে রুশ তেলের আমদানি বেড়ে হয়েছে ৩৫ শতাংশ। বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম তেল আমদানিকারক দেশ ভারত। তবে আমেরিকা এবং ভারতের মধ্যে বাণিজ্যচুক্তি হলে রাশিয়া থেকে তেল কেনার পরিমাণ কমানোর সম্ভাবনা রয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, কম দামে রাশিয়া থেকে তেল কেনে ভারত। যদি রাশিয়া থেকে তেল আমদানি কমায়, তবে চাহিদা মেটাতে অন্য দেশের উপর ভরসা করতে হবে নয়াদিল্লিকে। সে ক্ষেত্রে ভারতের অর্থনীতির উপর চাপ পড়তে পারে। ‘মিন্ট’-এর প্রতিবেদনে ‘বিকল্প’ ব্যবস্থার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। চুক্তির অংশ হিসাবে আমেরিকার থেকে ইথানল আমদানি করবে ভারত, যা ঘাটতি মেটাতে প্রধান সহায়ক ভূমিকা নেবে।

বাণিজ্যচুক্তি নিয়ে আলোচনার মধ্যেই ট্রাম্প প্রশাসন দাবি করেছিল, যদি আমেরিকায় উৎপাদিত ভুট্টা কিনতে রাজি না হয় তবে আমেরিকার বাজারে ব্যবসা করার সুযোগ হারাতে পারে নয়াদিল্লি! চুক্তির অংশ হিসাবে আমেরিকা সেই সুযোগ পেতে পারে। অর্থাৎ, ভারতের বাজারে আমেরিকার ভুট্টা বিক্রি বৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে। শুধু ভুট্টা নয়, সয়াবিনের রফতানি ভারতে বৃদ্ধি করতে চায় ট্রাম্প প্রশাসন।

ভারতের ওই সরকারি আধিকারিকদের উদ্ধৃত করে ‘মিন্ট’ তার প্রতিবেদনে দাবি করেছে, শীঘ্রই ভারতের প্রতিনিধিদল মস্কো যাবে। সেখানেই মস্কোর প্রতিনিধিদের জানিয়ে দেওয়া হবে কম তেল কেনার বিষয়টি। শুধু ইথানল নয়, আমেরিকার থেকে তেল কেনার পরিমাণও বৃদ্ধি করতে পারে ভারত। যদিও রাশিয়ার হারে ছাড় দেওয়া হবে কি না, সে সম্পর্কে হোয়াইট হাউসের তরফে এখনও পর্যন্ত কোনও নিশ্চয়তা দেওয়া হয়নি।

India-US Relationship Trade Deal Narendra Modi Donald Trump
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy