পহেলগাঁও হামলার পর স্পেশ্যাল অপারেশন্স গ্রুপ (এসওজি)-এর কর্মীদের জঙ্গলযুদ্ধে বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়ার ব্যবস্থা করল জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশ। জঙ্গিহানার পর উপত্যকায় নিরাপত্তা বৃদ্ধির লক্ষ্যেই এই পদক্ষেপ করেছে পুলিশ।
নব্বইয়ের দশকে গঠিত এসওজি জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশের একটি বিশেষ শাখা। গত ২২ এপ্রিল পহেলগাঁওয়ের বৈসরন উপত্যকায় জঙ্গি হামলায় ২৬ জন পর্যটকের মৃত্যুর পরেই এসওজি-কে জঙ্গলযুদ্ধে প্রশিক্ষণ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পুলিশের শীর্ষ কর্তাদের মতে, পর্যাপ্ত গোয়েন্দা-তথ্যের অভাব এবং অঞ্চলগত দুর্গমতার কারণেই হামলা এড়ানো যায়নি। এলাকার নিরাপত্তাবাহিনীরও জঙ্গলযুদ্ধে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ নেই। তাই জঙ্গিদমনে এ ধরনের গেরিলা কৌশলের জন্য নিরাপত্তাবাহিনীকে প্রস্তুত করতেই এমন পদক্ষেপ করেছে পুলিশ।
আরও পড়ুন:
গোটা প্রশিক্ষণের তত্ত্বাবধানে থাকছেন ১৯৯২ ব্যাচের অন্ধ্রপ্রদেশ ক্যাডারের আইপিএস তথা ডিজি নলিন প্রভাত। এর আগে মাওবাদী দমনে বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ‘গ্রেহাউন্ড্স’-এর কমান্ডার ছিলেন নলিন। তাঁরই নির্দেশে এসওজি-র ইউনিটগুলিকে জঙ্গলে এবং অধিক উচ্চতায় যুদ্ধকৌশল রপ্ত করার প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। এসওজি-র কয়েকটি দল ইতিমধ্যেই ওই প্রশিক্ষণ নেওয়া শুরু করে দিয়েছে। শীঘ্রই প্রশিক্ষণ শুরুর প্রস্তুতি নিচ্ছেন বাকিরাও। তেলঙ্গানার ‘গ্রেহাউন্ড্স’ এবং ‘জঙ্গল ওয়ারফেয়ার স্কুল’-এর সঙ্গে প্রশিক্ষণ নেবেন এসওজি-র সদস্যেরা। এ ছাড়া, আঞ্চলিক প্রশিক্ষণ শিবিরগুলির মধ্যে তালওয়ারার ‘হোয়াইট নাইট কোর বেস’ এবং ডোডার ‘কোর ব্যাটেল স্কুল’ (সিবিএস)-ও রয়েছে। ৩০-৫০ জনের ছোট ছোট দলে ভাগ হয়ে কয়েক দিন ধরে ঘন জঙ্গলে থেকে এই দলগুলির সঙ্গে প্রশিক্ষণ নেবেন এসওজি-র সদস্যেরা।
গত ২২ এপ্রিল পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলায় ২৬ জনের মৃত্যুর পর পাকিস্তানকে এই হামলার জন্য দায়ী করে নানা পদক্ষেপ করে ভারত। প্রত্যাঘাত হিসাবে ৭ মে মধ্যরাতে পাক জঙ্গিঘাঁটি লক্ষ্য করে ‘অপারেশন সিঁদুর’ হয়। পাল্টা জবাব দেয় পাকিস্তানও। শেষমেশ ১০ মে যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয় দুই দেশ। সেই আবহেই সীমান্তে উত্তেজনা সামাল দিতে জঙ্গলযুদ্ধে প্রশিক্ষণ নেওয়া শুরু করল জম্মু-কাশ্মীর পুলিশ।