জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে সপরিবার ঘুরতে গিয়েছিলেন মধ্যপ্রদেশের ইনদওরের এলআইসি ম্যানেজার ৫৮ বছরের সুশীল নাথানিয়েল। স্ত্রী, পুত্র, কন্যাকে নিয়ে সেই ঘুরতে যাওয়াই কাল হল। জঙ্গিদের গুলিতে প্রাণ দিতে হল তাঁকে। বাবার মৃত্যু চোখের সামনে দেখলেন পুত্র অস্টিন ওরফে গোল্ডি। শেষকৃত্যের পরেও আতঙ্ক যেন পিছু ছাড়ছে না তাঁর। থামছে না কান্না। অস্টিন জানিয়েছেন, যে জঙ্গিরা তাঁর বাবাকে মেরেছে, তাদের বয়স ১৫ থেকে ১৬ বছরের বেশি নয়। প্রত্যেকের মাথায় ক্যামেরা বসানো ছিল। খুনের পর নিজস্বীও তুলছিল তারা।
অস্টিন জানিয়েছেন, তাঁর বোনের পায়েও গুলি লেগেছে। তাঁর এবং তাঁর মায়ের কোনও আঘাত লাগেনি। বাবার মৃত্যুর পর কোনও রকমে মা এবং বোনকে নিয়ে সেখান থেকে পালাতে পেরেছিলেন অস্টিন। সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে তিনি বলেন, ‘‘জঙ্গিদের মধ্যে বাচ্চা বাচ্চা কয়েক জন ছেলে ছিল। খুব বেশি হলে ওদের বয়স ১৫ বছর হবে। অন্তত চার জন ছিল ওরা। হামলার সময়ে ওরা নিজস্বী তুলছিল। মাথায় বসানো ছিল ক্যামেরা।’’
আরও পড়ুন:
কী ঘটেছিল? অস্টিন জানান, পর্যটকদের ধর্মীয় পরিচয় জিজ্ঞাসা করছিল জঙ্গিরা। একটি বিশেষ ধর্মের মানুষ ছাড়া কাউকে রেয়াত করা হয়নি। তাঁর বাবাও ভিন্ধর্মী জানতে পেরে গুলি চালিয়ে দেয় তারা। বৈসরন উপত্যকায় লুটিয়ে পড়েন প্রৌঢ়। পালাতে গিয়ে একটি গুলি লাগে অস্টিনের বোন আকাঙ্ক্ষার পায়ে। বাবার শেষকৃত্যে হুইলচেয়ারে ছিলেন তিনি। প্রৌঢ়ের স্ত্রী শোকে পাথর হয়ে গিয়েছেন। শেষকৃত্যের সময়ে বার বার জ্ঞান হারিয়ে পড়ে যাচ্ছিলেন তিনি। মধ্যপ্রদেশের রাজনৈতিক নেতারা শেষকৃত্যে উপস্থিত ছিলেন। পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন তাঁরা।
বৈসরনে আরও নিরাপত্তা বাহিনী এবং সেনা জওয়ান মোতায়েন করা হোক, আবেদন অস্টিনের। তিনি বলেন, ‘‘ওই জায়গাটায় আরও বেশি করে পুলিশ এবং সেনা মোতায়েন করা হোক। আমি সেটাই চাই। কারণ, ওখানে প্রচুর মানুষ ঘুরতে যান। তাঁদের নিরাপত্তা চাই।’’ অস্টিনদের বাড়িতে গিয়েছিলেন মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী মোহন যাদব। তিনি বলেন, ‘‘ইনদওরের এক বাসিন্দা পহেলগাঁও হামলায় নিহত হয়েছেন। বাবা মহাকালের কাছে আমার প্রার্থনা, ওঁর আত্মা যেন শান্তি পায়। এটা পাকিস্তানের একটা কাপুরুষোচিত আক্রমণ।’’