পরীক্ষায় বসতেই হবে। যেনতেন প্রকারে পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছোতে হবে। কিন্তু যাবেন কি করে? গাড়িচালকেরা যেতে চাইছেন না। রাস্তা খারাপ। কোথাও আবার রাস্তা বন্ধ। আর উপায় না দেখে শেষমেশ আকাশপথে যাওয়ার পরিকল্পনা করলেন চার পরীক্ষার্থী। হেলিকপ্টার ভাড়া করলেন পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছোতে। বেশি টাকা খরচ হয়েছে তো কী, সময়ে পৌঁছোতে পেরেছেন, এটাই অনেক। গন্তব্যে পৌঁছে এটাই বলছেন ওই চার পরীক্ষার্থী।
রাজস্থানের বাসিন্দা ওমারাম জাট, মগারাম জাট, প্রকাশ গোদারা জাট এবং লাকি চৌধরি। এই চার যুবকের বিএডের পরীক্ষা ছিল বুধবার। তাঁদের চার জনেরই উত্তরাখণ্ডের মুনসয়ারিতে একটি সরকারি কলেজে পরীক্ষাকেন্দ্র পড়েছিল। রাজস্থান থেকে তাঁরা পৌঁছে গিয়েছিলেন উত্তরাখণ্ডে। কিন্তু পরীক্ষাকেন্দ্র যেখানে পড়েছিল, সেখানে কোনও গাড়িই যেতে চাইছিল না। কারণ টানা বৃষ্টি, হড়পা বান এবং ধসের জেরে উত্তরাখণ্ডের বেশির ভাগ রাস্তাই বন্ধ। ঘুরপথে যেতে হলেও অনেক ঝুঁকি। আর সেই ঝুঁকি নিতে চাইছিলেন না কোনও চালক। অনুনয়-বিনয় করেও কোনও গাড়িচালক যেতে রাজি হননি।
আরও পড়ুন:
পরীক্ষার্থীদের এক জন ওমারাম বলেন, ‘‘কোনও গাড়িই যেতে চাইছিল না মুনসয়ারিতে। ফলে আমাদের গন্তব্যে পৌঁছোনোর আশা ক্রমে ক্ষীণ হচ্ছিল। দিশাহারা হয়ে পড়েছিলাম। যদি সময়মতো পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছোতে না পারি, আরও একটা বছর নষ্ট হয়ে যাবে।’’ এই ভেবে ভেবে যখন দিশাহারা, তখন ওই চার যুবক জানতে পারেন যে, মুনসয়ারি পর্যন্ত হেলিকপ্টার পরিষেবা দিচ্ছে হেরিটেজ অ্যাভিয়েশন নামে একটি সংস্থা। তবে সেই পরিষেবা পাওয়া যাবে হলদওয়ানি থেকে। আর বিন্দুমাত্র দেরি না করে হলদওয়ানি পৌঁছোন চার যুবক। তার পর মাথাপিছু ১০ হাজার ৪০০ টাকা দিয়ে হেলিকপ্টার ভাড়া করেন। সেই হেলিকপ্টারে করেই হলদওয়ানি থেকে মুনসয়ারিতে পৌঁছোন চার যুবক।
সড়কপথে হলদওয়ানি থেকে মুনসয়ারির দূরত্ব ২৮০ কিলোমিটার। সেখানে গাড়িতে পৌঁছোতে ১০ ঘণ্টা সময় লাগে। তবে সব কিছুই পরিস্থিতির উপর। ওই যুবকেরা জানিয়েছেন, তাঁরা হেলিকপ্টারে করে ২৫ মিনিটে গন্তব্যে পৌঁছেছেন। মুনসয়ারিতে নিরাপদে নামার পর স্বস্তির নিঃশ্বাস ছাড়েন। তাঁদের কথায়, ‘‘টাকা বেশি গিয়েছে ক্ষতি নেই। কিন্তু বছরটা তো নষ্ট হল না।’’ তাঁরা জানিয়েছেন , যে ভাবে পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছেছেন, ঠিক সেই ভাবেই আবার মুনসয়ারি থেকে হলদওয়ানিতে হেলিকপ্টারে করে ফেরেন।