Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
Budget 2020

‘নয়া আয়কর কাঠামো আসলে গিমিক’, বলছেন কর বিশেষজ্ঞরাই

নতুন এই কর কাঠামো আসলে গিমিক। যাঁরা নিয়মিত ভাবে টাকা জমিয়ে আসছেন, তাঁদের ক্ষেত্রে নতুন কাঠামোয় কর জমা দেওয়া মোটেই কাজের কথা হবে না।

নির্মলা সীতারমন।

নির্মলা সীতারমন।

চিন্ময় মুখোপাধ্যায়, কর বিশেষজ্ঞ
কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ১৯:০৮
Share: Save:

কত টাকা আয়ের উপর কত দিতে হবে কর? আয়করে ছাড়ই বা কত? প্রত্যেক বছরই বাজেটের আগে থেকে আয়কর সংক্রান্ত এমন নানা প্রশ্ন ঘুরতে থাকে। কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীর বাজেট বক্তৃতা শেষে শুরু হয় হিসাব মেলানোর পালা। শনিবারের শুরুটাও হয়েছিল তেমন। অর্থমন্ত্রী হিসাবে নির্মলা সীতারামন যখন দ্বিতীয় বারের জন্য বাজেট পেশ করছেন, তখন সংসদের বাইরে সাধারণ মানুষের প্রত্যাশার বেলুনও ফুলতে শুরু করেছিল। প্রত্যেক বার ঠিক যেমনটা হয়ে থাকে। বিশেষ করে, আয়করের পরিসীমা সরকার কোথায় বেঁধে দেয় সেটাই ছিল আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু। কিন্তু, দিনের শেষে নির্মলার ‘বহিখাতা’য় মধ্যবিত্তের জন্য আয়করের হিসাব দেখে জনসাধারণের সেই প্রত্যাশার বেলুন যেন ফেঁসে গিয়েছে।

এ দিনের বাজেটে বেনজির ভাবে গোটা আয়কর কাঠামোটাকেই দু’ভাগে ভাগ করে দিয়েছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা। তিনি এক জন করদাতাকে ঠিক যেন রাস্তার মোড়ে দাঁড় করিয়ে দিয়েছেন। যেখান থেকে দু’দিকে বেঁকে গিয়েছে পথ। অর্থাৎ আয়কর দেওয়ার ক্ষেত্রে এখন মানুষের সামনে দু’টি পথ খোলা রয়েছে। প্রথমটি হচ্ছে, গত বার অর্থাৎ ২০১৯ সালের কাঠামোয় আয়কর দেওয়া। দ্বিতীয় পছন্দ হল, নতুন কাঠামোয় আয়কর দেওয়া। এমন দ্বিমুখী আয়কর ব্যবস্থা বেনজিরও বটে।

এর মধ্যে ঠিক কোন কাঠামোয় কর দেওয়া যুক্তিযুক্ত হবে? কোন পথে হাঁটলে মাসের শেষে জমানো যাবে কিছু টাকা? নির্মলা সীতারামনের এই দ্বিমুখী আয়কর কাঠামো দেখে এ সব প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছে মধ্যবিত্ত চাকুরিজীবীদের মধ্যে।

আরও পড়ুন: নির্মলার ‘ডজে’ হতাশ মধ্যবিত্ত, ব্যঙ্গের তির ছুটছে সোশ্যাল মিডিয়ায়​

এক জন চাকুরিজীবীর স্ট্যান্ডার্ড ডিডাকশন, প্রভিডেন্ট ফান্ড, গৃহঋণ, জীবন বিমা, মেডিক্লেম-সহ কর ছাড়যোগ্য বিভিন্ন বিষয় থাকলে পুরনো পথে হাঁটাই লাভজনক হবে। অর্থাৎ গতবারের হিসাব অনুযায়ী আয়কর দিলে তুলনামূলক ভাবে খানিকটা লাভবান হওয়া যাবে। সে ক্ষেত্রে নতুন কাঠামোয় কর জমা দেওয়া তাঁর পক্ষে ক্ষতিকরই হবে। এ বার এক ঝলকে নীচের চার্টে দেখে নেওয়া যাক কোন কাঠামোয় কী ধরনের লাভ হতে পারে।

আরও পড়ুন: বাজেটে কিসের দাম বাড়ল? কমল কিসের?

নতুন এই কর কাঠামো আসলে গিমিক। যাঁরা নিয়মিত ভাবে টাকা জমিয়ে আসছেন, তাঁদের ক্ষেত্রে নতুন কাঠামোয় কর জমা দেওয়া মোটেই কাজের কথা হবে না। এখন প্রশ্ন উঠতে পারে, নতুন আয়কর কাঠামো যে জনমনোরঞ্জন হয়ে উঠবে না, সে আঁচ কি করতে পারেনি সরকার? সে ক্ষেত্রে বলা যায়, যিনি টাকা জমাতে পারছেন না তাঁর ক্ষেত্রে কিছুটা লাভজনক হতে পারে এই নয়া কাঠামোটি। সে দিকটির কথাও মাথায় রাখা হয়েছে।

আরও পড়ুন: শিক্ষায় এফডিআই থেকে এলআইসি বিলগ্নিকরণ, এক নজরে এ বারের বাজেট

আসলে, উপর উপর দেখলে এই বাজেটকে বেশ ভালই মনে হবে। কিন্তু, তার ভিতরে ডুব দিলেই ধরা পড়বে আসল চেহারাটা। আর তা যে সাধারণ মানুষের আয়-ব্যয়ের হিসাবে ধরা পড়ে যাবে তা-ও অনুভব করতে পেরেছে সরকার। তাই পুরনো কর কাঠামো বাতিল করে দেওয়া হয়নি। আবার নজিরবিহীন ভাবে খোলা রাখা হয়েছে আয়কর জমা দেওয়ার বিকল্প পথও। যাতে, জনমনে জোরালো ধাক্কা না লাগে।

কী কী ঘোষণা হল এ বারের বাজেটে

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE