বিহারের ভোটার তালিকার বিশেষ ও নিবিড় সংশোধন (এসআইআর) নিয়ে মামলায় নির্বাচন কমিশনকে আধার কার্ড এবং ভোটার কার্ডও পরিচয়পত্র হিসাবে বিবেচনা করার পরামর্শ দিল সুপ্রিম কোর্ট। এসআইআর-এ কোন কোন নথি বিবেচনা করা হবে, তার একটি তালিকা প্রকাশ করেছিল কমিশন। সেখানে আধার কার্ড বা ভোটার কার্ডের মতো সহজলভ্য নথি রাখা হয়নি। সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি সূর্য কান্ত এবং বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর বেঞ্চে সোমবার এই সংক্রান্ত মামলার শুনানি হয়। বিচারপতিরা এই দুই নথিকেই বিবেচনার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে বলেছেন। যদিও এ বিষয়ে এখনও কোনও নির্দেশ দেওয়া হয়নি। মঙ্গলবার আবার এই মামলা শুনবে শীর্ষ আদালত।
কেন আধার কার্ড বা ভোটার কার্ড (ইলেক্টোরাল ফটো আইডেন্টিটি কার্ড বা ইপিআইসি) এসআইআর-এর বিবেচনার তালিকায় রাখা হল না, সোমবার তা কমিশনের কাছে জানতে চেয়েছে আদালত। বলেছে, কমিশন যে সমস্ত নথি তালিকায় রেখেছে, সেগুলি প্রত্যেকটিই কোনও না কোনও ভাবে জাল করা হতে পারে। এটা আধার বা ভোটার কার্ড বাদ দেওয়ার যুক্তি হতে পারে না। বিচারপতির মন্তব্য, ‘‘এই দু’টি নথি তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করুন। আগামিকাল হয়তো দেখবেন, শুধু আধার নয়, ১১টি নথিই জাল করা যাচ্ছে। সেটা অন্য সমস্যা। কিন্তু আমরা গণহারে নাম বাদ দিচ্ছি। গণহারে নাম তো অন্তর্ভুক্ত করা উচিত। আপনারা দয়া করে আধার কার্ড অন্তর্ভুক্ত করুন।’’
আরও পড়ুন:
নির্বাচন কমিশনের বক্তব্য, বিহারে ভোটের আগে ভোটার তালিকার এই সংশোধনের প্রয়োজন রয়েছে। জনসংখ্যার পরিবর্তন, নাগরিক অভিবাসনের কারণে এর গুরুত্ব আরও বেড়ে গিয়েছে। গত ২০ বছর ধরে বিহারের এই তালিকার নিবিড় সংশোধন হয়নি। আধার বা রেশন কার্ড সম্পর্কে কমিশনের বক্তব্য, এই নথিগুলি ভোটার যাচাইয়ের জন্য গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। কারণ এগুলি সহজেই জাল করা যেতে পারে। কমিশনের তরফে আইনজীবী রাকেশ দ্বিবেদী ভোটার কার্ড, আধার কার্ড এবং রেশন কার্ডের বেশ কিছু সীমাবদ্ধতা তুলে ধরেন। তবে আদালত পাল্টা প্রশ্ন তোলে। কেন আধার গ্রহণ করা হবে না, জানতে চান বিচারপতি।
কমিশনের আইনজীবী জানান, আধার কার্ড গ্রহণ করা হচ্ছে। কিন্তু তার সঙ্গে অন্য নথিও নেওয়া হচ্ছে। যে কোনও সময়ে এই খসড়া তালিকাকে চ্যালেঞ্জ করা যেতে পারে। তবে আদালত জানায়, যে কোনও সময় তারাও ওই তালিকা বাতিল করে দিতে পারে। বিচারপতির মন্তব্য, ‘‘বিশ্বাস করুন, এতে আমাদের ক্ষমতা খর্ব হচ্ছে না। কিছু ভুল হচ্ছে জানতে পারলেই আমরা সব বাতিল করে দেব। আপনারা তৈরি থাকুন।’’
সোমবার এই মামলার সম্পূর্ণ শুনানি সম্ভব হয়নি। মঙ্গলবার আবার মামলাটি শুনবে শীর্ষ আদালত। মামলাকারীদের তরফে ভোটার তালিকা চূড়ান্ত করার উপর স্থগিতাদেশের আবেদন জানানো হয়েছিল। কিন্তু গোটা প্রক্রিয়া এখনই স্থগিত করে দিতে রাজি হয়নি আদালত।