ট্রাম্পের অভিবাসন নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ। ছবি: এএফপি।
ক্ষোভ বিক্ষোভ তো চলছিলই। এবার সেটা পৌঁছে গেল খোদ মার্কিন প্রেসিডেন্টের দরজাতেও।
ডোনাল্ড ট্রাম্পের অভিবাসন নীতির বিরুদ্ধে হোয়াইট হাউসের সামনে শনিবার জমায়েতে হাজির শ’য়ে শ’য়ে মানুষ। কেউ সমাজকর্মী, কেউ যাজক, তো কেউ আবার আম আদমি। শরণার্থীদের ধরপাকড় করতে গিয়ে যে ভাবে বিভিন্ন ‘ডিটেনশন সেন্টারে’ বাবা-মায়েদের থেকে বিচ্ছিন্ন করে রাখা হয়েছে শিশু সন্তানদের, তার বিরুদ্ধে সংগঠিত প্রতিবাদে নেমে পড়ল মার্কিন মুলুক।
হোয়াইট হাউসের সামনে জমায়েতে স্লোগান। পোস্টারে লেখা— ‘শেম’। প্রতিবাদ যখন চলছে, সে সময় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ছিলেন নিউ জার্সিতে, নিজের গল্ফক্লাবে। সেখান থেকে প্রতিবাদকারীদের এক হাত নিয়েছেন ট্রাম্প। শরণার্থীদের অপরাধীদের সঙ্গে তুলনা করে তিনি বলেছেন, ‘‘অভিবাসন এজেন্সি মার্কিন শহরগুলোকে অপরাধীদের হাত থেকে মুক্ত করার চেষ্টা চালাচ্ছে।’’ ঠিক উল্টো সুর শোনা গিয়েছে, হোয়াইট হাউসের সামনে জমায়েত থেকে। ওয়াশিংটনের বছর চল্লিশের গৃহিনী, দুই সন্তানের মা হেলেন লা ক্রোয়িক্সের যেমন গলা ফাটিয়ে তখন বলে চলেছেন, ‘‘যে শিশুরা নিজেদের প্রয়োজনের কথাটুকুও বলতে পারে না, কেন তাদের বাবা মায়েদের থেকে আলাদা করে রাখা হচ্ছে? এটা কেমন অভিবাসন নীতি?’’
মা-বাবার থেকে শরণার্থী শিশুদের আর আলাদা করা হবে না জানিয়ে দিন কয়েক আগেই ট্রাম্প একটি নির্দেশিকায় সই করেছেন। তবুও সম্প্রতি সম্প্রচারিত একটি ভিডিয়ো তুলে ধরেছে, নিউ ইয়র্কের একটি ডিটেনশন সেন্টারে দুর্দশার ছবি। সেখানে থাকা শিশুদের চোখে জল। একেক জন একেক দেশের। শিবিরের কর্মীরাও তাদের ভাষা জানেন না। তবে চোখের জল আর অভিব্যক্তি থেকে একটা বিষয় স্পষ্ট— শিশুরা তাদের বাবা-মাকে খুঁজছে। আর বাবা-মায়েরা যে কোন শিবিরে রয়েছেন, কেউ তা জানে না।
আরও পড়ুন: ট্রাম্পকে ভুয়ো ফোন
আরও পড়ুন: চল্লিশ দিন পরে মিলন মা-শিশুর
সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ১৯৭০ সালে প্রতি ২০ জন মার্কিন নাগরিকের মধ্যে এক জন ছিলেন অভিবাসী। ২০১৬ সালে তা বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়িয়েছে সাত জনের মধ্যে এক জন। ২০১৭ সালে ট্রাম্প জমানা শুরু হতে না হতেই মার্কিন সীমান্তে শুরু হয় ধরপাকড়। ডিটেনশন সেন্টারগুলিতে এখন উপচে পড়ার অবস্থা।
এক দিকে শরণার্থীদের নিয়ে ট্রাম্পের ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি। অন্যদিকে প্রতিবাদকারীদের মানবিক হওয়ার দাবি। কে জিতবে জানা নেই। তবে শনিবার ওয়াশিংটনে প্রায় তিরিশ হাজার মানুষের জমায়েত, নিউ ইয়র্ক কিংবা শিকাগোর মতো শহরে জনঢল কিন্তু বুঝিয়ে দিল, ট্রাম্পের নীতিতে ভরসা হারাচ্ছে আমেরিকা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy